রাজশাহীর বাঘায় পরপর তিনটি মন্দিরে হামলার অভিযোগে এক মাদ্রাসাছাত্রকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পুলিশ বলছে, তৃতীয় মন্দিরের প্রতিমা ভাঙার সময় তাঁকে হাতেনাতে আটকের পর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে সোপর্দ করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। গতকাল শুক্রবার সকালে উপজেলার পাকুড়িয়া ও কলিগ্রাম এলাকার মন্দিরগুলোতে এসব হামলার ঘটনা ঘটে।
ওই ছাত্রের নাম রাব্বি হোসেন (১৮)। তিনি উপজেলার বাঘা পৌরসভার নারায়ণপুর সড়কঘাট এলাকায় বাসিন্দা।
স্থানীয় বাসিন্দাদের সূত্রে জানা গেছে, গতকাল ভোরে উপজেলার পাকুড়িয়া ইউনিয়নের পাকুড়িয়া পালপাড়া, ঘোষপাড়া ও বাঘা পৌরসভার কলিগ্রামের পুন্ডরীপাড়া মন্দিরের তালা ভেঙে মন্দিরের বিভিন্ন সরঞ্জাম ও প্রতিমা ভাঙচুর করেন রাব্বি। এ কাজে একটি লোহার পাইপ ব্যবহার করেন তিনি। কলিগ্রাম পুন্ডরীপাড়া মন্দিরের প্রতিমা ভাঙচুরের সময় তাঁকে আটক করা হয়।
বিবিসির অনুসন্ধান: হিন্দুদের বাড়িঘর–মন্দিরে হামলা নিয়ে যে তথ্য উঠে এল
এ ঘটনায় কলিগ্রাম পুন্ডরীপাড়া মন্দির কমিটির সভাপতি অরুণ সরকার বাদী হয়ে থানায় একটি মামলা করেছেন। অরুণ সরকার বলেন, স্থানীয় লোকজনসহ তিনি মন্দিরটিতে গিয়ে রাব্বির কাছে জানতে চান, কেন প্রতিমা ভাঙচুর করছেন। তখন তিনি চুপ করে ছিলেন। পরে তাঁকে আটক করে পুলিশের হাতে সোপর্দ করা হয়েছে।
খবর পেয়ে তাৎক্ষণিকভাবে তিনটি মন্দির পরিদর্শন করেন উপজেলা পূজা উদ্যাপন কমিটির সভাপতি সুজিত কুমার পান্ডে। তাঁর দাবি, ‘একটিতে প্রতিমা ছিল, সেখানে প্রতিমা ভাঙচুর করেছে রাব্বি। অন্য দুটি মন্দিরের জিনিসপত্র ভেঙেছে। থানায় উপস্থিত ব্যক্তিদের সামনে স্বীকার করেছেন, তাঁর সঙ্গে আর কেউ ছিলেন না; তিনি একাই এ কাজ করেছেন। কেন এ কাজ করেছেন, জানতে চাইলে রাব্বি বলেছেন যে বোনের ফোনে দেখেছেন ভারত থেকে পানি ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। এ কারণে বাংলাদেশের মানুষ বন্যার পানিতে ডুবে যাচ্ছে। এই ভিডিও দেখে তিনি সারা রাত ঘুমাতে পারেননি। আবেগ নিয়ন্ত্রণ করতে না পেরে একাই মন্দির ভাঙতে গেছেন।’
এ বিষয়ে বাঘা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু সিদ্দিক বলেন, ভাঙচুরের ঘটনায় রাব্বি হোসেনের নামে মামলা করা হয়েছে। পরে তাঁকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়। তাঁর সঙ্গে আর কেউ জড়িত আছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।