তামান্নার আর হলো না দ্বিতীয় স্বামীর ঘর করা। অবশেষে মৃত্যুর কাছে হার মেনে তিনি চলে গেলেন না ফেরার দেশে। গতকাল সোমবার রাতে দাহ্যপদার্থে পুড়ে ঢাকার শেখ হাসিনা বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় ওই গৃহবধূর।
তামান্নার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে সাতক্ষীরার পাটকেলঘাটা থানার ওসি কাঞ্চন কুমার রায় বলেন, ময়নাতদন্তের পর তার মরদেহ মঙ্গলবার রাতের দিকে সাতক্ষীরায় পৌঁছাতে পারে। সাতক্ষীরার তালা উপজেলার পাটকেলঘাটা থানার সরুলিয়া ইউনিয়নের বড়কাশিপুর গ্রামের শেখ আব্দুল হকের মেয়ে তামান্না খাতুন।
উল্লেখ্য, দুই বছর আগে কলারোয়ার তুলসিডাঙা গ্রামের মালয়েশিয়া প্রবাসী সাদ্দাম হোসেনের সঙ্গে তামান্নার মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ভালোবাসার সম্পর্ক গড়ে ওঠে। পরে মোবাইল ফোনের মাধ্যমেই সম্পন্ন হয় তাদের বিয়ে। বিয়ের দুই বছরের মধ্যেও সাদ্দাম হোসেন দেশে না ফেরায় প্রথম স্বামীকে তামান্না তালাক দেন।
অতঃপর গত ১৫ এপ্রিল তামান্নার বাবা শেখ আব্দুল হক পুরাতন সাতক্ষীরার শেখ ফরহাদ হোসেনের সঙ্গে তামান্নার দ্বিতীয় বিয়ে দেন। এরই মধ্যে সাদ্দাম বিদেশ থেকে বাংলাদেশে ফিরে আসে। তামান্নার সঙ্গে ফরহাদের বিয়ে হয়েছে এটা জানতে পেরে ক্ষিপ্ত হয়ে আত্মঘাতী হয়ে ওঠে সাদ্দাম হোসেন।
গত ৫ মে সন্ধ্যায় তামান্না খাতুন তার দ্বিতীয় স্বামী শেখ ফরহাদ হোসেনকে নিয়ে কপোতাক্ষ নদের পাড়ে গল্প করছিলেন। এসময় সাদ্দাম হোসেন নিজ দেহে দাহ্যপদার্থ ঢেলে আগুন ধরিয়ে সরাসরি তামান্নাকে জড়িয়ে ধরে বলে দুইজন একসঙ্গে মরতে চাই। এতে সাদ্দামের সাথে তামান্নাও মারাত্মকভাবে দগ্ধ হন। এমন অবস্থায় দ্বিতীয় স্বামী ফরহাদ হোসেনের হাতেও আগুনের ছ্যাঁকা লাগে। গুরুতর আহত তামান্না ও সাদ্দামকে উদ্ধার করে প্রথমে পাটকেলঘাটা, পরে খুলনা এবং সর্বশেষ ঢাকায় শেখ হাসিনা বার্ন ইউনিটে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করা হয়। তামান্নার দেহের ৪০ শতাংশেরও বেশি পুড়ে যাওয়ায় তার মৃত্যু ঘটে। অপরদিকে একই ইউনিটে চিকিৎসাধীন সাদ্দাম হোসেনের অবস্থাও আশঙ্কাজনক।
পুলিশ জানিয়েছে, চিকিৎসাধীন অবস্থায় সাদ্দামকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এ ঘটনায় তুহিন হোসেন নামের আরও একজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
পাটকেলঘাটা থানার ওসি কাঞ্চন কুমার রায় আরও বলেন, তামান্নার বাবা শেখ আব্দুল হক এসব ঘটনা নিয়ে সাদ্দাম হোসেনসহ কয়েকজনের নাম উল্লেখ করে মামলা করেছেন। মামলার অপর আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত আছে।