রাজধানীর আব্দুল্লাহপুর থেকে লোকাল বাসে নারী অপহরণ ও শ্লীলতাহানির চেষ্টাকালে তিন অপহরণকারীকে হাতেনাতে গ্রেপ্তার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ান-১ (র্যাব)। এ সময় অপহরণকারীদের কাছ থেকে এক তরুণীকে উদ্ধার করা হয়েছে।
র্যাব জানায়, কম বয়সী নারী যাত্রীদের বাসে তোলার পর কৌশলে অন্য যাত্রীদের নামিয়ে দিতো অপহরণকারীরা। এর পর বাসটি নির্জন কোনো স্থানে নিয়ে গিয়ে ওই নারীদের ধর্ষণ করতো তারা। একই সঙ্গে ওই ঘটনার ভিডিও ও ছবি তুলে তা ইন্টারনেটে ছেড়ে দেওয়ার হুমকি দিতো অপহরণকারীরা।
আজ রোববার দুপুরে কারওরান বাজারে র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান র্যাব-১ এর কমান্ডিং অফিসার ( সিও) লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. সারওয়ার-বিন-কাশেম। তিনি বলেন, অপহরণকারীদের জিজ্ঞাসাবাদের পর এসব চাঞ্চল্যকর তথ্য পাওয়া গেছে।
সারওয়ার-বিন-কাশেম জানান, গতকাল শনিবার রাতে র্যাব-১ এর একটি আভিযানিক দল রাজধানীর আব্দুল্লাহপুর বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে অপহরণের চেষ্টাকালে তিনজন অপহরণকারীকে হাতেনাতে গ্রেপ্তার করে। এ সময় ২০ বছর বয়সী এক তরুণীকে উদ্ধার করা হয়।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন- বাসচালক খলিল মিয়া (৩৩), সুপারভাইজার মেহেদী হাসান বাবু (২২) ও হেলপার রাকিব হোসেন (১৯)।
গ্রেপ্তারকৃত আসামিরা ওই তরুণীকে জোরপূর্বক ‘আশুলিয়া ক্লাসিক’ নামক একটি বাসে তুলে অপহরণ ও শ্লীলতাহানির চেষ্টা করেছিল। এসময় বাসটিও জব্দ করা হয়।
ভিকটিমকে জিজ্ঞাসাবাদ করার পর র্যাবের এই কর্মকর্তা জানান, বাইপাইল হতে নবীনগর যাওয়ার উদ্দেশে ওই তরুণী বাইপাইল বাসস্ট্যান্ডে অপেক্ষা করছিল। এ সময় ‘আশুলিয়া ক্লাসিক’ বাসের হেলপার কোথায় যেতে চায় জিজ্ঞাসা করলে ওই তরুণী নবীনগর যাওয়ার কথা জানায়। তখন গাড়ির হেলপার তাকে নবীনগর নামিয়ে দেওয়ার কথা বলে গাড়িতে তুলে নেয়।
গাড়িতে উঠার পর ওই তরুণী তার ভাইকে মোবাইলে ফোন দিয়ে সুপারভাইজারকে তার গন্তব্যের ঠিকানা জানিয়ে দিতে বলে। কিন্তু সুপারভাইজার ওই তরুণীকে নবীনগরে নামিয়ে না দিয়ে কৌশলে আব্দুল্লাহপুর দিকে নিয়ে আসে।
আব্দুল্লাহপুরে বাস পৌঁছানোর পর বাসটি সামনে যাবে না বলে সব যাত্রীদের সঙ্গে ওই তরুণীও নামতে গেলে তাকে জোরপূর্বক বাসে তুলে নিয়ে অপহরণের চেষ্টা করে। এসময় বিষয়টি জানতে পেরে র্যাব-১ ঘটনাস্থলে গিয়ে বাসের হেলপার-চালক এবং সুপারভাইজারকে গ্রেপ্তার করে।
আসামিরা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানায়, তারা প্রত্যেকে ‘আশুলিয়া ক্লাসিক’ বাসের কর্মচারী। তাদের মাধ্যমে ইতিপূর্বেও অনেক নারী যাত্রী যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছে। তারা গ্রাম থেকে আসা কম বয়সী নারী যাত্রীদের বাসে তুলার পর কৌশলে অন্যান্য যাত্রীদের নামিয়ে দিয়ে নির্জন স্থানে বাস থামিয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণ করতো।
এর পাশাপাশি আসামিরা ভিকটিমের ছবি ও খারাপ ভিডিও ধারণ করে ইন্টারনেটে ছেড়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে টাকা-পয়সা, মোবাইল, স্বর্ণালংকার ছিনিয়ে নিতো বলেও স্বীকার করেছে ।
গ্রেপ্তারকৃত আসামিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা রয়েছে বলেও জানান র্যাবের ওই কর্মকর্তা।