ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলায় সহিসংতার দু দিন পর জেলার পুলিশ সুপার (এসপি) সরকার মোহাম্মদ কায়সারের ফেসবুক আইডি হ্যাকড হয়েছে। এ ঘটনায় এসপি ভোলা সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন।
বোরহানউদ্দিনে সহিংসতার ঘটনার মূল কারণ হিসেবে পুলিশ বলছে, এক সংখ্যালঘু ব্যক্তির হ্যাকড আইডি থেকে সহিংসতার সূত্রপাত হয়েছে।
তাই এসপির আইডি হ্যাকড হওয়ার বিষয়টিকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। তা ছাড়া প্রশাসন ‘তৌহিদী জনতার’ যে ছয়টি দাবি মেনে নিয়েছে তার মধ্যে একটি হচ্ছে জেলার এসপিকে প্রত্যাহার।
বিপ্লব চন্দ্র শুভ নামে এক ব্যক্তির হ্যাক হওয়া অ্যাকাউন্ট থেকে আল্লাহ ও রাসুল হজরত মুহাম্মদ (সা.) কে নিয়ে কুরুচিপূর্ণ বার্তা মেসেঞ্জারের মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার ঘটনায় গত রোববার (২০ অক্টোবর) বোরহানউদ্দিন উপজেলা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। ‘তৌহিদী জনতার’ ব্যানারে বিপুলসংখ্যক মুসল্লি পুলিশের সঙ্গে সংঘাতে জড়ায়। এতে চারজন নিহত হন। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ঘটনাস্থলে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি), র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) মোতায়েন করা হয়।
আজ মঙ্গলবার সকাল সাড়ে আটটার দিকে ভোলার এসপি সরকার মোহাম্মদ কায়সার তাঁর আইডি হ্যাকড হওয়ার বিষয়টি জানিয়ে জিডি করেন। এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন ভোলা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. এনায়েত হোসেন।
এদিকে হেফাজতের ডাকে আজ বিকেল চারটায় ‘সর্বদলীয় মুসলিম ঐক্য পরিষদের’ ব্যানারে শহরে বিক্ষোভ মিছিলের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। ভোলা শহরের হাটখোলা জামে মসজিদ প্রাঙ্গণ থেকে মিছিলটি শুরু হয়ে শহরে প্রদক্ষিণ করবে। এই কর্মসূচিকে সামনে রেখে ভোলা শহরে ব্যাপক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, ভোলা জেলা আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতা-কর্মীরা মহড়া দিচ্ছে। সদর উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি মোশারেফ হোসেন বলেন, শহরে শান্তিপূর্ণ অবস্থানের জন্য নেতা কর্মীরা অবস্থান করছেন।
এর আগে সংঘর্ষের ঘটনায় ‘তৌহিদী জনতা’র ছয় দফা দাবি মেনে নেয় প্রশাসন। দাবি মেনে নেওয়ায় ‘সর্বদলীয় মুসলিম ঐক্য পরিষদের’ ব্যানারে গতকাল সোমবার বেলা ১১টায় ভোলা সরকারি স্কুল মাঠে প্রতিবাদ সমাবেশ বাতিল করা হয়।
ছয় দফা দাবি গুলো হলঃ
১. জেলা ও থানা থেকে এসপি এবং ওসিদের প্রত্যাহার করতে হবে।
২. ময়নাতদন্ত ছাড়াই লাশ দাফন করার অনুমতি দিতে হবে।
৩. আহত লোকজনের সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে।
৪. নিহত ব্যক্তিদের পরিবারকে আর্থিক সাহায্য দিতে হবে।
৫. অভিযুক্ত বিপ্লব চন্দ্র শুভর সঙ্গে যারা জড়িত, তাদের ফাঁসি দিতে হবে এবং
৬. গ্রেপ্তার করা ব্যক্তিদের মুক্তি দিতে হবে।