রাজধানীর নয়াপল্টনে অবস্থান নিয়েছে পুলিশ

রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নিয়েছে পুলিশ। ওই রাস্তায় যান চলাচলও বন্ধ আছে। নয়াপল্টনের আশপাশের গলির মুখেও দেখা গেছে পুলিশকে অবস্থান নিতে।

আজ বৃহস্পতিবার সকালে সরেজমিনে দেখা যায়, বিজয়নগর মোড় থেকে নয়াপল্টনে যাওয়ার রাস্তায় চেকপোস্ট বসানো হয়েছে। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কাউকে সেই রাস্তায় প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না। ফকিরাপুল রোডেও পুলিশ ব্যারিকেড দিয়ে লোকজনকে তল্লাশি করছে।
গতকাল বুধবার বিকেলে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে দলটির নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়। এতে একজন নিহত এবং কয়েকশ জন আহত হয়েছেন।

এদিকে বিএনপির সমাবেশকে কেন্দ্র করে পুলিশ রাজধানীর পথে পথে তল্লাশিচৌকি বসিয়েছে। সেখানে তল্লাশি করা হচ্ছে সবাইকে; বিশেষ করে টার্মিনাল এলাকায় পুলিশের এ ধরনের কার্যক্রম বেশি দেখা গেছে।

গতকাল রাজধানীর উত্তরার আবদুল্লাহপুর, কমলাপুর রেলস্টেশন, গাবতলী, পোস্তগোলা সেতু, বাবুবাজার সেতু, সদরঘাটের লঞ্চঘাট, পূর্বাচল ৩০০ ফুট সড়ক, কাঁচপুর সেতুসহ বেশ কয়েকটি স্থানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কঠোর নজরদারি দেখা গেছে। একই সঙ্গে রাজধানীর বিভিন্ন থানা এলাকায় বাড়ানো হয়েছে নিরাপত্তাব্যবস্থা।

রাজধানীর প্রবেশমুখ গাজীপুর মহানগরীর টঙ্গী সেতুর উত্তর প্রান্তে তল্লাশিচৌকি বসিয়েছে পুলিশ।

সরেজমিনে কয়েকটি এলাকায় দেখা গেছে, তিনজনকে একসঙ্গে দেখলেই থামিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। সন্তোষজনক ব্যাখ্যা না পেলে নেওয়া হচ্ছে থানায়। তাদের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন পরীক্ষা করে সন্দেহজনক কিছু পেলেই আটক দেখানো হচ্ছে বলে পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছে। এ ধরনের অভিযানে মঙ্গলবার রাতে রাজধানীর বিভিন্ন স্থান থেকে ২৫৪ জনকে আটক করা হয়েছে বলে ঢাকা মহানগর পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।

কমলাপুর রেলস্টেশনের কয়েকজন যাত্রীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ট্রেন থেকে নেমে বের হওয়ার প্রধান গেটে আসার পর তল্লাশি করা হচ্ছে। একই সঙ্গে ঢাকায় আসার উদ্দেশ্য সম্পর্কেও জানতে চাওয়া হচ্ছে। একই চিত্র দেখা গেছে, রাজধানীর বাস ও লঞ্চ টার্মিনালগুলোতেও।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে তল্লাশিচৌকির দায়িত্বে থাকা পুলিশ কর্মকর্তারা এক গণমাধ্যমকে বলেন, ওপরের নির্দেশে তারা রাজধানীর প্রবেশ পথগুলোতে তল্লাশি চালাচ্ছেন। বিভিন্ন জেলা থেকে যেন জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কোনো মানুষ ঢাকায় প্রবেশ করতে না পারে, সেদিক খেয়াল রাখা হচ্ছে। মূলত ১০ ডিসেম্বর কেউ যেন সমাবেশের নামে নাশকতা করতে না পারে, সে জন্য নিরাপত্তা বাড়ানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে পুলিশ সদর দপ্তর থেকে।

সাব্বির নামের এক ব্যক্তি ওই গণমাধ্যমকে বলেন, গাবতলী আসতে আমিন বাজারের সামনে তল্লাশিচৌকি বসানো হয়েছে। সেখানে যানবাহনে তল্লাশির পাশাপাশি কী কারণে ঢাকায় যাচ্ছেন যাত্রীদের জিজ্ঞাস করা হচ্ছে। সন্দেহ হলে পথচারীদেরও তল্লাশি ও জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

উল্লেখ্য, বিএনপি সমাবেশের জন্য নয়াপল্টনে আবেদন করলেও পুলিশ ২৬ শর্তে তাদের সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অনুমতি দেয়। কারণ বড় মাঠে পুলিশের পক্ষে নজরদারি করা সম্ভব। কিন্তু নয়াপল্টনে বিএনপি পার্টি অফিসের আশপাশের গলি ও এলাকাটি জনবহুল হওয়ায় সেখানে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর পরিস্থিতি তৈরি হলে তা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে না বলে গোয়েন্দা প্রতিবেদনে তুলে ধরা হয়। বিএনপি নয়াপল্টনে সমাবেশের বিষয়ে অনড় অবস্থানে রয়েছে।

সংবাদ সূত্রঃ দেশ রূপান্তর