কিছু দিন পরেই উখিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন। এই সম্মেলনকে সামনে রেখে প্রস্তুত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আর ওই কমিটির আহ্বায়ক হিসেবে বিপ্লবী রোহিঙ্গা নেতার ছেলেকে দায়িত্ব দিয়েছে জেলা আওয়ামী লীগ।
কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলায় আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্ব পাওয়া রাজা শাহ আলম চৌধুরী মিয়ানমারের আরাকানের স্বাধীনতাকামী রোহিঙ্গা নেতা কাশেম রাজার ছেলে। রোহিঙ্গা নেতার সন্তানের এমন পদপ্রাপ্তিতে টেকনাফ-উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে খুশির জোয়ার বইছে। ক্যাম্পের মসজিদগুলোতে রীতিমতো খতমে কোরাআন মাহফিল করে দোয়া করা হচ্ছে।
রোহিঙ্গা ক্যাম্পের মসজিদগুলোতে হওয়া এই ধরনের একটি দোয়া অনুষ্ঠানের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। যেখানে মৌলভীকে বলতে শোনা যাচ্ছে, ‘ও আল্লাহ আরার বার্মার কাশেম রাজার পোয়া রাজা শাহ আলম আওয়ামী লীগের ডর উগ্গা নেতা বইন্যে। ও আল্লাহ তুঁই তারে আরও ডঅর নেতা… ও আল্লাহ প্রধানমন্ত্রী বানাই দে মওলা… (ও আল্লাহ আমাদের বার্মার কাশেম রাজার ছেলে রাজা শাহ আলম আওয়ামী লীগের বড় নেতা হয়েছেন। ও আল্লাহ তুমি তাকে আরও বড় নেতা… ও আল্লাহ প্রধানমন্ত্রী বানিয়ে দিন মওলা…)’।
গত ৯ সেপ্টেম্বর রাজা শাহ আলম চৌধুরীকে আহ্বায়ক ও আরও ৬ জনকে যুগ্ম আহ্বায়ক করে ৩৩ সদস্যের সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটি গঠন করে কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগ। সেদিন সন্ধ্যা ৭টায় সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির অনুমোদিত তালিকা আহ্বায়ক শাহ আলম চৌধুরী রাজার হাতে হস্তান্তর করেন জেলা সাধারণ সম্পাদক পৌর মেয়র মুজিবুর রহমান।
এদিকে এই ভিডিওর সূত্র ধরে স্থানীয় পর্যায়ে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রাজা শাহা আলম রোহিঙ্গাদের বিপ্লবী নেতা কাশেম রাজার ছেলে। ষাটের দশকে মিয়ানমার (তখনকার বার্মা) সরকারের চাপের মুখে বাংলাদেশে পালিয়ে আসেন কাসিম রাজা। মিয়ানমার থেকে পালিয়ে কক্সবাজারের উখিয়ার ইনানীর পাহাড়ি এলাকায় সপরিবারে আশ্রয় নেন। পরবর্তীতে সেই এলাকাতেই বসতি স্থাপন শুরু করেন রোহিঙ্গাদের বিপ্লবী এই নেতা। সেখানে জন্ম হয় কাশিম রাজা তিন পুত্র ও দুই কন্যার। কাশিম রাজার প্রথম পুত্র হলেন শাহ আলম চৌধুরী প্রকাশ রাজা শাহ আলম। সত্তরের দশকে মিয়ানমারের গুপ্তচরেরা উখিয়ার ইনানীর পাহাড়ি এলাকায় কাশেম রাজাকে হত্যা করে।
রাজা শাহ আলম চৌধুরী প্রথম দিকে কক্সবাজারে মাছের ব্যবসা করতেন। এক সময় তিনি কক্সবাজারের লাবণী পয়েন্টে হোটেল মিডিয়া নামের একটি হোটেল নির্মাণ করেন।
হোটেল ব্যবসার সূত্রে ধীরে ধীরে আওয়ামী লীগ নেতাদের সংস্পর্শে চলে আসেন তিনি। জড়িয়ে পড়েন জেলা আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে। এক পর্যায়ে কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতিও হন তিনি। তার ছেলে ইমরান আলম চৌধুরী চিকিৎসকদের সংগঠন বিএমএ-র কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য এবং চট্টগ্রামের ইম্পেরিয়াল হাসপাতালের রেজিস্ট্রার।
: চট্টগ্রাম প্রতিদিন