চট্টগ্রামে স্ত্রীর পরকীয়া মেনে নিতে না পেরে আত্মহত্যা করা তরুণ চিকিৎসক মোস্তফা মোরশেদ আকাশের স্ত্রী তানজিলা হক চৌধুরী মিতুকে রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে পুলিশ।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা চান্দগাঁও থানার এএসআই আবদুল কাদের বুধবার দুপুরে এ তথ্য জানান।
তিনি জানান, পরকীয়ায় জড়িত থাকার বিষয়ে কিছু তথ্য স্বীকার করেছেন মিতু। শুক্রবার পর্যন্ত টানা তিনদিন মিতুকে রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
এসআই আবদুল কাদের বলেন, ‘রিমান্ডে ডা. আকাশের আত্মহত্যার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় যেসব অভিযোগ আনা হয়েছে তা জানার চেষ্টা করছি আমরা।
এ ছাড়া আকাশের মৃত্যুর জন্য মিতুর প্ররোচনা ছিল কিনা, তাদের দাম্পত্য জীবন কেমন ছিল, বিয়ের পর মিতুর সঙ্গে অন্য কোনো পুরুষের পরকীয়া সম্পর্ক ছিল কিনা? এসব বিষয়ে জানার চেষ্টা চলছে।
উল্লেখ্য, সোমবার দুপুরে চট্টগ্রাম মহানগর হাকিম মো. আল ইমরান খান রিমান্ড আবেদনের শুনানি শেষে ডা. মিতুকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৩ দিনের রিমান্ডে নেয়ার আদেশ দেন। জিজ্ঞাসাবাদে ডা. মিতু কোনোরকম ব্যভিচারের সঙ্গে জড়িত আছে কিনা তা খতিয়ে দেখার আদেশ দেন।
এ ছাড়া জিজ্ঞাসাবাদের ক্ষেত্রে হাইকোর্টের আদেশ অনুসরণ করার অর্থাৎ নারী কনস্টেবল রাখারও নির্দেশনা দেন আদালত। আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী মিতুকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে বলে জানান তদন্ত কর্মকর্তা আবদুল কাদের।
চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের সহকারী কমিশনার (প্রসিকিউশন) কাজী শাহাব উদ্দিন আহমেদ জানান, ডা. আকাশকে আত্মহত্যার প্ররোচনা দেয়ায় তার স্ত্রী ডা. তানজিলা হক চৌধুরী মিতুকে শনিবার আদালতে হাজির করে ৭ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করে পুলিশ।
আদালত সোমবার দুপুরে রিমান্ড আবেদনের শুনানি শেষে ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এর আগে শুক্রবার বিকালে ডা. তানজিলা হক চৌধুরী মিতুসহ ছয়জনকে এজাহারনামীয় আসামি ও ৩-৪ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে চান্দগাঁও থানায় দণ্ডবিধির ৩০৬ ধারায় মামলা দায়ের করেন ডা. মোস্তফা মোরশেদ আকাশের মা জোবাইদা খানম।
উল্লেখ্য, চট্টগ্রাম মহানগরীর চান্দগাঁও থানা এলাকার ২ নম্বর সড়কের ২০ নম্বর বাসা থেকে গত ৩১শে জানুয়ারি সকালে চিকিৎসক মোস্তফা মোরশেদ আকাশের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ডা. আকাশ চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের চিকিৎসক ছিলেন। সঙ্গে এফসিপিএস পড়ছিলেন। সে চন্দনাইশ উপজেলার বাংলাবাজার বরকল এলাকার মৃত আবদুস সবুরের ছেলে।
মৃত্যুর আগে ডা. আকাশ তার ফেসবুক আইডিতে স্ত্রী তানজিলা হক চৌধুরী মিতুর পরকীয়া এবং একাধিক যুবকের সঙ্গে অনৈতিক সমপর্কের বিষয়ে স্ট্যাটাস ও অশ্লীল ছবি পোস্ট করে আত্মহত্যার কথা লিখে যান। এ ঘটনায় বৃহসপতিবার রাতে নগরীর নন্দনকানন এলাকায় খালাতো ভাইয়ের বাসায় আত্মগোপন থেকে ডা. তানজিলা হক চৌধুরী মিতুকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
লেটেস্টবিডিনিউজ.কম/কেএস