রাজধানী ঢাকার তিন উপজেলার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তিনজন প্রধান শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে প্রতারণা করে শিক্ষকদের কাছে অর্থ আদায় করার অভিযোগ রয়েছে। তারা হলেন নবাবগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নূরে আলম সিদ্দিকী, গেন্ডারিয়া মহিলা সমিতি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রিয়াজ পারভেজ এবং সাভার মানিকচন্দ্র সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. নজরুল ইসলাম।
গতকাল মঙ্গলবার প্রাথমিক শিক্ষা ঢাকা বিভাগীয় উপ-পরিচালক মো. ইফতেখার হোসেন ভুঁইয়া স্বাক্ষরিত এই আদেশ জারি করা হয়। আদেশে বলা হয়, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সমিতির পক্ষে রিয়াজ পারভেজ, মো. নজরুল ইসরাম এবং নূরে আলম সিদ্দিকীর যৌথ স্বাক্ষরে সোনালী ও ডাচ বাংলা ব্যাংকে দুইটি হিসাব খোলা হয়। যৌথ স্বাক্ষরে পরিচালিত ওই দুইটি ব্যাংক হিসাবে নূরে আলম সিদ্দিকী সরকারের অনুমতি বা রেজিস্ট্রেশন ছাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সমিতির পক্ষে কোষাধ্যক্ষ পরিচয়ে শিক্ষকদের কাছ থেকে কয়েক লাখ টাকা চাঁদা আদায় করেছেন। প্রধান শিক্ষকদের টাইম স্কেল এবং ১০তম গ্রেড প্রাপ্তির জন্য খরচ করবেন বলে এ অর্থ শিক্ষকদের কাছে আদায় করা হয়েছে।
এতে আরও বলা হয়েছে, এ ধরনের অনৈতিক কাজে জড়িত হওয়ার বিষয়ে বিভাগীয় ঢাকা বিভাগের উপ-পরিচালক সতর্ক করলেও তিনি তা আমলে নেননি। তার ওপরে শিক্ষক বদলি ও ডিজিটাল হাজিরা মেশিন নিয়ে মিথ্যা, বানোয়াট ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত তথ্য গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার করে ভাইরাল করছেন এবং আদায়কৃত চাঁদার অর্থ আত্মসাৎ করেছেন। তার এসব কর্মকাণ্ডে প্রাথমিক শিক্ষার পরিবেশ এবং প্রাথমিক শিক্ষা প্রশাসনকে জনসম্মুখে হেয় প্রতিপন্ন করা হচ্ছে।
এমতাবস্থায় নবাবগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নূরে আলম সিদ্দিকীকে সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা মোতাবেক অসদচারণ ও দুনীতির দায়ে সাময়িক বরখাস্ত করা হলো। এ সময়ে প্রচলিত বিধি মোতাবেক তিনি নির্ধারিত ভাতা পাবেন। এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবেও বলেও আদেশে উল্লেখ করা হয়েছে।
একই কারণ দেখিয়ে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে গেন্ডারিয়া মহিলা সমিতি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রিয়াজ পারভেজ এবং সাভার মানিকচন্দ্র সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. নজরুল ইসলামকে।
এ বিষয়ে ঢাকা বিভাগীয় উপ-পরিচালক মো. ইফতেখার হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, অভিযুক্ত শিক্ষকদের বারবার সর্তক করার পরও নানা অজুহাতে শিক্ষকদের কাছে অর্থ আদায় করার প্রমাণ পাওয়া গেছে। এছাড়া শিক্ষক বদলি ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বায়োমেট্রিক হাজিরা মেশিন ক্রয়-সংক্রান্ত অপপ্রচারের কারণে তাদের সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।