নদীর পানি দূষণ দেশ ও দেশের মানুষের জন্য অত্যন্ত খারপ একটি দিক। ঢাকার চারপাশের চারটি নদী (বুড়িগঙ্গা, শীতলক্ষ্যা, বালু ও তুরাগ) দূষণমুক্ত করতে পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে সরকার। এজন্য রায়েরবাজার এলাকায় ১ হাজার ৯৩৫ কোটি টাকা ব্যয়ে পয়োঃশোধনাগার নির্মাণ করা হবে।
নদী দূষণরোধ ও পরিবেশ সংরক্ষণের জন্য এ প্রকল্প হাতে নেওয়া হচ্ছে। প্রকল্পটি বার্ষিক পরিকল্পনার একটি অংশ। এটি বাস্তবায়ন করবে ঢাকা ওয়াসা।
ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের রায়েরবাজার, হাজারীবাগ, মোহাম্মদপুর, বসিলা, কল্যাণপুর, শ্যামলী ও তার নিকবর্তী এলাকায় প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে।
প্রস্তাবিত প্রকল্পের আওতায় ১ হাজার ৫৭৬ কোটি টাকা ব্যয়ে ৫৬ দশমিক ২২ একর ভূমি অধিগ্রহণ, ৭০ কোটি টাকার ভূমি উন্নয়ন, ২১৫ কোটি টাকার ক্ষতিপূরণ কাজ করা হবে। এছাড়া সীমানা পিলারসহ কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণ করা হবে। ২১ জন আউটসোর্সিং জনবল, একটি ল্যাপটপ, ছয়টি ডেক্সটপ একটি ফটোকপিয়ার কেনা হবে। প্রকল্প এলাকায় আনসার নিয়োজিত করা হবে। চলতি সময় থেকে ২০২২ সালের ডিসেম্বর মেয়াদে তা বাস্তবায়ন করা হবে।
স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ বলেন, প্রস্তাবিত প্রকল্পটি ঢাকা রায়েরবাজার এলাকায় বাস্তবায়নের জন্য নির্ধারণ করা হয়েছে। ঢাকা শহর একটি জনবহুল শহর যেখানে প্রতি বর্গকিলোমিটারে প্রায় ৪৫ হাজার মানুষ বসবাস করেন। সুতরাং পরিবেশবান্ধব ঢাকা গড়তে প্রকল্পটি গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে। শহরের মধ্যে জমি অধিগ্রহণের যৌক্তিকতা বিষয়ে ঢাকা ওয়াসার দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে।
প্রকল্পের অধীনে ঢাকা মহানগরীর রায়েরবাজার, হাজারীবাগ, ধানমন্ডি, মোহাম্মদপুর, বসিলা, কল্যাণপুর, শামলী, গাবতলী ও তৎসংলগ্ন এলাকায় স্বাস্থ্যসম্মত, পরিবেশবান্ধব ও টেকসই স্যানিটেশন ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হবে। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে প্রায় ৪০ লাখ মানুষ প্রত্যক্ষভাবে এবং বিপুল সংখ্যক জনগণ পরোক্ষভাবে আধুনিক পয়োঃনিষ্কাশন ব্যবস্থার সুফল পাবে।
২০০৯-২০১০ অর্থ বছরে ওয়াটার ও স্যুয়ারেজ মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়ন করা হয়েছিল। প্রণীত এ মাস্টারপ্ল্যানে মহানগরীর সমগ্র এলাকাকে ১১টি স্যানিটেশন এলাকায় বিভক্ত করা হয়। মাস্টারপ্ল্যান অনুযায়ী ২০৩০ সালের মধ্যে স্যুয়ারেজ ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্টগুলোর (এসটিপি) কাজ সম্পন্ন করার পরিকল্পনা রয়েছে।
ঢাকা শহরকে বাসযোগ্য করতে নাগরিক সুবিধা নিশ্চিতকরণ এবং এসডিজির লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে এসটিপি নির্মাণ জরুরি বলে মনে করে সরকার।
৯৩০ কিলোমিটার বিভিন্ন দৈর্ঘের ভূগর্ভস্থ লাইন, ২৬টি লিফট স্টেশন এবং পাগলা এলাকায় ১টি পয়োঃশোধনাগারের মাধ্যমে পরিচালিত হচ্ছে ঢাকার সিউয়েজ (ময়লাযুক্ত পানি) ব্যবস্থা।
ঢাকা ওয়াসা রাজধানীর মাত্র ৩০ শতাংশ এলাকায় সিউয়েজ ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে পেরেছে। মহানগরীতে সাড়ে ৩ হাজার কিলোমিটার পানি সরবরাহের পাইপ লাইন থাকলেও সিয়েজ লাইন আছে মাত্র ১০০ কিলোমিটার।