ডিএনসিসির হলিডে মার্কেটে বাড়তি ফি ও নিরাপত্তাহীনতায় নাখোশ দোকানিরা

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন ও ঐক্য ফাউন্ডেশনের যৌথ উদ্যোগে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে প্রতি সপ্তাহে দুই দিন বসছে হলিডে মার্কেট। নির্বাচন কমিশন ভবনের সামনের সড়কে দুই পাশে ১০০টি স্টল নিয়ে এটি চালু হয়। তবে কয়েক সপ্তাহ না যেতেই স্টল কমছে বলে জানা গেছে। স্টল কমার বিষয়ে ক্ষুদ্র উদ্যক্তারা বলছেন, সপ্তাহে দুই দিন বসার জন্য আমাদের কাছ থেকে ফি নেওয়া হচ্ছে ৫ হাজার টাকা। যা দুই দিনের জন্য বেশি হয়ে যায়। এতে অনেকের না পোষানোর কারণে তারা স্টল দিচ্ছেন না। আবার কিছু কিছু দোকানি, পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ও নারী বিক্রয়কর্মীদের জন্য পরিষ্কার শৌচাগার না থাকার বিষয়েও উল্লেখ করছেন।

গত শুক্রবার হলিডে মার্কেটে গিয়ে দেখা যায়, সড়কের দুই পাশে বহু স্টল খালি পড়ে আছে। কাপড়, খাবার ব্যাগসহ কিছু স্টলে মানুষের ভিড় দেখা গেলেও অন্য স্টলে দর্শনার্থীদের সংখ্যা কম। এছাড়া স্টলগুলোতে এসএমই উদ্যোক্তাদের চামড়াজাত, পাটজাত, লাইফস্টাইল, ফ্যাশন, হোম ডেকর, হস্তশিল্প, অর্গানিক, কৃষি ও খাদ্যপণ্য রয়েছে। প্রকৃতিপ্রেমীদের জন্য রয়েছে নার্সারি। এসএমই পণ্যের প্রচার, প্রসার ও বাজারজাতকরণ অনলাইন মার্কেটিং কাজ করছে। বিক্রেতারা বলছেন, দর্শনার্থীরা ঘুরে ঘুরে দেখছেন বেশি, কিন্তু কিনছেন কম। বেশির ভাগই মানুষই ঘুরতে আসছেন।

মৌ ফুড নামে একটি স্টলের বিক্রেতা জানান, তুলনামূলক বিক্রি নেই। আর ৫ হাজার টাকা দিয়ে দুই সপ্তাহে দোকান পরিচালনা করলে আমাদের আসলে তেমন লাভ হচ্ছে না। এছাড়া দুই জন মানুষ আমরা এখানে কাজ করছি। সব মিলিয়ে আমরা হয়তো আগামী সপ্তাহে এখানে স্টল দেব কি না, ঠিক নেই।

মার্কেটে আসা ক্রেতা ও উদ্যোক্তারা জানান, শৌচাগার ব্যবস্থাপনায় কিছু ঘাটতি রয়েছে। এ ছাড়া অন্তত দুটি স্টলের মাঝখানে একটি করে ময়লা ফেলার বিন দেওয়া দরকার। এতে আশপাশের পরিবেশ পরিষ্কার থাকবে। একজন নারী বিক্রয়কর্মী জানান, শৌচাগারের যে ব্যবস্থা রয়েছে সেটি অপরিষ্কার। এখানে উদ্যোক্তা ও বিক্রয়কর্মীদের অনেকে নারী। ক্রেতাদের মধ্যেই অনেক নারী আসেন। এতে নারীদের সমস্যা হচ্ছে। আবার অন্য বিক্রেতারা জানান, এখানে অনেকে দোকান রেখে একটু বাইরে বা জরুরি কাজে যাওয়ার সুযোগ কম। নিরাপত্তার ঘাটতির বিষয়েও তারা উল্লেখ করছেন।

তবে মিরপুর, ফার্মগেট ও আশেপাশের এলাকা থেকে ঘুরতে আসা দর্শনার্থীরা বলছেন, এটি একটি চমৎকার উদ্যোগ। দেশীয় পণ্য পাওয়া যাচ্ছে এখানে। আর ছুটির দিনে পরিবার নিয়ে ঘুরতে আসার ব্যবস্থা হওয়ায় অনেকে এখানে আসছেন। এটিকে টিকিয়ে রাখার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ারও কথা বলছেন তারা।

সপ্তাহে শুক্র ও শনিবার ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প (এসএমই) উদ্যোক্তাদের পণ্য নিয়ে পরীক্ষামূলকভাবে চালু হয়েছে এই ‘হলিডে মার্কেট’। হলিডে মার্কেটের শুরু প্রান্তে রয়েছে একটি ‘কালচারাল কর্নার’। মেলায় আগত ক্রেতাদের বিনোদনের জন্য বিভিন্ন ধরনের সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। যারা মার্কেটে আসছেন, তারা পরিবারের অন্য সদস্যদের সঙ্গে নিয়ে এখানে সাংস্কৃতিক পরিবেশনা উপভোগ করার সুযোগ রয়েছে।

এ বিষয়ে উত্তর সিটি করপোরেশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা মকবুল হোসাইন শিমুল ইত্তেফাককে বলেন, এটি এখন ঐক্য ফাউন্ডেশন মেইনটেন করছে। ফি কমানোর বিষয়ে তাদের সঙ্গে আলাপ হয়েছে। খুব শিগিগরই এ বিষয়ে একটি সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। আসলে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানসহ আরো কিছু আনুষঙ্গিক খরচের কারণে এ ফি নির্ধারণ করা হয়েছিল। এটি পুনর্বিবেচনা করার উদ্যোগ নেওয়া হবে।