গত মঙ্গলবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) বরিশালে পরিবহন স্টাফ কর্তৃক শিক্ষার্থী লাঞ্ছিতের পর সড়ক অবরোধের জেরে মধ্যরাতে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালিয়েছে পরিবহন শ্রমিকরা। এতে প্রায় ২০ জন শিক্ষার্থী আহত হন, যাদের মধ্যে ১১ জনকে বরিশাল শের ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। হামলার সময় পুলিশ সামনে থাকলেও কোন পদক্ষেপ নেয়নি বলেও অভিযোগ করেন ঘটনাস্থলে থাকা শিক্ষার্থীরা।
এরপর থেকেই রূপাতলী হাউজিং এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। ঘটনার প্রতিবাদে বুধবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৭টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে বরিশাল-পটুয়াখালী মহাসড়কে ইট ও কাঠ ফেলে অবরোধ করে রেখেছে শিক্ষার্থীরা। এসময় একটি বাস ভাংচুরের ঘটনা ঘটে। এতে দুর্ভোগে পড়েছেন সাধারণ যাত্রীরা। এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থার দাবি জানিয়েছেন তারা।
জানা গেছে, মঙ্গলবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) নগরীর রূপাতলী এলাকায় বিআরটিসি বাস কাউন্টারের এক স্টাফ বিশ্ববিদ্যালয়ের দু’জন শিক্ষার্থীকে লাঞ্ছিত করে। এ ঘটনায় ওইদিন দুপুর দেড়টা থেকে প্রায় দু\’ঘণ্টা সেখানকার বাস টার্মিনাল অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা। পরবর্তীতে রফিক নামের অভিযুক্ত স্টাফকে পুলিশ গ্রেফতার করলে অবরোধ তুলে নেয় তারা।
এই ঘটনার জেরে রাত একটার দিকে বরিশাল বাস-মিনিবাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক শিপনের নেতৃত্বে মানিক ও মামুন তার দলবল নিয়ে নগরীর রূপাতলী এলাকায় মাহমুদুল হাসান তমালের মেসে হামলা চালায়। ঘটনা শোনার পর তমালকে উদ্ধারে এগিয়ে আসেন পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন মেসের শিক্ষার্থীরা। তখন ধারালো অস্ত্র ও লাঠিসোটা দিয়ে আগত শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায় পরিবহন শ্রমিকরা।
হাসপাতালে ভর্তি ১১ জন হলেন- মৃত্তিকা ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের নুরুল্লাহ সিদ্দিকী, রসায়ন বিভাগের এস এম সোহানুর রহমান, পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের আহসানুজ্জামান, গণিত বিভাগের ফজলুল হক রাজীব, সমাজবিজ্ঞান বিভাগের আলীম সালেহী, বোটানি ও ক্রপ সাইন্সের আলী হাসান, বাংলা বিভাগের মো. রাজন হোসেন এবং মার্কেটিং বিভাগের মাহবুবুর রহমান, মাহাদী হাসান ইমন, মিরাজ হাওলাদার ও সজীব। তারা সবাই বর্তমানে শের ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সার্জারি বিভাগে (পুরুষ) চিকিৎসাধীন আছেন।
এ বিষয়ে বিষয়ে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যানেজমেন্ট বিভাগের শিক্ষার্থী আসিফ বিল্লাহ বলেন, যখন শ্রমিকরা হামলা চালায় তখন পুলিশ সামনে ছিল। কিন্তু তাদের কোনো ভূমিকা ছিল না। আমরা বারবার বাঁচার আকুতি জানালেও তারা তখন আসেনি। পরে তারা এসে শ্রমিকদের ছত্রভঙ্গ করে।
ঘটনার সময় বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. সুব্রত কুমার দাসকে গণমাধ্যমকর্মী ও শিক্ষার্থীরা একাধিকবার ফোন করলেও তাকে পাওয়া যায়নি। পরে ঘটনা সম্পর্কে তিনি জানান, ‘রাতে সংবাদ পেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য শিক্ষকদের নিয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যাই। এবং আহত সকল শিক্ষার্থীর চিকিৎসা ব্যবস্থা করি। আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানে চেষ্টা করা হবে।’