ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল উপজেলার নেকমরদ ইউনিয়নে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্রীর মাকে বিভিন্ন কৌশলে বিদ্যালয়ে ডেকে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগ পাওয়া গেছে। নারায়ণপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় সহকারী হলেন অভিযুক্ত শিক্ষক। ধর্ষণ চেষ্টার বিষয়ে অভিযোগ করেন ঐ বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্রী কবিতা রাণীর মা লিলা রাণী।
অভিযোগকারী লিলা রাণী জানান, নারায়ণপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় সহকারী শিক্ষক খোকন চন্দ্র শর্মা স্কুল ছুটির সময় আমার মেয়েকে দিয়ে স্বাক্ষর লাগবে বলে আমাকে ডেকে পাঠাতো, আমি গেলে আমার শরীরের কাপড় টানতো এবং শরীরের বিভিন্ন জায়গায় হাত দিত। আমি কুপ্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় আমাকে টাকারও লোভ দেখায়। গত ২১ সালের ৮ নভেম্বর সোমবার রাত সাড়ে ১০ টার সময় আমার বাড়িতে রাতের বেলায় এসে আমাকে ধর্ষণের চেষ্টা করে, আমি চিৎকার করলে আমার মুখ চেপে ধরে আমাকে মেরে ফেলা, মিথ্যা বদনাম দিয়ে এলাকা ছাড়া করা ও আমার সংসার নষ্ট করারও হুমকি দেয়।
লিলা রাণী আরো বলেন, একদিন রাতে আমি প্রাকৃতিক কাজ (পায়খানা) থেকে আসার সময় আমাকে একা পেয়ে আমার বাড়ির কাছে পরিত্যক্ত একটা ঘরে নিয়ে গিয়ে আমার মুখ চেপে ধরে আমার শরীরের বিভিন্ন জায়গায় হাত দেয় এবং আমাকে মৃত্যুর হুমকি দিয়ে বলে যে কাউকে কিছু বললে আমাকে ও আমার পরিবারের সদস্যদেরকে হত্যা করবে বা মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে দিবে। পরবর্তীতে আমি স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গকে ও ইউনিয়ন পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি অলিন চন্দ্রকে বিচার দেই, কিন্তু তারা সমাধান করতে ব্যর্থ হন। আমি গরীব বলে কি বিচার পাবো না। আমি প্রশাসনের কাছে সুষ্ঠু বিচার চাই।
অভিযোগকারী লিলা রাণীর স্বামী শ্রী নগেন বলেন, আমি গরিব মানুষ, তাই সংসার চালানোর জন্য ঢাকায় ও কুমিল্লায় কাজ করতে যাই, আর সেই সুযোগে খোকন মাষ্টার আমার স্ত্রীর সাথে এমন ঘটনা ঘটায়। এলাকায় তার প্রভাব থাকায় বিচার দিয়েও আমি বিচার পাইনি। তাই পুলিশের কাছে অভিযোগ দিয়েছি। আমি প্রশাসনের কাছে আমার অভিযোগের সুষ্ঠু বিচার চাই। অভিযুক্ত শিক্ষক খোকন মাস্টারের সাথে একাধিকবার ফোনে যোগাযোগ করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি। সরেজমিনে বিদ্যালয়ে গিয়ে জানা যায় তিনি অসুস্থতা দেখিয়ে ছুটি নিয়েছেন।
এ বিষয়ে নেকমরদ পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি অলিন চন্দ্র বলেন, আমি অভিযোগ পাওয়ার পর শিক্ষক খোকন চন্দ্র কে ডেকে পাঠাই, তিনি এসে বলেন এসব কাজ করা আমার ভূল হয়েছে। আমি বাসায় গিয়ে মীমাংসা করে নিব। রাণীশংকৈল উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা রাহিমউদ্দীনের কাছে ঘটনার বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, আমি এ বিষয়ে জানতাম না। আপনার মাধ্যমে জানতে পারলাম। অভিযোগ পেলে এবিষয়ে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। রাণীশংকৈল থানা পরিদর্শক (ওসি) এসএম জাহিদ ইকবাল মুঠোফোনে জানান শিক্ষক খোকন চন্দ্র শর্মার বিরুদ্ধে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে।