ঢাকার ধামরাইয়ের সোমভাগে সালিস বৈঠকে এক মাতবর ছেলের সামনে মাকে অশ্লীল ভাষায় অপমান করায় ছেলে সহ্য করতে না পেরে আবদুল আজিজ নামের যুবক আত্মহত্যা করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য ঢাকার শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়েছে পুলিশ।
এ ঘটনায় আত্মহত্যা প্ররোচনায় মামলা হয়েছে। মামলায় মাতবর মোশারফ হোসেন, নীলচানসহ অজ্ঞাত আরো দুজনকে আসামি করা হয়েছে। মামলা বাদি হয়েছেন আজিজের বাবা আবদুস সালাম। ঘটনাটি ঘটেছে সোমবার গভীর রাতে সোমভাগ ইউনিয়নের চারডাউটিয়া গ্রামে।
এলাকাবাসী ও ভুক্তভোগী পরিবার থেকে জানা গেছে, নিলফামারী জেলার ডিমলা উপজেলার কুঠিরডাঙ্গা গ্রামের আবদুস সালাম, তার স্ত্রী আয়শা, ছেলে আবদুল আজিজ (২৩) ও ছেলের বউ সাথীকে নিয়ে ভাড়া থাকেন ডাউটিয়া গ্রামের মাহতাব আলীর বাড়িতে। আজিজের বাবা দিনমজুর ও আজিজ পেশায় ছিলেন ট্রাকচালক।
আজিজের মা গত সোমবার ছেলের বউ সাথীকে নিয়ে অন্তঃসত্ত্বার বিষয়ে মেডিক্যাল চেকআপ করাতে যান কালামপুরে একটি ক্লিনিকে। সঙ্গে যেতে চেয়েছিলেন সাথীর মা। কিন্তু সময়ের অভাবে সাথীর মাকে নিতে পারেনি। এ নিয়ে আজিজের দুঃসম্পর্কের মামা শ্বশুর নীলচান সন্ধ্যা বেলায় কৈফত চান আজিজের বাবা-মার কাছে।
এনিয়ে আজিজের সঙ্গে নীলচানের বাকবিতণ্ডা হয়। এক পর্যায়ে আজিজের বিরুদ্ধে রাত ১০টার দিকে নীলচান পোলট্রি ব্যবসায়ী স্থানীয় মাতবর মোশারফ হোসেনসহ চার থেকে পাঁচজন নিয়ে পারিবারিকভাবে সালিস বৈঠক বসান। এ সালিসে মোশারফ ও নীলচান আজিজকে বাটপার ও তার মা আয়েশাকে অশ্লীল (চারিত্রিক) ভাষায় গালমন্দ করেন।
নিজেকে ও মাকে অপমান সহ্য করতে না পেরে গভীর রাতে টয়লেটে গিয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে আজিজ। আজিজের শ্বশুর বাড়ি মাহতাব আলীর বাড়ি সংলগ্ন দক্ষিণ পাশে। আজিজের বিধবা শ্বাশুড়ির বাড়িতে প্রায়ই যাতায়াত করতেন নীলচান। নীলচানের যাতায়াত তেমন একটি ভালো চোখে দেখতেন না আজিজ। নীলচানের বাড়ি নীলফামারী ডিমলা থানার দুলপাড়া গ্রামের মৃত সায়েদ আলীর ছেলে।
আজিজের মা আয়েশা বেগম বলেন, সালিসে মোশারফ ও নীলচান আমাকে অশ্লীল ভাষায় অপমানজনক কথা বলায় আমার ছেলে আজিজ সহ্য করতে পারেনি। গরিব বলে এর কোনো প্রতিবাদ করতে পারেনি। এ কষ্ট সহ্য করতে না পেরে অভিমানে আত্মহত্যা করেছে। আমি দোষীদের শাস্তি চাই।
ধামরাই থানার অফিসার ইনচার্জ দীপক চন্দ্র সাহা বলেন, আত্মহত্যার প্ররোচনায় দুজনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতসহ চারজনকে আসামি করে মামলা করা রুজু করা হয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।