জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি), জন্ম নিবন্ধন সনদ ও কোভিড-১৯ টিকা কার্ডের গোপন তথ্য জালিয়াতির মাধ্যমে বাণিজ্য করে কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে চক্রটি। তাদের হেফাজত থেকে উদ্ধার করা একটি অ্যাকাউন্ট ৬০ হাজারের বেশি গ্রাহক পাওয়া গেছে। এ চক্রের দুই সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে ডিএমপির কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম বিভাগ (সিটিটিসি) এতথ্য জানিয়েছেন। মঙ্গলবার লিটন মোল্লাকে বাগেরহাট থেকে ও জামাল উদ্দিনকে পাবনা থেকে গ্রেপ্তার করে সিটিটিসির ইন্টেলিজেন্স অ্যানালাইসিস বিভাগ। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- নির্বাচন কমিশনের ডাটা এন্ট্রি অপারেটর জামাল উদ্দিন ও তার সহযোগী লিটন মোল্লা। বর্তমানে তারা পুলিশ হেফাজতে তিন দিনের রিমান্ডে রয়েছে।
ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে বৃহস্পতিবার আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানান অতিরিক্ত কমিশনার (সিটিটিসি) মো. আসাদুজ্জামান। তিনি বলেন, ফেসবুকে নজরদারি করতে গিয়ে চক্রের সন্ধান পায় সিটিটিসির ইন্টেলিজেন্স অ্যানালাইসিস বিভাগ। পরে দীর্ঘদিন তদন্তের একপর্যায়ে তাদের শনাক্ত করে। গ্রেপ্তারের পর জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, গ্রেপ্তারকৃত জামাল উদ্দিন নির্বাচন কমিশনে ডাটা এন্ট্রি অপারেটর। তার সহায়তায় লিটন মোল্লা নির্বাচন কমিশন সার্ভার থেকে এনআইডি সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ করতেন।
তিনি বলেন, গ্রেপ্তার আসামিরা অর্থের বিনিময়ে ভুয়া এনআইডি কার্ড, হারানো কার্ড উত্তোলন ও কার্ডের তথ্য সংশোধন করে দেন। এর পাশাপাশি জন্ম নিবন্ধনের ডিজিটাল কপি ও নাম সংশোধন, কোভিড-১৯ এর টিকা কার্ড ও টিন সার্টিফিকেটের কপি তৈরি করে সরবরাহ করত। তারা বিষয়টি পুলিশের কাছে স্বীকার করেছে।
অতিরিক্ত কমিশনার আসাদুজ্জামান বলেন, এ ধরনের কাজের বিনিময়ে তারা কাজের গুরুত্ব অনুযায়ী ৫০০ থেকে ৩ হাজার টাকা পর্যন্ত নিতেন। হোয়াট্সঅ্যাপ গ্রুপের মাধ্যমে তারা গ্রাহক সংগ্রহ করতেন। গ্রাহকের চাহিদা অনুযায়ী গ্রেপ্তারকৃত লিটন নিজের তৈরি ওয়েবসাইটের মাধ্যমে এসব জাল সনদ তৈরি করে দিতেন এবং মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে অর্থ গ্রহণ করতেন। এভাবে তারা প্রায় কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে বলে স্বীকার করেছে।
গ্রেপ্তার আসামিদের বিরুদ্ধে ঢাকার রমনা মডেল থানায় একটি মামলা হয়েছে। এ চক্রের বাকি সদস্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে বলে জানিয়েছেন এই কর্মকর্তা।