নৌবাহিনীর কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট ওয়াসিম বই কিনে স্ত্রীসহ মোটরবাইকে ফিরছিলেন বাড়িতে। এ সময় তার মোটরসাইকেলকে ধাক্কা দেয় সংসদ সদস্যের স্টিকার লাগানো একটি গাড়ি। এরপর ওই গাড়ি থেকে কয়েক ব্যক্তি নেমে এসে নৌবাহিনীর ওই কর্মকর্তাকে মারধর করেন। মারধরের ঘটনায় ভুক্তভোগী ওই নৌবাহিনীর কর্মকর্তার দাঁত ভেঙে গেছে।
ঘটনাটি ঘটে রবিবার সন্ধ্যার পর ধানমন্ডিতে কলাবাগান ক্রসিংয়ের কাছে পাংশি রোডের মুখে। মাধররের শিকার নৌবাহিনীর কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট ওয়াসিম এ ব্যাপারে ধানমন্ডি থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন।
সড়কে মারধরের এই ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। ওই ভিডিওতে আহতাবস্থায় ভুক্তভোগী নৌবাহিনীর কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট ওয়াসিম অভিযোগ করে জানান, তিনি এবং তার স্ত্রী মোটরসাইকেলে করে যাচ্ছিলেন। সংসদ সদস্য হাজী সেলিমের গাড়ির সঙ্গে তার মোটরসাইকেলের সামান্য ঘষা লাগে। এই ঘটনায় ওয়াসিম মোটরসাইকেল থামিয়ে কথা বলার চেষ্টা করেন। কিন্তু সংসদ সদস্য স্টিকার যুক্ত ওই গাড়ির ভেতরে থাকা লোকজন বের হয়ে তার ওপর অতর্কিত হামলা চালান। তাকে বেধড়ক মারধর করেন। ওয়াসিমের স্ত্রীর গায়েও হাত তোলেন তারা। তিনি বারবার তার পরিচয় দিয়ে কথা বলার চেষ্টা করলেও হামলাকারীরা কর্ণপাত করেননি। তারা বেধড়ক মারধর চালিয়ে যাচ্ছিলেন।
ধানমন্ডি থানা পুলিশ জানায়, সংসদ সদস্য স্টিকার যুক্ত গাড়িটি (ঢাকা মেট্রো-ঘ ১১-৫৭৩৬) হাজী সেলিমের। তবে ঘটনার সময় তিনি গাড়িতে ছিলেন না। এ সময় গাড়িতে ছিলেন সংসদ সদস্য হাজী সেলিমের ছেলে ও তার নিরাপত্তারক্ষীরা।
ধানমন্ডি থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) আবদুল্লাহ জাহিদ বলেন, কলাবাগন এলাকার পাংশি রোডের মুখে সংসদ সদস্য হাজী সেলিমের জিপ গাড়ির সঙ্গে নৌবাহিনীর কর্মকর্তার মোটরসাইকেল সামান্য ঘষা লাগায় এই মারধরের ঘটনা ঘটে। প্রথমে কথা কাটাকাটি, এরপর হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এতে নৌবাহিনীর কর্মকর্তা আহত হন।
এদিকে এ ঘটনায় ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর ও ঢাকা-৭ আসনের সংসদ সদস্য হাজী সেলিমের ছেলে মোহাম্মদ ইরফান সেলিমসহ চারজনের নামে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
সোমবার ভোরে ভুক্তভোগী নৌবাহিনীর কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট ওয়াসিম নিজেই বাদী হয়ে ধানমন্ডি থানায় মামলাটি দায়ের করেন। এরইমধ্যে এজাহারভুক্ত এক আসামিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ধানমন্ডি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইকরাম আলী মিয়া গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
ওসি জানান, এই মামলায় সংসদ সদস্য হাজী সেলিমের ছেলে ইরফান সেলিম (৩৭), তার বডিগার্ড মোহাম্মদ জাহিদ (৩৫), হাজী সেলিমের মদীনা গ্রুপের প্রটোকল অফিসার এবি সিদ্দিক দিপু (৪৫), গাড়িচালক মিজানুর রহমানসহ (৩০) অজ্ঞাতপরিচয়ের দুই/তিনজনকে আসামি করা হয়েছে।
রমনা ডিভিশনের ডিসি সাজ্জাদুর রহমান গণমাধ্যমকে জানান, এ ঘটনায় ভিকটিম নিজেই বাদী হয়ে মামলা করেছেন। মামলায় চারজনের নাম আছে। বাকি কয়েকজন অজ্ঞাতপরিচয়ের। এজাহারভুক্ত একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকিদের গ্রেফতারেও অভিযান চলছে।
ভিডিও দেখতে ক্লিক করুন