কেরানীগঞ্জে যৌতুক না পেয়ে স্ত্রী হত্যার অভিযোগ

ঢাকার স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ মিটফোর্ড হাসপাতাল থেকে রোকসানা আক্তার মিম (৩০) নামের এক গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল বুধবার রাতে কেরানীগঞ্জ মডেল থানাধীন কালিন্দী ইউনিয়নের চড়াইল হাজি বাড়ি এলাকায় নিহতের শ্বশুরবাড়িতে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।

নিহতের ভাইয়ের অভিযোগ, যৌতুক না পেয়ে স্বামী ও তার পরিবারের লোকজন তার বোনকে হত্যা করেছে। পুলিশ নিহতের স্বামী মো. এনামুল হক শাহিন (৪০) ও ভাসুর (স্বামীর বড় ভাই) মো. শহিদুল ইসলাম পবনকে গ্রেপ্তার করেছে। এ ঘটনায় নিহতের বড় ভাই মো. মানিক মিয়া বাদী হয়ে কেরানীগঞ্জ মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।

নিহতের বড় ভাই মামলার বাদী মো. মানিক মিয়া জানান, পাঁচ বোন চার ভাইয়ের মধ্যে রোকসানা আক্তার মিম ৬ নাম্বার। তার পিতার নাম মৃত মতিউর রহমান। তাদের গ্রামের বাড়ি একই থানা ও ইউনিয়নের বাকাচড়াইল এলাকায়। গত ছয় বছর আগে চড়াইল হাজি বাড়ির মৃত আব্দুল হাকিমের ছেলে এনামুল হক শাহিনের সঙ্গে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয় মিমের। বিয়ের সময় ঘরের আসবাবপত্রসহ প্রায় নগদ এক লাখ টাকা জামাইকে দেওয়া হয়। এরপর প্রায় চার-পাঁচ মাস পর জামাই কুয়েত প্রবাসে চলে যান।

সেখানে প্রায় সাড়ে পাঁচ বছর অবস্থান করার পর গত এক মাস আগে দেশে ফিরে আসেন। জামাই শাহিন দেশে ফিরে জানতে পারেন তার বাড়ির পাশে তার সৎ ভাইয়ের বাড়ির অংশ বিক্রি করবে। এ অংশ কেনার জন্য শাহিন স্ত্রী মিমকে বাবার বাড়ি ভাইদের কাছ থেকে তিন লাখ টাকা নিয়ে দিতে বলেন।

মিম তা অস্বীকার করলে নেমে আসে তার ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন। সকালে মিমের স্বামী শাহিন শাশুড়ি আনোয়ারার সঙ্গে ঝগড়ার শব্দ শুনতে পান তিনি। পরে ওইদিন সন্ধ্যার পর তিনি জানতে পারেন মিম গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। খবর পেয়ে তারা মিমকে উদ্ধার করে মিটফোর্ড হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎস মিমকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে পুলিশ তার বোনের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠায়। তিনি আরো জানান, তার বোনকে হাসপাতালের চিকিৎসক মৃত ঘোষণার পরপরই শ্বশুর বাড়ির লোকজন কৌশলে পালিয়ে যান। স্বামী ও তার ভাসুর পালানোর সময় পুলিশ তাদের আটক করে থানায় নিয়ে আসে। তার ধারণা স্বামী শাহিন বাড়ি কেনার জন্য তিন লাখ টাকা না পেয়ে তার বোনকে গলায় রশি পেঁচিয়ে হত্যা করেছেন। তিনি এ ঘটনার বিচার দাবি করেছেন।

কেরানীগঞ্জ মডেল থানার এসআই মো. আল আমিন জানান, খবর পেয়ে পুলিশ মিটফোর্ড হাসপাতালে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে। নিহতের গলায় চতুর্দিকে লালচে দাগ রয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন না আসা পর্যন্ত মৃত্যুর আসল রহস্য বলা যাচ্ছে না, এটা হত্যা নাকি আত্মহত্যা। এ ঘটনায় নিহতের স্বামী ও ভাসুরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৫০ ঘণ্টা, ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৭
লেটেস্টবিডিনিউজ.কম/পিকে

Scroll to Top