বিএনপি-জামাতের সহিংসতা বনাম শেখ হাসিনার মহানুভবতা

আশরাফুল আলম খোকন 
বসত–ভিটা বন্ধক রেখে জীবিকার সন্ধানে কাতার যাচ্ছিলেন কক্সবাজারের মোঃ ইউসুফ। এমনকি মেয়ের বিয়েতে পাওয়া দেড় ভরি স্বর্ণও বন্ধক রেখেছিলেন। কিন্তু বিএনপি-জামাতের পেট্রোল বোমা তাঁর স্বপ্নগুলোকে শেষ করে দিয়েছে। ৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ সালে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের মিয়া বাজারে তাকে বহনকারী বাসে পেট্রোল বোমা মারে বিএনপি জামাতের সন্ত্রাসীরা। মারা যান ইউসুফ , গুরুতর আহত হন তাঁর ভাই হানিফ। তাঁর এতিম হওয়া তিন ছেলের একজন প্রতিবন্ধী, একটি মেয়েও রয়েছে। যেখানে স্বপ্ন ছিল উজ্জ্বল ভবিষ্যতের , সেখানে নেমে আসে ঘোর অমনিশা।

একই বাসে ছিলেন কক্সবাজারের খেতমুজুর রাশেদুল ইসলাম। তিনিও কাতার যাচ্ছিলেন জীবিকার সন্ধানে। বিএনপি জামাতের পেট্রোল বোমায় তাঁর শরীরের ৮০% পুড়ে যায়। দীর্ঘদিন মৃত্যুর সাথে যুদ্ধ করে পরাজিত হন তিনি। একসাথে শেষ হয়ে যায় আরেকটি পরিবারের স্বপ্ন। অনিশ্চিত ভবিষ্যতের পানে অন্ধকার দেখছিলেন তার বৃদ্ধা মা , স্ত্রী ও দুইটি নাবালক ছেলে।
\"\"
বিএনপি জামাতের পেট্রোল বোমা সন্ত্রাসের আরেক শিকার মোঃ শাহ আলম ছিলেন পেশায় ভ্যান ড্রাইভার। ২০১৪ সালের ৬ জানুয়ারি ঢাকা – চট্টগ্রাম সড়কে ফেনীতে লামুয়া ব্রীজ এলাকায় তার গাড়িতে পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ করে বিএনপি জামাতের সন্ত্রাসিরা। ঘটনাস্থলেই নিহত হন তিনি। পরিবারের উপার্জনের একমাত্র অবলম্বন ছেলেকে হারিয়ে দিশেহারা মা সামসুন নাহার। আরও দুই ছেলে ও দুই মেয়েকে নিয়ে কোন কুল খুজে পাচ্ছিলেন না তিনি।

এই তিনটি পরিবারের সদস্যরা আজ মঙ্গলবার এসেছিলেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা\’র আমন্ত্রণে। শেখ হাসিনা কান্নায় ভেঙে পড়েন তারা। প্রধানমন্ত্রী তাদের জড়িয়ে ধরেন। ছোট ছোট নাবালক শিশু গুলোর দিকে তাকিয়ে আবেগ আপ্লুত হয়ে পড়েন তিনি। এতটাই আপন যেন, ছোট্ট শিশুগুলোর মধ্যে যেন ৭৫ এর ১৫ আগস্টে ঘাতকের নির্মম বুলেটের শহীদ ছোটভাই শেখ রাসেলের মুখচ্ছবি দেখতে পাচ্ছিলেন। তাদেরকে স্বান্তনা দেন তিনি। বলেন, আপনাদের স্বজন হারানোর ব্যাথা আমি বুঝি, সান্তনা দেয়ার ভাষা আমার নাই।

একে একে নিহত শাহ আলমের মা শামসুন্নাহার, নিহত ইউসুফের স্ত্রী ফরিদা বেগম, নিহত রাশেদুলের বৃদ্ধা মা ছালমা বেগম, স্ত্রী সুমি আক্তার, দুই শিশুপুত্র রাফি আর রাহাতের হাতে অনুদানের চেক তুলে দেন শেখ হাসিনা। প্রত্যেক পরিবারকে দশ লক্ষ টাকা করে চেক দেন। এর আগে নিহত ইউসুফের দগ্ধ ভাই হানিফকেও আর্থিক সহায়তা দিয়েছিলেন শেখ হাসিনা।

তারা টাকা দিয়ে কি করবেন এই দিক নির্দেশনাও দেন বঙ্গবন্ধু কন্যা। পরে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে তাদেরকে আপ্যায়ন করার জন্য ব্যক্তিগত স্টাফদের দিক নির্দেশনা দেন তিনি।

বিএনপি জামাতের পেট্রোল বোমা সন্ত্রাসে নিহত, আহত এই রকম তিন শতাধিক পরিবারকে আর্থিক সহায়তা করেছেন শেখ হাসিনা। এই প্রক্রিয়া এখনো অব্যাহত রয়েছে ।

লেখক: প্রধানমন্ত্রীর উপ-প্রেস সচিব

বাংলাদেশ সময়: ১৬২৮ ঘণ্টা, ২২ আগস্ট ২০১৭
লেটেস্টবিডিনিউজ.কম/এসএফ

Scroll to Top