দুর্নীতি, অনিয়মের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়ায় গাত্রদাহ শুরু হয়েছে: সুজন

অনিয়ম, অব্যবস্থাপনা, দুর্নীতির বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়ায় স্বার্থান্বেষী মহলের গাত্রদাহ শুরু হয়েছে উল্লেখ করে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজন বলেছেন, আমি সব অপকর্মের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি অব্যাহত রাখবো।

আমি যখন রাস্তায় নেমেছি কিছুতেই থামবার পাত্র নই।

তবে আমি একজন রাজপথের রাজনীতিক হিসেবে গঠনমূলক সমালোচনাকে স্যালুট করি। আমি নগরবাসীকে সঙ্গে নিয়ে একটি মানবিক এবং বাসযোগ্য নগরী গড়ার লড়াইয়ে নেমেছি। আমি হকারদের জন্য টাইমফ্রেম ও নিয়ম-নীতি ঠিক করে দিয়েছি। যাতে হকারও থাকে আর নগরবাসীও নির্বিঘ্নে চলাচল করতে পারে। হকার নেতারা এসব মেনে চলবেন বলে ওয়াদাবদ্ধ হয়েছেন।

বুধবার (৯ সেপ্টেম্বর) অপরাহ্নে চসিকের প্রকৌশল, পরিচ্ছন্ন ও বিদ্যুৎ বিভাগের সমন্বয়ে গঠিত টিম নিয়ে কোতোয়ালী মোড় থেকে আশারাফ আলী রোড হয়ে নতুন ব্রিজ পর্যন্ত যাত্রাকালে নাগরিকদের উদ্দেশে তিনি এসব কথা বলেন।

সুজন বলেন, চট্টগ্রামের উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বড় অঙ্কের মেগা প্রকল্পগুলোতে অর্থের জোগান দিয়েছেন। এগুলো বাস্তবায়ন হলে চট্টগ্রামের চিত্র পাল্টে যাবে, চট্টগ্রাম হবে প্রাচ্যের রানি। চট্টগ্রামের উন্নয়নে সব সংস্থা কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করলেই প্রধানমন্ত্রীর স্বপ্নের চট্টগ্রামে রূপ লাভ করবে এ নগরী। তাই সেবা সংস্থাগুলোর মধ্যে সমন্বয়ের বিকল্প নেই।

যারা রাস্তা দখল করে নিয়ম-নীতি না মেনে দোকান বসিয়েছেন তাদের কাছ থেকে কেনাকাটা না করার অনুরোধ জানিয়ে সুজন বলেন, তাদের সামাজিক ভাবে বয়কট করুন।

চসিক প্রশাসকের নিজের নতুন স্কুটিতে চড়ে পরিদর্শনকালে নারী-পুরুষসহ নানা শ্রেণি পেশার মানুষ তাদের সমস্যার কথা অবলীলায় প্রশাসকের কাছে তুলে ধরেন। প্রশাসক আশরাফ আলী রোড সংলগ্ন ব্রিজের কারণে খালের মধ্যে বাঁধ দেওয়ায় সাময়িক যে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে তার জন্য এলাকাবাসীকে ধৈর্য ধরার আহ্বান জানান।

তিনি বলেন, অনেক সময় বড় স্বার্থের জন্য ক্ষুদ্র স্বার্থকে জলাঞ্জলি দিতে হয়। ব্রিজের কাজ শেষ হলে এ দুর্ভোগ আর থাকবে না। তা ছাড়া পাথরঘাটার মিরিন্ডা মেইন রোডে অবস্থিত ড্রেনে স্ল্যাব ভেঙে যে গর্ত সৃষ্টি হয়েছে তাতে যেকোনো সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে বিধায় আগামীকাল দুপুর ১২টার মধ্যে নতুন স্ল্যাব বসানোর নির্দেশনা দেন প্রশাসক। যাত্রাপথে তিনি ব্রিকফিল্ড রোড ও আশরাফ আলী রোডের অকেজো সড়ক বাতি সরিয়ে নিয়ে নতুন সড়ক বাতি লাগানোর জন্য চসিক বিদ্যুৎ বিভাগের সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দেন।

চলতি পথে প্রশাসক ময়লার স্তূপ, ভাঙা রাস্তা ও ফুটপাতে অবৈধ স্থাপনা তাৎক্ষণিক সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দেন এবং এলাকাবাসীকে যত্রতত্র ময়লা-আবর্জনা না ফেলার অনুরোধ জানান।

জলাবদ্ধতা প্রসঙ্গে প্রশাসক বলেন, জলাবদ্ধতা নিরসনে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) অধীনে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী কাজ করছেন। কাজ সম্পন্ন হলে জলাবদ্ধতা নিরসন হবে। প্রশাসক কর্ণফুলী ব্রিজ সংলগ্ন এলাকায় রাস্তা দখল করে যানজট সৃষ্টিকারী অলস গাড়ি পার্কিং দেখে ক্ষোভ প্রকাশ করেন এবং এ ধরনের কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকার জন্য হুঁশিয়ার করেন।

প্রশাসকের একান্ত সচিব মোহাম্মদ আবুল হাশেম, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আনোয়ার হোছাইন, নির্বাহী প্রকৌশলী ফরহাদুল আলম, প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা শেখ শফিকুল মান্নান সিদ্দিকী, রাজনীতিক পুলক খাস্তগীর, মো. মোরশেদ আলম, মো. সোলায়মান সুমন, মো. সাইফুদ্দীন, দিদারুল আলম, আবুল কালাম আবু, মোজাম্মেল হক, শফিউল আলম, মনিুরুল হক মুন্না, নোমান সাঈফ প্রমুখ প্রশাসকের সঙ্গে ছিলেন।

Scroll to Top