বেসরকারি পর্যায়ের চট্টগ্রামে বৃহত্তম স্বাস্থ্যসবা প্রতিষ্ঠান মা ও শিশু জেনারেল হাসপাতালে নির্মাণ করা হয় ১৪ তলা বিশিষ্ট ভবন। প্রতিটি তলা ৫০ হাজার বর্গফুট আয়তনের। এক ভবনের ছয় তলা পর্যন্ত ফ্লোরে সম্ভব হবে প্রায় ৪০০ শয্যা তৈরি করার। সুযোগ আছে চিকিৎসক-নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীদের চিকিৎসা পরবর্তী নিজস্ব কোয়ারেন্টাইন ব্যবস্থার। অবকাঠামো আছে করোনার নমুনা পরীক্ষায় ল্যাব তৈরির। করোনা ও সাধারণ রোগী প্রবেশে আছে পৃথক গেট।
ফলে এটিই হতে পারে বৃহত্তর চট্টগ্রামে বেসরকারি পর্যায়ের বৃহত্তম করোনাভাইরাস সেবাকেন্দ্র। সরকারি অনুমোদন পেলে এ হাসপাতালে করোনা রোগীর বৃহত্তম সেবাকেন্দ্র হিসাবে প্রস্তুত করা সম্ভব।
১৯৭৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক শিশু বর্ষ উপলক্ষে চট্টগ্রামের কিছু মহৎ প্রাণ সমাজ হিতৈষীর উদ্যোগে এ হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা হয়। ক্রমে এটি চট্টগ্রামে বেসরকারি পর্যায়ে বৃহত্তম স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রে পরিণত হয়। বর্তমানে এ হাসপাতালে ৭০ জন প্রফেসর, ৫০ জন লেকচারার, ১৬০ জন মেডিকেল অফিসার ও রেজিস্ট্রার, ২৫ জন কনসালটেন্ট, ৩৭০ জন নার্স, ১২৫ জন চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারি, ১০৩ জন নিরাপত্তকর্মী ও ১১৫ জন পরিচ্ছন্নতাকর্মী আছে।
মা ও শিশু হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা কমিটির ট্রেজারার রেজাউল করিম আজাদ বলেন, এখন চলছে বৈশ্বিক মহামারি। মা ও শিশু হাসপাতাল জনগণের। আমরা চাই কঠিন এই মুহুর্তে মানুষের পাশে থেকে সেবা করতে। তাই সরকার চাইলে এ হাসপাতালের নতুন ভবনের প্রস্তুত থাকা অংশকে কোভিড হাসপাতাল হিসাবে ঘোষণা করতে পারে। ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে চারশত শয্যায় সেবা দেওয়া সম্ভব হবে।
তিনি বলেন, ১৪ তলা ভবনের ৬ তলা পর্যন্ত পূর্ণাঙ্গ প্রস্তুত। ইতোমধ্যে প্রাথমিকভাবে অক্সিজেনের ব্যবস্থা, ১০টি ভেন্টিলেটর বরাদ্দ ও ৭০ শয্যার প্রি-আইসোলেশনের জন্য প্রস্তত করা হয়েছে। সরকারি সহায়তায় ছয়তলা পর্যন্ত করোনা চিকিৎসায় ব্যবহার করা সম্ভব।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, প্রায় ৫৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে ৮৫০ শয্যার ১৪ তলা বিশিষ্ট একটি ভবন নির্মাণ করে শিশু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। করোনার প্রাদুর্ভাব দেখা দিলে গত ১২ এপ্রিল হাসপাতাল ব্যবস্থাপনা কমিটির সভায় করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগীদের সেবায় প্রস্তুত করতে সিদ্ধন্ত নেয়। এ লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নিতে প্রাথমিকভাবে এক কোটি ৪৫ লাখ ২৫ হাজার টাকা কার্যনির্বাহী কমিটির সভায় অনুমোদন দেওয়া হয়।
এরই মধ্যে প্রস্তুত করা হয় ভ্যান্টিলেটর সুবিধাসহ ৭০ শয্যার প্রি-আইসোলেশন ওয়ার্ড, সেন্ট্রাল অক্সিজেন ব্যবস্থা ও ফ্লু কর্নার। নতুন ভবনের দ্বিতীয় তলায় চিকিৎসকদের আবাসন ব্যবস্থা এবং তৃতীয় তলায় আইসোলেশন ওয়ার্ড প্রস্তুত করা হয়। চতুর্থ থেকে ৬ষ্ঠ তলা পর্যন্ত কাজ শেষ এবং সপ্তম থেকে চতুর্দশ তলা পর্যন্ত অবকাঠামো প্রস্তুত।
এখানে কেবল রোগীর সেবার উপযোগী করে শয্যা স্থাপন করতে হবে। এখন দরকার সকারের অনুমোদন। একই সঙ্গে এ হাসপাতালের পুরাতন ভবনের ৮০০ শয্যায় চলছে সাধারণ রোগীদের চিকিৎসা।