মসজিদের মতো পবিত্র জায়গায়ও দখল আর টাকা আত্মসাতের অভিযোগ ওঠেছে আওয়ামী লীগ নেতা মুরাদ লতিফের বিরুদ্ধে। রাজধানীর ধানমন্ডিতে আল আকসা জামে মসজিদ কমিটির সাধারণ সম্পাদক হয়ে তিনি দুটি দোকান তার নিয়ন্ত্রণে রেখেছেন। তার ছেলে আবরার প্রতি মাসে ৩১ হাজার টাকা ভাড়া তোলেন, মসজিদে দেন মাত্র ৫ হাজার টাকা। শুধু তাই নয়, মসজিদের জমিতে নিজের বাড়ির সীমানা পিলার দিয়েছেন। সেখানে দিয়েছেন অফিস ভাড়া। দীর্ঘ আট বছর ধরে এ মসজিদের লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিলেও ভয়ে কেউ মুখ খোলেননি তার বিরুদ্ধে।
সরেজমিনে দেখা যায়, ধানমন্ডির আল আকসা জামে মসজিদের নিচে দুটি দোকান। সেখানে বিসমিল্লাহ ড্রাই ক্লিনার্সের মালিক জানালেন, তিনি আড়াই লাখ টাকা অগ্রিম দিয়ে এটি ভাড়া নিয়েছেন। প্রতি মাসে ভাড়া গোনেন ১৮ হাজার টাকা।
পাশে আরেকটি দোকানের ভাড়া ১৩ হাজার টাকা। নিয়ম অনুযায়ী ভাড়া উঠানোর কথা মসজিদ কমিটির। কিন্তু কাজটি করেন মসজিদ কমিটির সাধারণ সম্পাদকের ছেলে আবরার।
জানা যায়, এ মসজিদ কমিটির সাধারণ সম্পাদক আওয়ামী লীগ নেতা মুরাদ লতিফ কুড়িগ্রাম-৪ আসনে একাধিকবার আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন। নিজের ক্ষমতার জোরে মসজিদ কমিটিতে তিনি দীর্ঘদিন ধরে অনিয়ম করছেন বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। এখানেই শেষ নয়, তার বিরুদ্ধে রয়েছে মসজিদের জায়গা দখলের অভিযোগও।
মসজিদটির খাদেম কামরুজ্জামান সময় সংবাদকে জানান, আট বছর আগে এ দোকান দুটি করা হয়। তখন থেকেই এটির ভাড়া উঠান আবরার। মসজিদের ফান্ডে আসে মাত্র ৫ হাজার টাকা।
খাদেম বলেন, ‘ভাড়া কত টাকা তোলা হয়, সেটা জানি না। সধারণ সম্পাদকের ছেলে ভাড়া তোলেন। তিনি আমাকে দেন ৫ হাজার টাকা।’
মসজিদ কমিটির ক্যাশিয়ার আবদুল্লাহ আজিজের দাবি, মসজিদ নির্মাণের সময় সালামি বাবদ ৫ লাখ টাকা দিয়েছিলেন মুরাদ লতিফ। সে কারণেই ভাড়া উঠান তারা। যদিও এর কোনো কাগজ দেখাতে পারেননি তিনি।
অভিযুক্ত মুরাদ লতিফ ও তার ছেলের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি। বাসায় গেলে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে রাজি হননি তারা।
জানা যায়, আওয়ামী লীগ নেতা মুরাদ লতিফ ও তার ছেলে আবরার মসজিদের দুটি দোকান থেকে ভাড়া বাবদ গত ৮ বছরে তুলেছেন ৩০ লাখ টাকা। অথচ মসজিদ ফান্ডে জমা হয়েছে মাত্র ৫ লাখ টাকা। এতদিন আওয়ামী লীগের ভয়ে কেউ মুখ না খুললেও মুসল্লিরা এখন বলছেন, এটির একটি যৌক্তিক সমাধান দরকার। মসজিদের টাকা জমা হওয়া উচিত মসজিদের ফান্ডেই।