ক্রীড়া প্রতিবেদকঃ দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিং ব্যর্থতায় অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ জয়ের স্বপ্ন পূরণ হলো না বাংলাদেশের। চট্টগ্রাম টেস্টে বাংলাদেশকে বড় ব্যবধানে হারিয়ে অস্ট্রেলিয়া সিরিজ শেষ করল সমতায়। সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্টে ৮৬ রান তাড়ায় অস্ট্রেলিয়া জিতেছে ৭ উইকেটে। সিরিজ ড্র হয়েছে ১-১ ব্যবধানে।
প্রথম টেস্টে পরাজয়ের পরে সিরিজ হারানোর শঙ্কায় ছিল অজিরা। তবে নাথান লায়ন সিরিজ পরাজয়ের হাত থেকে বাঁচালেন অজিদের। বলা যায় এই বোলারের একক কৃতিত্বেই চট্টগ্রাম টেস্টে জিতলো অজিরা। দুই ইনিংসে মোট ১৩টি উইকেট নিয়ে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের বিধ্বস্ত করেছেন তিনি।
প্রথম ইনিংসে ৭২ রানে পিছিয়ে থেকে যখন বাংলাদেশ দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিং শুরু করে তখন আশা করা হচ্ছিল তামিম-সৌম্যের ওপেনিং জুটিই সেই রান টপকে যাবে। এরপর দ্বিতীয় ইনিংসে কমপক্ষে ২৫০ থেকে ৩০০ রানের লিড পাবে টাইগাররা।
তবে চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ স্টেডিয়ামে সমর্থকদের সেই আশার গুড়ে বালি দিলেন ওই দুই ওপেনার। দলের মাত্র ১১ রানের মাথায় ফের বাজে ভাবে আউট হন সৌম্য। রেনশকে ‘ক্যাচ অনুশীলন শিখিয়ে’ নিজের ৯ রানে মাঠ ছাড়েন তিনি। এরপর ক্রিজে আসেন ইমরুল কায়েস। তামিম তখন ২০ বল খেলে মাত্র ২ রান করে ধৈর্য্যের পরীক্ষা দিচ্ছিলেন।
দলের মাত্র ১১ রানের মাথায় ফের বাজে ভাবে আউট হন সৌম্য। রেনশকে ‘ক্যাচ অনুশীলন শিখিয়ে’ নিজের ৯ রানে মাঠ ছাড়েন তিনি। এরপর ক্রিজে আসেন ইমরুল কায়েস। তামিম তখন ২০ বল খেলে মাত্র ২ রান করে ধৈর্য্যের পরীক্ষা দিচ্ছিলেন।
কিন্তু হঠাৎ কি হলো তামিমের। এই টেস্টে ভয়ংকর হয়ে ওঠা নাথান লায়ানের বলে ক্রিজ ছেড়ে এসে খেলতে শুরু করেন। এক বলে বাউন্ডারি পেলেও দলের রান যখন ৩২ আর নিজের ১২ তখন সাজঘরের পথ ধরেন তামিম। তার এইভাবে উইকেট বিলিয়ে দেওয়াকে আত্মহত্যা ছাড়া আর কিছুই বলা যায় না।
তামিম ফিরে যাওয়ার পরে ইমরুলকে সঙ্গ দিতে ক্রিজে নামেন নাসির হোসেন। কিন্তু দলের ৩৭ রানের মাথায় নাসিরকে রেখেই সেই লায়ানের দ্বিতীয় শিকার হয়ে সাজঘরে ফেরেন ইমরুলও। তিনি করেছিলেন ১৫ রান। ইমরুলের পরে ক্রিজে আসেন সাকিব আল হাসান। কিন্তু লায়ানের তৃতীয় শিকার হয়ে মাত্র ২ রানে তিনিও মাঠ ছাড়েন। দলের রান তখন ৩৯।
এরপর নাসিরের সঙ্গে যোগ দিতে ক্রিজে আসেন অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম। কিন্তু নাসির আর মাত্র ৪ রান যোগ করে নিজের ৫ রানের মাথায় অগ্রজদের অনুসরণ করেন। নাসির ফেরার ফেরার পরে ক্রিসে আসেন সাব্বির রহমান।কিন্তু নিজের ২৪ রানের মাথায় সাব্বিরও বিদায় নিলেন ক্রিজ থেকে।এরপর মুশফিকের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন মুমিনুল হক।নিজের ৩১ রানের মাথায় প্যাট কামিন্সের বলে ওয়েডে তালুবন্দি হয়ে ফেরেছেন মুশফিক। এরপর মুমিনুলকে সঙ্গ দিতে ক্রিজে আসেন মেহেদি হাসান মিরাজ। তবে ব্যক্তিগত ২৯ রানের মাথায় মুমিনুল লায়ানের বলে আউট হলে ক্রিজে আসেন তাইজুল ইসলাম।কিন্তু না, তাইজুলও মাত্র ৪ রান করেই লায়ানের ফাঁদে পড়েই ক্রিজ ছাড়তে বাধ্য হন।এ্ররপর ব্যাট হাতে আসেন মুস্তাফিজ।ওকিফের বলে মুস্তাফিজেকও ফিরতে হয়েছে। তবে ১৪ রান নিয়ে মেহেদি অপরাজিত ছিলেন।
বাংলাদেশ দ্বিতীয় ইনিংস গুটিয়ে যায় ১৫৭ রানেই। ফলে জয়ের জন্য অজিদের জয়ের লক্ষ্য হয় ৮৬ রানের। এই ছোট লক্ষ্য তাড়ায় ৪৮ রানে ৩ উইকেট হারালেও গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের দৃঢ়তায় সহজেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় সফরকারীরা। ম্যাক্সওয়েল ২৫ ও পিটার হ্যান্ডসকম্ব ১৬ রানে অপরাজিত ছিলেন।
এই ম্যাচ জিতলেও টেস্ট র্যাঙ্কিংয়ে এক ধাপ অবনমন হয়েছে অস্ট্রেলিয়ার। স্টিভ স্মিথের দল চার থেকে নেমে গেছে পাঁচে। চারে উঠেছে নিউজিল্যান্ড। দুই দলের রেটিং পয়েন্ট সমান ৯৭ হলেও ভগ্নাংশের ব্যবধানে এগিয়ে আছে কিউইরা। আর বাংলাদেশ ৭৪ পয়েন্ট নিয়ে নয়ে আছে। আটে থাকা ওয়েস্ট ইন্ডিজের সঙ্গে বাংলাদেশের পয়েন্টের ব্যবধান মাত্র ১।
বাংলাদেশ সময়: ১৭১০ ঘণ্টা, ০৭ সেপ্টেম্বর ২০১৭
লেটেস্টবিডিনিউজ.কম/কেএসপি