dhaka commerce college

সহপাঠীকে কুপিয়ে রক্তমাখা বটি হাতে লাশের পাশেই দাঁড়িয়ে ছিলেন রাজিন

রাজধানীর মিরপুরে কমার্স কলেজের একাদশ শ্রেণির (বিজ্ঞান বিভাগ) শিক্ষার্থী জুবায়ের হাসান রাফিতকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় মূল অভিযুক্ত চৌধুরী রাজিন ইকবালকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, জুবায়েরকে কলেজের সামনে থেকে ডেকে নিয়ে বটি দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে হত্যা করেন সহপাঠী রাজিন। এমনকি হত্যার পর লাশের পাশেই রক্তমাখা বটি নিয়ে অনেকক্ষণ দাঁড়িয়েও ছিলেন। পরে পুলিশ আসার আগে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যান।

এ ঘটনায় রোববার (৭ জুলাই) দুপুরে ময়নাতদন্ত শেষে নিহত জুবায়ের লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। পরে একই দিন মরদেহ দাফনের জন্য নেয়া হয় গ্রামের বাড়ি নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে। এর আগে শনিবার (৬ জুলাই) সন্ধ্যা ৭টার দিকে মিরপুরের কমার্স কলেজের পাশের হাউজিং অ্যান্ড সেটেলমেন্ট কোয়াটারে এ হত্যাকাণ্ড ঘটে।

পুলিশের সুরতহাল প্রতিবেদন অনুযায়ী, জুবায়েরের মাথায় ধারালো অস্ত্রের কয়েকটি আঘাত রয়েছে। পাশাপাশি ডান চোখের পাশে কাটা, গলায় ৩ ইঞ্চি পরিমাণ কাটা জখম ছাড়াও বুকের ডান পাশেও জখম রয়েছে। আর ডান হাতের বৃদ্ধাঙ্গুলি ও কবজি প্রায় বিচ্ছিন্ন।

চাঞ্চল্যকর এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় নিহত জুবায়েরের বাবা আবুল বাশার মিয়া শাহআলী থানায় মামলা করেছেন। যেখানে অভিযুক্ত রাজিন ছাড়াও তার বাবা ইকবাল আহম্মেদ চৌধুরীকে আসামি করা হয়েছে। সবশেষ রোববার রাতে হবিগঞ্জ থেকে মূল অভিযুক্ত রাজিনকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব-৪ এর একটি আভিযানিক দল।

প্রত্যক্ষদর্শী ও কমার্স কলেজের শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, গত শনিবার সন্ধ্যায় ঢাকা কমার্স কলেজের সামনে থেকে জুবায়েরকে ডেকে নেন সহপাঠী রাজিন। পরে তাকে কলেজের পূর্বপাশের একটি সরকারি বহুতল ভবনের তৃতীয় তলায় নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর সেখানেই জুবায়েরকে বটি দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেন রাজিন। এমনকি জুবায়েরকে হত্যার পর সেখানে অনেকক্ষণ বটি হাতে দাঁড়িয়েও ছিলেন। পরে স্থানীয়রা জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯ এ কল দিলে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় পুলিশ। তবে এর আগেই সেখান থেকে পালিয়ে যান রাজিন।

সুরতহাল প্রতিবেদনে শাহআলী থানার উপ–পরিদর্শক (এসআই) মো. আমিনুল ইসলাম চৌধুরী উল্লেখ করেছেন, প্রাথমিক তদন্ত অনুযায়ী, সহপাঠীদের সঙ্গে দ্বন্দ্বের জেরে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে জুবায়েরকে। তবে এ হত্যাকাণ্ডের দায় নিতে রাজি নন জুবায়েরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ঢাকা কমার্স কলেজের অধ্যক্ষ আবু মাসুদ। তিনি বলেন, ঘটনাটি কলেজের বাইরে ঘটেছে। কলেজ কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না। তবে রাজিনের একটি বিষয় নিয়ে কিছুদিন আগে আমাদের কাছে এলে আমরা সেটির সমাধান করে দিয়েছি। হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মামলা হয়েছে। পুলিশই এখন বিষয়টি তদন্ত করবে।

এ ব্যাপারে শাহআলী থানার ওসি তারিকুজ্জামান বলেন, ইতোমধ্যে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মামলা হয়েছে। মামলায় দুইজনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামাদের আসামি করা হয়েছে। আমরা কয়েকটি বিষয় মাথায় রেখে এই ঘটনার তদন্ত করছি।

Scroll to Top