অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড় মোখার গতিবেগ ক্রমশ বেড়েছে। আবহাওয়া অধিদপ্তর বর্তমান পরিস্থিতিতে ৪ নম্বর হুঁশিয়ারি সংকেত নামিয়ে সমুদ্র বন্দর ও উপকূলীয় এলাকায় ৮ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখাতে বলেছে। দুর্যোগ সতর্কতা বিষয়ক আন্তর্জাতিক সংস্থা গ্লোবাল ডিজাস্টার অ্যালার্ট অ্যান্ড কো–অর্ডিনেশন সিস্টেম (জিডিএসিএস) ঘূর্ণিঝড় মোখা নিয়ে রেড অ্যালার্টও জারি করেছে। উপকূলে এ ঘূর্ণিঝড় নিয়ে আতঙ্ক বিরাজ করছে। সেন্টমার্টিন বাসিন্দারা দ্বীপ ছাড়ছেন।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ বজলুর রশিদ গণমাধ্যমকে বলেন, ঘূর্ণিঝড়টি আরও শক্তিশালী হয়ে উঠেছে। আমরা রাতের মধ্যে আরেকটি হালনাগাদ পূর্বাভাস দিবো। সেখানে সতর্ক সংকেত এবং সম্ভাব্য জলোচ্ছ্বাস বিষয়ে পূর্বাভাস দেয়া হবে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, পায়রা বন্দর এবং উপকূলীয় ১২ জেলায় ৮ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। এছাড়া মোংলা বন্দরে ৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
শুক্রবার (১২ মে) আবহাওয়া অধিদপ্তর আরও জানিয়েছে, কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম এলাকার দীপাঞ্চলে ১০-১২ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসের আশঙ্কা রয়েছে। চট্টগ্রাম বন্দরে সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি করা হয়েছে। পণ্য ওঠা-নামা কার্যক্রম বন্ধ করা হয়েছে।
এর আগে জানানো হয়েছে, ঘূর্ণিঝড়টি কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৮৭০ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছে। এটি ঘণ্টায় ১৩ কিলোমিটার গতিতে উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।
শুক্রবার (১২ মে) ভারতীয় আবহাওয়া বিভাগের ১২ নম্বর বুলেটিনে বলা হয়, ঘূর্ণিঝড়টি ভারতের আন্দামানের রাজধানী পোর্ট ব্লেয়ার থেকে ৫৩০ কিলোমিটার, কক্সবাজারের দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিম উপকূল থেকে ৮৭০ কিলোমিটার ও মিয়ানমারের সিত্তে শহর থেকে ৮০০ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছে।
এদিকে, ঘূর্ণিঝড় মোখার কারণে কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, বরিশাল ও মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডের ১৪ তারিখের (রোববার) পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। শুক্রবার (১২ মে) এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে আন্তঃ শিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটি।
মোখা মোকাবিলায় চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারে এক হাজার ৬০৬টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এসব আশ্রয়কেন্দ্রে মোট ১০ লাখ সাত হাজার ১০০ জন আশ্রয় নিতে পারবেন। শুক্রবার এ তথ্য জানিয়েছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়। অন্যদিকে, চট্টগ্রাম বন্দরে ‘অ্যালার্ট-২’ জারি করা হয়েছে।