বুয়েট শিক্ষার্থী ফারদিন নূর পরশ হত্যাকাণ্ডের ঘটনার পর আলোচিত নারায়ণগঞ্জের চনপাড়া এলাকার কায়েতপাড়া ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান-১ বজলুর রহমানকে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) গ্রেফতার করেছে। গতকাল শুক্রবার বিকালে উপজেলার পূর্বগ্রাম থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। র্যাব-১ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আব্দুল্লাহ আল মোমেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, গত ২৮ সেপ্টেম্বর অভিযানের সময় র্যাবের ওপর হামলার অভিযোগে চনপাড়া এলাকার কায়েতপাড়া ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান-১ বজলুর রহমানকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
বুয়েট শিক্ষার্থী ফারদিন নূর পরশ হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে কি না-এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা তাকে এই বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করব।
গত ১০ নভেম্বর রাতে র্যাবের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ সিটি শাহীন নিহত হয়। সিটি শাহীনের সব অপকর্মের সেল্টারদাতা ছিলেন বজলু চেয়ারম্যান। এছাড়া র্যাবের ওপর হামলার নেতৃত্ব দেন বজলু।
জানা গেছে, নারায়ণগঞ্জের চনপাড়া বস্তিতে ২৪ ঘণ্টা প্রকাশেই বিক্রি হয় মাদক। সহজলভ্য হওয়ায় ঢাকাসহ আশপাশের এলাকা থেকে চনপাড়ায় ভিড় জমায় মাদকসেবীরা। বস্তির নটি ওয়ার্ডের অন্তত ১১৪টি স্পটে বিক্রি হয় মাদক। কয়েকশ মাদক কারবারিকে আশ্রয় প্রশ্রয় দেন চনপাড়া পুনর্বাসন কেন্দ্রের মাদক গডফয়ার হিসেবে পরিচিত বজলুর রহমান।
স্থানীয়রা জানায়, বজলু চেয়ারম্যানের ভয়ে চনপাড়ার কারো মুখ খোলার সাহস নেই। বজলুসহ তার চার ভাই নিয়ন্ত্রণ করে চনপাড়া বস্তি। সঙ্গে রয়েছে কিছু অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী। এসব অপরাধীরা দিনে-দুপুরে মাদকের কারবার, মারধর ও খুনসহ নানা অপরাধ করে বেড়ায়।
বস্তিবাসী বজলু ও তার লোকজনের বিষয়ে ভয়েও মুখ খোলে না। কথিত আছে বজলুর কথা ছাড়া সেখানে গাছের পাতাও নড়ে না। তার নামে ভয় দেখিয়ে ঘুম পাড়ানো হয় বস্তির শিশুদের।
বজলুর নামে কেবল রূপগঞ্জ থানাতেই হত্যা, অস্ত্র, মাদকের মামলা মিলিয়ে ১২টি মামলা রয়েছে। অস্ত্র ও খুনের মামলায় এক সময়ের জেলখাটা বজলু এখন নাম লিখিয়েছেন সমাজের প্রভাবশালীর ব্যক্তির খাতায়।
উল্লেখ্য, গত ৪ নভেম্বর নিখোঁজ হন বুয়েটছাত্র ফারদিন নূর পরশ। নিখোঁজের তিনদিন পর ৭ নভেম্বর নারায়ণগঞ্জের শীতলক্ষ্যা নদী থেকে ফারদিনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। ফারদিন হত্যাকাণ্ডের পর আবারও আলোচনায় আসে মাদকসহ নানা অপরাধের দুর্গ হিসেবে পরিচিত চনপাড়া বস্তি।