বাসে হাফ ভাড়া দেওয়াকে কেন্দ্র করে ঢাকা কলেজের এক শিক্ষার্থীকে রাজধানীর শিশুমেলা এলাকায় বাস থেকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ওই শিক্ষার্থী আহত হন।
আজ সোমবার (৭ ফেব্রুয়ারি) সকাল সাড়ে ১০টায় এ ঘটনা ঘটে শিশুমেলা এলাকায় মৌমিতা বাসে। জানা গেছে দায়িত্বরত ট্রাফিক পুলিশ শিক্ষার্থীকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে পাঠান।
আহত শিক্ষার্থী ঢাকা কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী শিমুল শিকারি। এ ঘটনায় ওই শিক্ষার্থী মাথায় গুরুতর জখম ও পায়ে প্রচণ্ড ব্যথা পেয়েছেন।
আহত শিক্ষার্থীর বন্ধু আরিফ জানান, কলেজে ক্লাস অনলাইনে হওয়ায় শিমুল কলেজের পাশাপাশি ভর্তি হন যুব উন্নয়নের একটি প্রশিক্ষণে। তাকে মোহাম্মদপুর কলেজ গেটে এসে প্রশিক্ষণ নিতে হয়। সকালে শিমুল মৌমিতা ট্রান্সপোর্ট পরিবহনের একটি বাসে আসছিলেন। এ সময় বাসে ভাড়া নিয়ে তার কথাকাটাকাটি হয় হেলপার, কন্ডাক্টর ও ড্রাইভারের সঙ্গে। একপর্যায়ে বাসের হেলপার, কন্ডাক্টরসহ তিনজন মিলে বাসের ভেতরেই মারধর করে রক্তাক্ত করে ফেলে তার মাথা। পরে তাকে কলেজ গেট না নামিয়ে বাসের গেট বন্ধ করে শিশুমেলার কাছে নিয়ে বাসের দরজা খুলে বাস থেকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়।
এ সময় বাস থেকে ফেলে দেওয়ায় শিমুল পায়ে প্রচণ্ড আঘাত পান। তখন সেখানকার ট্রাফিক পুলিশ বিষয়টি দেখতে পেয়ে তাকে দ্রুত উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে পাঠালে পায়ের আঘাতের চিকিৎসা করা হয়। মাথায় গুরুতর আঘাতের কারণে ডাক্তারের পরামর্শে এরপর ন্যাশনাল নিউরোসাইন্স হাসপাতালে নিয়ে যা্ওয়া হয়।
আরিফ আরও জানান, তাকে এতটাই মারধর করা হয়েছে যে সঙ্গে সঙ্গে শরীরে জ্বর চল এসেছে। মাথায় গুরুতর আঘাতের কারণে এখন পর্যন্ত আশঙ্কাজনক অবস্থায় রয়েছে। আমরা আপাতত মোহাম্মদপুর থানায় গিয়ে একটি অভিযোগ দিয়ে এসেছি। কারণ তাকে আগে সুস্থ করে তোলা দরকার। আমাদের ক্যাম্পাসের অনেক সহপাঠী এবং বড় ভাইরা এসেছেন। বড় ভাইদের সঙ্গে কথা বলে আমরা আইনানুগ ব্যবস্থার সিদ্ধান্ত নেব।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী শিমুল শিকারি জানান, ’আমি হাফ ভাড়া দিতে চাইলে বাসের কন্ডাক্টর হাফ ভাড়া নিতে অস্বীকার করেন। পরবর্তীতে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী পরিচয় দিলে হেলপার, কন্ডাক্টরসহ তিন চারজনে মাথায়, নাকে-মুখে কিল-ঘুসি দিয়ে আঘাত করে বাস থেকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়। সেখান থেকে কর্তব্যরত ট্রাফিক পুলিশ আমাকে উদ্ধার করে সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজে নিয়ে যান।’
এ বিষয়ে মোহাম্মদপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুল লতিফ জানান, আমরা অভিযোগ পেয়ে মৌমিতা পরিবহনের চালককে আটক করতে সক্ষম হয়েছি। এ বিষয়ে মোহাম্মদপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। বাসের মধ্যে হেলপার, কন্ডাক্টরসহ যারা শিক্ষার্থীকে মারধর করেছে তাদের আটকের জন্য আমাদের কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।