কোচের সঙ্গে ঝগড়া-ব্যাট ছুড়ে ফেলা প্রসঙ্গে মুখ খুললেন তামিম

ক্রীড়া প্রতিবেদক
দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে টেস্ট সিরিজে অসহায় আত্মসমর্পণ করার পর ওয়ানডে সিরিজে ঘুরে দাঁড়ানোর প্রত্যয় ছিল সফরকারী বাংলাদেশের। কিন্তু সেটা হল না। উল্টো ইতিহাস গড়ে দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে ওয়ানডে সিরিজের প্রথম ম্যাচে হেরে বসে বাংলাদেশ। আর সেই হারটা ১০ উইকেটের ব্যবধানে। তবে এমন হারের জন্য বোলারদেই দুষছেন অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা। তবে এই ম্যাচে ছিলেন না টপ ব্যাটসম্যান তামিম ইকবাল। আর বোলিংয় ছিলেন না টপ বোলার মোস্তাফিজ। আর দুই টপ প্লেয়ারকে ছাড়াই প্রথম ম্যাচ খেলেছিল বাংলাদেশ।

তবে তামিমের না খেলা নিয়ে অবশ্য এর মধ্যেই নানা রকম গল্প চালু হয়ে গেছে। কোচের সঙ্গে ঝগড়া, ম্যাচের আগের দিন নেট প্র্যাকটিস থেকে এসে ব্যাট ছুড়ে ফেলা-এ রকম অনেক কিছুই শোনা যাচ্ছে। কোচের সঙ্গে মনোমালিন্যের কারণেই নাকি প্রথম ওয়ানডেতে খেলেননি। কিন্তু টিম ম্যানেজমেন্টের মতো তামিমও এগুলোকে ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিচ্ছেন। ‘ও রকম কিছু হলে তো আমি পরের ম্যাচেও খেলতাম না। এগুলো কিছুই না। আমি খেলতেই চেয়েছিলাম। কিন্তু ফিজিও বলল, এই ম্যাচ খেলাটা আমার জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হবে’—পরশু ম্যাচ শেষে টিম ম্যানেজার মিনহাজুল আবেদীনের সামনেই কথাগুলো বলছিলেন তামিম।

তাহলে ব্যাট ছুড়ে ফেলার ব্যাপারটা কী? বাঁহাতি ওপেনারের ব্যাখ্যা, ‘নেটে শেষ বলটা আমি ভালোভাবে খেলতে পারিনি। সে জন্য নেট থেকে এসে নিজের ওপরই রাগ করে ওটা করেছি।’ ওই সময় তামিমকে নেটে বল করা অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজারও একই কথা, ‘কোচের সঙ্গে তামিমের সমস্যা হয়েছে, ও রকম কিছু তো দেখলাম না। ওই সময় তো আমিও নেটে বল করছিলাম।’

দল সূত্রের খবর, প্রথম ওয়ানডেতে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে খেলোয়াড়দেরই স্বাধীনতা দিয়েছিলেন কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে। আগের দিনও টসে জিতে ফিল্ডিং নেওয়ার যে চিন্তা ছিল, সেটি পরদিন বদলে যাওয়ার কারণও সিনিয়র খেলোয়াড়দের সম্মিলিত সিদ্ধান্ত। মাশরাফি চেয়েছিলেন টসে জিতে আগে ফিল্ডিং নিতে। কিন্তু সবাই একসঙ্গে বসে আলোচনার পর আগে ব্যাটিং করার সিদ্ধান্ত হয়। তবে প্রথম ওয়ানডের শিক্ষার পর আবারও ফিরে আসছে আগে ফিল্ডিং করার চিন্তা। দক্ষিণ আফ্রিকার উইকেটে বাংলাদেশ দলের সফল হওয়ার সম্ভাবনা বেশি রান তাড়া করলে, দলের ভেতর এই মতবাদটাই নাকি এখন বেশি জোরালো।

তামিম ফিরলে রান তাড়ায় দলের আত্মবিশ্বাস আরও বাড়বে বৈকি। আরেক ওপেনার সৌম্য সরকারের ফর্মটাও খুব জরুরি ছিল এই সময়ে। গত মে মাসে ডাবলিনে নিউজিল্যান্ড ও আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে পরপর দুই ম্যাচে ৬১ ও অপরাজিত ৮৭ রান করেছিলেন। এরপর থেকেই নিভে আছেন বাঁহাতি এই ওপেনার। পরের পাঁচ ওয়ানডেতে করেছেন ০,২৮, ৩,৩ ও ০। দক্ষিণ আফ্রিকায় প্রথম টেস্টে বাইরে বসে থাকার পর দ্বিতীয় টেস্টে সুযোগ পেয়ে দুই ইনিংসে ৯ ও ৩। ওয়ানডে সিরিজের আগে প্রস্তুতি ম্যাচে একবার জীবন পেয়েও করেছেন মাত্র ৩। অবস্থা এমন যে, প্রিয় ছাত্রের ওপর চন্ডিকা হাথুরুসিংহের অসীম আস্থাটাও একটু নড়ে গেছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৫২ ঘণ্টা, ১৭ অক্টোবর  ২০১৭

লেটেস্টবিডিনিউজ.কম/কেএসপি