ইতিহাসের প্রসঙ্গ উঠলেই বাবরের নামটা অনেকেরই চোখের সামনে ভাসে। কেননা, জহির উদ্দিন মুহাম্মদ বাবরই যে, ভারত উপমহাদেশে মুঘল সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা। তারুণ্যের প্রতিক হয়ে পাকিস্তানের ক্রিকেটেও ঝলঝল করছে আরও একজন বাবর। একদিন আগেই ২৩ বছরে পা রাখা এই যুবকের পুরো নাম বাবর আজম।
হ্যাঁ, ব্যাট হাতে আলো ছড়াচ্ছেন এই পাকিস্তানি ক্রিকেটার। সোমবারও তার ব্যাটিংয়ের তকমা দেখল ক্রিকেট দুনিয়া। শ্রীলংকার বিপক্ষে দুর্দান্ত একটা ইনিংস খেলেন তিনি। ১৩৩ বলে ১০১ রান। ছয়টি চার দ্বারা সাজানো এই ইনিংসটিই তাকে জায়গা করে দিল ইতিহাসে।
ক্রিকেট ইতিহাসের প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে কোনো একটি দেশে টানা পাঁচটি সেঞ্চুরি পূর্ণ করার রেকর্ড গড়লেন বাবর আজম। এই সিরিজের আগে সংযুক্ত আরব আমিরাতে গত বছর ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে তিন ম্যাচের তিনটিতেই সেঞ্চুরি করেছিলেন তিনি। শ্রীলংকার বিপক্ষে এবার ব্যাক টু ব্যাক শতরান!
সেঞ্চুরি যে কত সহজ তা বাবর আজমের ব্যাট দেখলেই বুঝা যায়! নির্ভরশীল ব্যাটিং। চাপের মধ্যেও হার না মানা ব্যাটিং করে ইতোমধ্যেই পাকিস্তানের ক্রিকেটে আলাদা করে জায়গা করে নিয়েছেন তিনি।
তার আগে দক্ষিণ আফ্রিকার এবি ডি ভিলিয়ার্স কোনো একটি দেশের বিপক্ষে সর্বোচ্চ টানা চার সেঞ্চুরি করার রেকর্ড গড়েছিলেন। ভারতের বিপক্ষে। পাকিস্তানে জহির আব্বাসের রয়েছে টানা তিন সেঞ্চুরির রেকর্ড। সংযুক্ত আরব আমিরাতে ১৯৯৩ সালে সাঈদ আনোয়ার করেছিলেন টানা তিন সেঞ্চুরি।
শ্রীলংকার বিপক্ষে বাবর আজমের সেঞ্চুরিটি তার ক্যারিয়ারের সপ্তম। এদিক দিয়েও রেকর্ড গড়েছেন তিনি। ৩৩তম ইনিংসেই সপ্তম সেঞ্চুরি। দ্রুততম সাত শতরানের মালিকও এখন বাবর। তার আগে সাত সেঞ্চুরি করতে হাসিম আমলা খেলেছিলেন ৪১ ইনিংস। আর পাকিস্তানের হয়ে তার আগে দ্রুততম সপ্তম সেঞ্চুরি করতে জহির আব্বাস খেলেছিলেন ৪২ ইনিংস।
সোমবার শ্রীলংকার বিপক্ষে কঠিন ম্যাচটাও জিতেছে বাবর আজমের পাকিস্তান। এদিন তারা ৩২ রানে হারিয়েছে শ্রীলংকাকে। আরব আমিরাতের আবুধাবী স্টেডিয়ামে টস জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেয় সরফরাজ আহমেদের দল। শুরুটা মোটেও ভালো করতে পারেনি। ৭৯ রান তুলতেই মূল্যবান পাঁচ উইকেট হারিয়ে ফেলে তারা। তবে বাবর আজমের সেঞ্চুরি ও শাদাব খানের অপরাজিত ৫২ রানের সৌজন্যে নয় উইকেটে ২১৯ রান তুলে পাকিস্তান।
তবে জয়ের জন্য ৪৮ ওভারে শ্রীলংকার টার্গেট দাঁড়ায় ২২০ রান। কিন্তু পাকিস্তানের দুর্দান্ত বোলিং নৈপূন্যে মাত্র ১৮৭ রানেই গুটিয়ে যায় লংকানদের ইনিংস। এর ফলে ৩২ রানের জয় নিয়েই মাঠ ছাড়ে পাকিস্তান। ম্যাচ সেরার পুরস্কার জেতেন শাদাব খান। এই জয়ের ফলে ৫ ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে যায় পাকিস্তান।
বাংলাদেশ সময়: ০৯০৫ ঘণ্টা, ১৭ অক্টোবর ২০১৭
লেটেস্টবিডিনিউজ.কম/কেএসপি