female22

পরিকল্পনা থেকে লাশ টুকরো- সব ক্ষেত্রেই আসছে এই নারীর নাম

সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনার হত্যায় শিলাস্তি রহমানকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারের পর আজিম হত্যার বিষয়ে তার তেমন কোনো ভূমিকা ছিল না বলেই শুরুতে ধারণা করেছিলেন তদন্ত-সংশ্লিষ্টরা। তারা ভেবেছিলেন, ঘটনাচক্রে হত্যার আগে বা পরে কলকাতার ওই ফ্ল্যাটে উপস্থিত ছিলেন তিনি। শিলাস্তিও প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তেমনটাই দাবি করেন।

তবে হত্যারহস্যের পর্দা যতই সরছে, ততই তার ভূমিকা স্পষ্ট হয়ে উঠছে। দুই দেশের পুলিশ বলছে, তিনি খুনের পরিকল্পনায় ছিলেন, হত্যাকাণ্ডের সময়ও ফ্ল্যাটে ছিলেন। লাশের টুকরো ফ্ল্যাটের বাইরে নেওয়ার ক্ষেত্রেও ভূমিকা রাখেন।

এদিকে আজিমকে হত্যার উদ্দেশ্যে অপহরণের মামলায় গ্রেফতার শিলাস্তিসহ তিন আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আবারও পাঁচ দিনের রিমান্ডে নিয়েছে ডিবি পুলিশ। অন্য দুজন হলেন– শিমুল ভূঁইয়া ওরফে সৈয়দ আমানুল্লাহ ও ফয়সাল আলী। শুক্রবার আট দিনের রিমান্ড শেষে আসামিদের ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করে পুলিশ।

রাষ্ট্রপক্ষ রিমান্ডের দাবি জানায়। তবে আসামিপক্ষে কোনো আইনজীবী ছিলেন না। আসামিদের এজলাসে নেওয়ার পর কয়েকজন আইনজীবী তাদের পক্ষে মামলায় লড়তে ওকালতনামায় স্বাক্ষর নিতে চান। এ সময় পুলিশ সদস্যরা আইনজীবীদের বলেন, আদালতের সামনে আবেদন করে স্বাক্ষর নিতে হবে। শুনানির একপর্যায়ে বিচারক আসামি শিলাস্তিকে জিজ্ঞেস করেন, আপনি কি আইনজীবী নিয়োগ করতে চান? জবাবে তিনি জানান– চান না।

অপর দুই আসামিকে জিজ্ঞেস করলে তারা জানান, মামলায় লড়তে আইনজীবী চান। শুনানি শেষে মহানগর হাকিম শান্ত ইসলাম মল্লিক তাদের পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। পরে তিন আসামিকে আদালত থেকে ডিবির গাড়িতে তোলা হয়।

এর আগে গত ২৪ মে এই আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৮ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। ২৩ মে তাদের এ মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়। ২২ মে এমপি আজিমকে হত্যার উদ্দেশ্যে অপহরণের অভিযোগে তার মেয়ে মুমতারিন ফেরদৌস ডরিন বাদী হয়ে রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায় মামলা করেন। মামলাটি তদন্ত করছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।

হত্যার সময় ফ্ল্যাটে ছিলেন শিলাস্তি ডিবি সূত্র জানায়, এমপি আজিমকে হত্যার সময় শিলাস্তি কলকাতার ওই ফ্ল্যাটে ছিলেন। পরিকল্পনার অংশ হিসেবে আজিমকে অভ্যর্থনা জানানোর দায়িত্ব ছিল শিলাস্তির। তিনি সেই দায়িত্ব পালন করেন। এর পর থেকে আজিমকে আর খুঁজে পাওয়া যায়নি।

আবেদনে বলা হয়, এ ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী আক্তারুজ্জামান শাহীন, সিয়াম ও মোস্তাফিজসহ অজ্ঞাতনামা অন্য আসামিদের সঠিক নাম-ঠিকানা সংগ্রহ ও গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি।

আবেদনে আরও বলা হয়, শাহীন কলকাতার নিউ টাউন এলাকায় ২৫ এপ্রিল একটি ফ্ল্যাট ভাড়া নেন। পরিকল্পনায় যুক্ত হন শিলাস্তি রহমান। তাদের সঙ্গে বৈঠক করে শাহীন গত ১০ এপ্রিল দেশে চলে আসেন। পরবর্তী সময়ে শিমুল ও শাহীনের নির্দেশে অন্য আসামিরা ভুক্তভোগীকে কৌশলে ব্যবসার কথা বলে কলকাতার ওই ফ্ল্যাটে নিয়ে যান। পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী শিমুল ভূঁইয়া অন্য আসামির সহায়তায় আজীমকে হত্যা করেন। হত্যার পর হাড়-মাংস আলাদা করা হয়। মাংসের ছোট ছোট টুকরো করে ফ্ল্যাটের টয়লেটের কমোডে ফেলে ফ্ল্যাশ করা হয়।

এ ছাড়া হাড়সহ শরীরের অন্যান্য অংশ ট্রলিব্যাগে করে কলকাতার নিউ টাউন থেকে দূরে একটি খালে ফেলে দেওয়া হয়। হত্যা ও হাড়-মাংস আলাদা করায় ফয়সাল, মোস্তাফিজ ও জিহাদ সরাসরি জড়িত।

Scroll to Top