পাতাল রেলের যুগে বাংলাদেশ প্রবেশ করতে যাচ্ছে

পাতাল রেলের যুগে বাংলাদেশ প্রবেশ করতে যাচ্ছে। ২১ স্টেশন বিশিষ্ট ৩১ কিলোমিটার দীর্ঘ দেশের প্রথম ভূগর্ভস্থ মেট্রোরেলের জন্য পরামর্শক নিয়োগ দিয়েছে মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ।

আজ রবিবার (২৩ অক্টোবর) ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড নির্মাণ তদারকি পরামর্শদাতা হিসেবে নিপ্পন কোই কোম্পানি লিমিটেডের সঙ্গে চুক্তি সই করেছে। রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে এ চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এ প্রতিষ্ঠান তাদের সেবার জন্য মোট এক হাজার ৫১৭ দশমিক ২৪ কোটি টাকা পাবে।

প্রকল্পে ১২ গ্যাকেজের তদারকির জন্য আহ্বান করা আন্তর্জাতিক দরপত্রে ছয়টি কোম্পানি অংশ নেয়। শেষ পর্যন্ত পরামর্শ প্রতিষ্ঠান হিসেবে নির্বাচিত হয় নিপ্পন। নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের পক্ষে চুক্তি স্বাক্ষর করেন নাওকি হুদো (জাপান) ও এম এ এন সিদ্দিক (বাংলাদেশ)।

৫২ হাজার ৫৬১ কোটি ৪৩ লাখ টাকা ব্যয়ে বাঁচবে সময়, বাঁচবে পরিবেশ, যানজট কমাবে মেট্রোরেল এই স্লোগান নিয়ে দেশের প্রথম ভূগর্ভস্থ মেট্রোরেল প্রকল্পের ভৌত কাজ আগামী ডিসেম্বরে শুরু হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

ভূমি উন্নয়নের মাধ্যমে নারায়ণগঞ্জের পিতলগঞ্জে ডিপোর জন্য পরিবহন খাতের সবচেয়ে বড় অবকাঠামো প্রকল্পের কাজ শুরু হবে। প্রকল্পের নথি অনুযায়ী, এর কাজ শেষ করার সময়সীমা ২০২৬ সালের ডিসেম্বর।

গত ৭ সেপ্টেম্বর ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) পরিচালনা পর্ষদ ডিপোর উন্নয়নে একটি জাপানি কোম্পানির নেতৃত্বে যৌথ উদ্যোগের প্রতিষ্ঠান নিয়োগের প্রস্তাব অনুমোদন করে। এবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে ভূগর্ভস্থ মেট্রোরেলের গ্রাউন্ড ব্রেকিং অনুষ্ঠানের জন্য সময় চাওয়া হবে বলে জানান আয়োজকরা।

প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা জানান, আনুষ্ঠানিকভাবে ম্যাস র‌্যাপিড ট্রানজিট লাইন-১ বা এমআরটি-১ নামে পরিচিত এই লাইনটির কাজ শেষ হলে দৈনিক আট লাখ যাত্রী পরিবহন করতে সক্ষম হবে।

৩১ দশমিক ২৪ কিলোমিটার লাইনটির দুটি অংশ থাকবে। হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে কমলাপুর (বিমানবন্দর রুট) পর্যন্ত ১৯ দশমিক ৮৭ কিলোমিটার অংশ ভূগর্ভস্থ হবে ও নতুনবাজার থেকে পূর্বাচল (পূর্বাচল রুট) পর্যন্ত ১১ দশমিক ৩৬ কিলোমিটার হবে উড়াল। কমলাপুর থেকে বিমানবন্দর যেতে সময় লাগবে ২৪ মিনিট।

বিমানবন্দর রুটে ১২টি স্টেশন থাকবে ও পূর্বাচল রুটে নয়টি স্টেশন থাকবে। পূর্বাচল রুটের নদ্দা ও নতুনবাজার স্টেশন থাকবে ভূগর্ভে এবং এই দুটি স্টেশন যাত্রীদের রুট পরিবর্তনের জন্য একটি ইন্টারচেঞ্জ হিসেবে ব্যবহার করা হবে। প্রকল্প নথি অনুযায়ী, হেমায়েতপুর ও ভাটারার মধ্যে চলাচলকারী মেট্রোরেলের এমআরটি লাইন ৫ (উত্তর রুট) নতুনবাজার স্টেশনে ইন্টারচেঞ্জ করবে। যানজট ও দূষণ নিরসনে রাজধানী ও সংলগ্ন এলাকায় নির্মিতব্য ছয়টি লাইনের মধ্যে দ্বিতীয় হবে এমআরটি-১।