যখন তিনি দ্বিতীয় বর্ষে, তখনই বিয়ে হয়ে যায় তার। তার ওপর ইসলামিক স্টাডিজে পড়াশোনা করতেন- এ কারণে কতোই না উপহাস নানাজনের। তবু থেমে যাননি তিনি। প্রথমবার বিসিএস দিয়েই পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) পদে যোগ দিতে যাচ্ছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী নুসরাত ইয়াছমিন তিশা। ৩৮তম বিসিএসে পুলিশ ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছেন তিনি।
চট্টগ্রামের হাজী মুহাম্মদ মহসিন কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক উত্তীর্ণ হওয়া তিসা বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় বর্ষে থাকা অবস্থাতেই বিয়ের পিঁড়িতে বসেন। অনার্স শেষ করেই তিনি বিসিএসের প্রস্তুতি নিতে শুরু করেন। এ সময় তাকে নানা বঞ্চনার মুখোমুখি হতে হয়। অনেকে নাক সিঁটকে বলেছেন, ‘ইসলামিক স্টাডিজ থেকে বিসিএস? তাও আবার বিবাহিত!’ মেয়ে হয়ে ‘পুলিশ’ হওয়ার ইচ্ছাটাও অনেকে সহ্য করতে পারেননি। তবে উপহাসকে তিনি জেদ হিসেবেই নিয়েছেন। ‘পাছে লোকে কী বলবে’ না ভেবে উপেক্ষা করে বিসিএসের প্রস্তুতি নিয়েছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ে যখন পড়ছিলেন, তখনই সুযোগ পেয়েছিলেন প্রাথমিকে শিক্ষকতা করার। তবে ছয় মাস পরেই অবসর নেন শিক্ষকতা থেকে। কারণ তার লক্ষ্য ছিল বিসিএস।
চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলার ফরহাদাবাদে জন্ম নেওয়া তিসা চার ভাইবানের পরিবারে সবার বড়। মুক্তিযোদ্ধা আবুল বাশার চৌধুরী ও মমতাজ বেগমের প্রথম এই সন্তান চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ থেকে ২০১৫ সালে স্নাতক ও ২০১৬ সালে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন।
চার ভাইবোনের পরিবারে তিসারই কেবল সুযোগ হয়েছে উচ্চশিক্ষা নেওয়ার। শাশুড়ি ও ননদ না থাকায় সংসারও তাকে একাই টেনে নিয়ে যেতে হয়েছে। তবে স্বামী ব্যাংক কর্মকর্তা রাহাত হোসেন হিমেলের সমর্থন সবসময়ই তিনি পেয়েছেন। এক কন্যা সন্তানের মা তিসাকে বিসিএসে ভালো করার পেছনে স্বামীসহ শ্বশুরবাড়ির লোকজনও বেশ সহায়তা ও প্রেরণা দিয়েছেন।