রাজধানী ঢাকার সবুজবাগ ও নিউমার্কেট এলাকায় দুই নারীর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। মরদেহ দুটি শনিবার দিবাগত রাতে ময়না তদন্তের জন্য ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
সবুজবাগ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) প্রিয়তোষ চন্দ্র দত্ত জানান, খবর পেয়ে শনিবার বিকেলে দক্ষিণগাঁও শাহীবাগ ব্যাংক কলোনির ৯২/১ নম্বর বাড়ির তৃতীয় তলা থেকে অজ্ঞাতনামা এক নারীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তার বয়স আনুমানিক ৩৫ বছর।
এসআই জানান, ওই নারীর মরদেহের চোয়ালের মাংস কাটা ও গলার ডান পাশে তিন ইঞ্চি পরিমাণ কাটা জখম রয়েছে। ওই ভবনের কেউ তার পরিচয় শনাক্ত করতে পারেননি। মুখমণ্ডল পলিথিন দিয়ে এবং সমস্ত শরীর পুরাতন একটি কাঁথা দিয়ে মোড়ানো অবস্থায় ছিলো। তার শরীরে কোনো পোশাক ছিলো না।
তিনি জানান, তৃতীয় তলায় পাশাপাশি তিনটি ফ্ল্যাটে মালিকের দুই ছেলে থাকেন। গতকাল বেলা ১২টার দিকে মালিকের ছোট ছেলে স্ত্রীকে নিয়ে বাইরে যান। এরপর বেলা ৩টার দিকে বাসায় ফিরে তাদের ফ্ল্যাটের সামনে কাথা দিয়ে মোড়ানো নারীর মরদেহ দেখতে পান। সঙ্গে সঙ্গে থানায় খবর দিলে ঘটনাস্থলে যায় পুলিশ। এরপর সিআইডি ক্রাইম সিন সেখানে গিয়ে বিভিন্ন আলামত সংগ্রহ করে। ধারণা করা হচ্ছে ধর্ষণের পর তাকে হত্যা করা হয়েছে। হত্যাকাণ্ডটি বাইরে নয়, সন্দেহ করা হচ্ছে ভবনের ভেতরেই করা হয়েছে। তবে বিস্তারিত তদন্তে কাজ করছে পুলিশ।
অন্যদিকে নিউমার্কেট থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আতিকুল বিশ্বাস মুকুল জানান, শনিবার বিকেল পাঁচটার দিকে নিউমার্কেট থানাধীন এলাকায় এক শিক্ষিকার আবাসিক ভবনের চতুর্থ তলার একটি বাসা থেকে লাইলি (১৭) নামে এক কিশোরীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তার সমস্ত শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।
তিনি জানান, লাইলির বাড়ি লক্ষ্মীপুর চন্দ্রগঞ্জ উপজেলায়। তার বাবার নাম সিরাজ। গত ছয় মাস ধরে চতুর্থ তলার বাসাটির শিক্ষিকা ফারজানার ইসলামের বাসায় গৃহকর্মীর কাজ করতো ওই কিশোরী। কীভাবে তার মৃত্যু হয়েছে তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ ঢাকা মেডিক্যালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
মরদেহের সুরতহাল প্রতিবেদনে পুলিশ উল্লেখ করেছে, লাইলির ঠোঁটের ডান পাশে ক্ষত, থুতনিতে কাটা দাগ, গলায় ক্ষতচিহ্ন, ডান কোমরে থেঁতলানো জখম, কোমরের পিছনে চামড়া ওঠানো, দুই হাঁটু থেতলানো। হাঁটু থেকে পায়ের পাতা পর্যন্ত বিভিন্ন অংশে গরম পানি দিয়ে ঝলসানো ও ফোসকা পড়া অবস্থায় ছিলো।
নিউমার্কেট এলাকায় নিহত গৃহকর্মীর মা এ ঘটনায় বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় শিক্ষিকা গ্রেফতার আছেন বলে জানান এসআই আতিকুল বিশ্বাস মুকুল।