এবার সিমলা সম্পর্কে বেরিয়ে এলো নয়া চাঞ্চল্যকর তথ্য

পাইলট, কো-পাইলট ও ক্রুসহ ১৪৮ যাত্রীকে নিয়ে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে বিমান ছিনতাই চেষ্টার ঘটনাকে সামনে রেখে নতুন এক চাঞ্চল্যকর তথ্য বেরিয়ে এসেছে। এর পেছনে চিত্রনায়িকা শিমলার সঙ্গে পলাশের বিচ্ছেদের ঘটনা ছিল। তাছাড়া, পলাশের কাছ থেকে ৭০ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ারও সংশ্লিষ্টতা পেয়েছে তদন্ত কর্মকর্তারা।

ধার-দেনা করে এ অর্থ সিমলার হাতে তুলে দেন পলাশ। পলাশের বাবা-মাসহ অন্তত ১৬ জনের সঙ্গে কথা বলে এমন তথ্য পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা, চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের পরিদর্শক রাজেশ বড়ুয়া।

তিনি বলেন, চিত্র নায়িকা শামসুন নাহার সিমলা বর্তমানে একটি চলচ্চিত্রে শুটিং করার নামে ভারতে অবস্থান করছেন। দেশে ফিরতে বিলম্ব করছেন তিনি। যা রহস্যজনক। তার সঙ্গে কথা বলার পর পলাশ আহমেদের বিমান ছিনতাই চেষ্টার রহস্যের জট খুলতে পারে।

রাজেশ বড়ুয়া বলেন, গত ২৪শে ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় বিমানবন্দরে কমান্ডো অভিযানে পলাশ আহমেদ নিহত হওয়ার সময় তার নাম-ঠিকানা জানা যায়নি। তখন তাকে বলা হচ্ছিল নায়িকা সিমলার প্রেমিক। তিনি বিমানের ক্রুদের জিম্মি করে পারিবারিক সমস্যা নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলতে চাইছিলেন। পরে ধীরে ধীরে উদঘাটিত হয়, নিহত যুবক জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারজয়ী চিত্রনায়িকা শামসুন নাহার সিমলার স্বামী।

পলাশের মা-বাবার বরাত দিয়ে তদন্ত কর্মকর্তা রাজেশ বড়ুয়া বলেন, বিমান ছিনতাই চেষ্টার ঘটনার সাড়ে ৩ মাস আগে বয়সে ছোট পলাশকে তালাক দেন সিমলা। বিয়ে বিচ্ছেদের কারণ হিসেবে সিমলা নোটিশে উল্লেখ করেন, দামপত্য জীবনে সুখী হতে না পারা, মনের অমিল, বনিবনা না হওয়া, পারিবারিক অশান্তি ও মানসিক নির্যাতন। আর বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান নাঈম হাসান সেদিন কমান্ডো অভিযানের পর বলেছিলেন, স্ত্রীর কোনো ইস্যু নিয়ে বিমান ছিনতাইকারী পলাশ প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলতে চাইছিলেন বলে পাইলট তাকে জানিয়েছেন।

মামলার এজাহারেও বলা হয়, উক্ত দুষ্কৃতকারী তার কিছু দাবি-দাওয়া প্রধানমন্ত্রীকে শুনতে হবে বলে চিৎকার করে। অন্যথায় সে বিমানটি তার কাছে থাকা বিস্ফোরক দিয়ে ধ্বংস করে দেবে মর্মে হুমকি দেয়। তবে তদন্ত সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, পলাশের কাছে প্রচুর টাকা-পয়সা ছিল। লন্ডন পাঠানোর নাম করে বিভিন্নজনের কাছ থেকে প্রায় ৭০ লাখ টাকা পর্যন্ত সংগ্রহ করেছিলেন তিনি। যা তদন্তে উঠে এসেছে। এ টাকা সিমলার হাতে পলাশ তুলে দিতে বাধ্য হয়েছিলেন বলে তদন্তকারীদের সন্দেহ। সিমলার সাথে প্রভাবশালী কিছু মানুষের সুসমপর্ক ছিল, যার কারণে একটা সময় পর সিমলার কাছে যেতে পারছিলেন না পলাশ।

একদিকে সিমলার সঙ্গে বিচ্ছেদ অন্যদিকে ৭০ লাখ টাকার দেনা। এই দুইয়ের মাঝে পড়ে পলাশের জীবন বিষিয়ে উঠেছিল। কাউকে কিছু বলতেও পারছিলেন না সইতেও পারছিলেন না। এ অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলতে চেয়েছিলেন বল ধারণা তদন্তকারীদের। এজন্য উড়োজাহাজে উঠে পাইলট-ক্রুদের জিম্মি করার চেষ্টা করেন। পরে চট্টগ্রাম বিমানবন্দরে কমান্ডো অভিযানে মারা যান তিনি।


Scroll to Top