মহামারী করোনার প্রভাবে গোটা দেশে বিরাজ করছে অস্থিতিশীল পরিবেশ। সরকারি নির্দেশনা মেনে রাজধানীতে সীমিত পরিসরে বিপণিবিতান খুলেছে রোববার (১০ মে)। তবে সীমিত পরিসরে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলো খুললেও ক্রেতাদের ভিড় নেই। অনেকটাই ক্রেতা সংকটে ভুগছেন দোকানিরা।
এদিন রাজধানীর মিরপুর-১, ২, ১০, ১১, শেওড়াপাড়া, কাজীপাড়া, তালতলা ও কারওয়ান বাজার ও পান্থপথ এলাকা ঘুরে দেখা যায় এমন চিত্র।
ব্যবসায়ীরা বলেন, সরকারের স্বাস্থ্যবিধি মেনে অল্প পরিসরে সকাল থেকে মার্কেট খুলেছি। তবে বেলা বাড়লেও মার্কেটে ক্রেতা নেই বললেই চলে। অনেক দোকানদার এখন পর্যন্ত সাইদ করতে পারেননি। যাও দু’একজন ক্রেতা মার্কেটে ঢুকছেন দেখে শুনে চলে যাচ্ছেন, কিনছেন না। জানি না আগামী দিনগুলো কী অবস্থায় যাবে বুঝতে পারছি না।
এ ব্যাপারে শেওড়াপাড়া যুবরাজ প্লাজার আধুনিক ফ্যাশনের মালিক জামির হাসান রতন বলেন, সরকারের স্বাস্থ্যবিধি মেনে সকাল থেকে আমাদের মার্কেটে সব ব্যবসায়ী দোকান খুলেছেন। সীমিত সময়ের জন্য দোকান খুললেও কাস্টমারের দেখা নেই। সকাল থেকে দুপুর গড়িয়ে গেলেও অধিকাংশ দোকানে বউনি পর্যন্ত হয়নি। জানি না সামনের দিনগুলো কীভাবে যাবে।
বেলা সাড়ে ১১টায় দোকান খুলেছি দুপুর ২টা বাজতে চললো এখন পর্যন্ত কাস্টমারের দেখা পাইনি বলে জানালেন মিরপুর-১১ নম্বর সেকশন লেইস ব্যবসায়ী মো. উজ্জ্বল হোসেন।
তিনি বলেন, প্রতিবছর এসময় দোকানে তিনজন লোক কাজ করে। বিক্রি করে সময় পাই না অথচ এসময় সকাল থেকে বসে আছি দোকানে বউনি পর্যন্ত হয়নি। ক্রেতা একেবারেই নেই বললেই চলে।
তবে সকাল থেকে প্রতিটি মার্কেটের প্রবেশ মুখেই হ্যান্ডস্যানিটাইজার ব্যবস্থা দেখা গেছে। শুধু তাই নয়, প্রত্যেক দোকানিই হ্যান্ডস্যানিটাইজারের ব্যবস্থা রেখেছেন। কাস্টমার যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তাকে হ্যান্ডস্যানিটাইজার দিতে উৎসাহিত করছেন বিক্রেতারা। এছাড়া ক্রেতারা মার্কেটের প্রবেশ মুখ থেকেই হাত পরিষ্কার করেই মার্কেটে প্রবেশ করছেন। দোকানগুলোর ভেতরেও শারীরিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে বৃত্তের ব্যবস্থা করতে দেখা গেছে অনেক ব্যবসায়ীকে।
ব্যবসায়ীরা বলেন, সরকার যে ঘোষণা দিয়েছে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আমরা সেটি মেনে চলবো এবং ক্রেতা সাধারণকেও সেটি মেনে চলার অনুরোধ জানাবো।
এদিকে সরকার অনুমতি দিলেও শপিংমল থেকে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা থাকায় বসুন্ধরা সিটি শপিংমল ও যমুনা ফিউচার পার্ক খুলেনি। একইসঙ্গে ঢাকাসহ সারাদেশে প্রায় ৯৫ শতাংশ শপিংমলও বন্ধ রয়েছে।
অপরদিকে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ঈদের বাজার করার জন্য শপিংমলে ভিড় বাড়বে। আর এ ভিড় থেকেই বিপুল সংখ্যক মানুষ করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হতে পারে।
গত ৪ মে সরকারের এক নির্দেশনায় বলা হয়, সারাদেশের দোকানপাট, শপিংমলগুলো আগামী ১০ মে থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত খোলা রাখা যাবে। এর আগে বিকেল ৫টা পর্যন্ত খোলা রাখার নির্দেশনা ছিল। পরের নির্দেশনায় এক ঘণ্টা কমানো হয়েছে।
সেক্ষেত্রে প্রতিটি শপিংমলে প্রবেশের ক্ষেত্রে হ্যান্ডস্যানিটাইজার ব্যবহারসহ স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় ঘোষিত সতর্কতা প্রয়োগ করতে হবে।
এতে আরও বলা হয়, রমজান ও ঈদুল ফিতর সামনে রেখে সীমিত পরিসরে ব্যবসা-বাণিজ্য চালু রাখার স্বার্থে দোকানপাট খোলা রাখা যাবে। তবে ক্রয়-বিক্রয়কালে পারস্পরিক দূরত্ব বজায় রাখাসহ অন্য স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালন করতে হবে।
বড় শপিংমলের প্রবেশ মুখে হাত ধোয়ার ব্যবস্থাসহ স্যানিটাইজারের ব্যবস্থা রাখতে হবে। শপিংমলে আসা যানবাহন অবশ্যই জীবাণুমুক্ত করার ব্যবস্থা রাখতে হবে।