পড়ন্ত বিকেলে সংবাদ সন্মেলনে দিনের খেলা নিয়ে অনেক কথাই বললেন সাকিব আল হাসান। শেরেবাংলা স্টেডিয়ামের কনফারেন্স হল থেকে বেরিয়ে ড্রেসিং রুমে ফেরার পথে উইকেট সম্পর্কে একটি তাৎপর্যপূর্ণ তথ্য দিয়ে গেলেন বাংলাদেশের চালিকাশক্তি, বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার।
প্রশ্ন ছিল, উইকেটে কি বল শুধু টার্ন করেছে আর মাঝে মধ্যে একটু বেশি লাফিয়ে উঠেছে? সাকিবের জবাব, ‘হ্যাঁ, কিছু কিছু ডেলিভারি স্বাভাবিকের চেয়ে একটু বেশিই লাফিয়ে উঠেছে। আমি আর তামিম এমন আচমকা বাড়তি বাউন্স নেয়া
ডেলিভারিতেই আউট হয়েছি। তবে শুধু লাফিয়েই ওঠেনি। কিছু বল নিচুও হয়েছে। যা ব্যাটসম্যানের জন্য অনুমান করা কঠিন।’
সাকিবের ধারনা, ‘বাউন্স এমন ওঠানামা করলে সেটা আমাদের স্পিনারদের জন্যই ভাল হবে।’ তাহলে কি দ্বিতীয় দিনও এমন উইকেটই চান? সাকিবের জবাব, ‘হ্যাঁ, কেন চাইব না? বাড়তি টার্ন ও অসমান বাউন্স থাকলে তো আমাদেরই লাভ।’
উইকেট পক্ষে। তাই লিডের আশা প্রবল; কিন্তু তারপরও আছে সংশয়। সামনে বাঁধা একজন। হিমালয়ের মত দৃঢ়। স্টিভেন স্মিথ। আজ (রোববার) অস্ট্রেলিয়া যেখানে দিন শেষ করেছে, এ রকম অবস্থায় অজি অধিনায়কের কিন্তু বেশ কিছু ভাল ইনিংস আছে।
খুব বেশি দুর যেতে হবে না। ভারতের সাথে এ বছর ফেব্রুয়ারি-মার্চে দারুন ব্যাটিং করেছেন স্মিথ। ভারতীয় স্পিনারদের দোর্দণ্ড প্রতাপের মুখেও হিমালয়ের বিশালতায় ঠায় দাঁড়িয়েছিলেন স্মিথ।
বেঙ্গালুরু, পুনে, রাঁচি ও ধর্মশালার টার্নিং উইকেটে রবিচন্দন অশ্বিন আর রবীন্দ্র জাদেজার ঘুর্ণি বলও তাকে দমাতে পারেননি। একদিকে প্রায় নিয়মিত বিরতিতে উইকেট পড়লেও অন্যদিকে স্মিথ ছিলেন অবিচল। আস্থা এবং প্রবল আত্মবিশ্বাসের প্রতিমূর্তি। স্লো, লো ও টার্নিং পিচে খেলার পরিপাটি টেকনিক এবং ধৈর্য্য-সংযেমের মিশেলে স্মিথই ছিলেন ভারতীয় স্পিনার তথা বোলারদের মাথা ব্যাথার বড় কারণ।
আর সে কারণেই চার টেস্টের আট ইনিংসে (১০৯+৮+২৮+১৭৮+২১+১১১+১৭+৩) তার ব্যাট থেকে এসেছিল ৪৯৯ রান। আটবার ব্যাটিংয়ে নেমে তিন তিনটি সেঞ্চুরিও হাঁকিয়েছিলেন। রেকর্ডই বলে দিচ্ছে স্পিন সহায়ক ও টার্নিং পিচে কিভাবে খেলতে হয় তা বেশ ভাল জানা স্মিথের।
আজ পড়ন্ত বিকেলে মিরাজ ও সাকিবের বল সাপের মত এদিক-ওদিক ঘুরেছে। কখনো লাফিয়ে ওঠার পাশপাশি কিছু ডেলিভারি বিপজ্জনকভাবে নিচুও হয়েছে। কাল দ্বিতীয় দিন সকালেও উইকেটের এমন বলগাহীন আচরণ অব্যাহত থাকলেই হয়ত স্মিথকে চট জলদি ফেরানো সহজ হবে। না হয়, এ অজি ভালই জানেন, এমন উইকেটে কিভাবে দাঁতে দাঁত কামড়ে পড়ে থাকতে হয়। আর সেট হয়ে যাবার পর খোলস ছেড়ে বেরিয়ে এসে স্কোরবোর্ডের চাকা সচল রাখতে হয়।
কাজেই খালি চোখে অজিদের ব্যাকফুটে মনে হলেও স্টিভেন স্মিথ যতক্ষণ আছেন, ততক্ষণ বাংলাদেশের লিড নেয়া নিশ্চিত নয়।
যার ব্যাট ও বল বাংলাদেশকে আশাবাদি করেছে- সেই সাকিবও অজি অধিনায়ক স্টিভেন স্মিথকে নিয়েই চিন্তিত। সাকিবের মূল্যায়ন- ‘স্মিথই চিন্তার কারণ। বড় হুমকি।’
খেলা শেষে প্রশ্ন উঠলো অজি ক্যাপ্টেন কি এখনো চিন্তার কারণ? সাকিবের অকপট স্বীকারোক্তি, ‘অবশ্যই স্মিথই সবচেয়ে বড় হুমকি। তিনি বিশ্বের এক বা দুই নম্বর ব্যাটসম্যান। রেকর্ডই তার হয়ে কথা বলে। সর্বশেষ সে যখন ভারতে এসে খেলেছে, কয়েকটা সেঞ্চুরি করেছে। ওর মতো বিশ্বমানের ব্যাটসম্যানকে বোলিং করা বিরাট চ্যালেঞ্জ। এখন পর্যন্ত যেহেতু সে ক্রিজে আছে, তাই আমাদের জন্য সে বড় হুমকিও।’
বাংলাদেশ সময়: ২২৫৫ ঘণ্টা, ২৭ আগস্ট ২০১৭
লেটেস্টবিডিনিউজ.কম/এসপি