অস্বাভাবিক জোয়ারের তাণ্ডবে পর্যটন কেন্দ্র কুয়াকাটার সৈকত লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে। জিরো পয়েন্ট থেকে শুরু করে সৈকতের অন্তত ৩০ ফুট প্রস্থ বেলাভূমি গিলে খেয়েছে বিক্ষুব্ধ সাগর। ভেসে গেছে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের দোকানসহ মালামাল। ভাঙনের তীব্রতা এতো বেশি ছিল যে বালুর নিচের সাবমেরিন ক্যাবলের অপটিক্যাল লাইন বের হয়ে গেছে। উত্তাল ঢেউয়ের আঘাতে ভেঙে গেছে সৈকত লাগোয়া একটি আবাসিক হোটেলের একাংশ। হুমকির মুখে রয়েছে পাবলিক টয়লেট। উপড়ে পড়েছে অসংখ্য গাছ পালা। সর্বত্র এখন যেন ধ্বংসের ছাপ পড়ে আছে।
সৈকত পাড়ের ঝিনুকের দোকানি মো. রাসেল খলিফা বলেন, রাতে দোকান বন্ধ করে বাসায় যান। সকালে এসে দেখি মালামালসহ দোকানের একাংশ সাগরে ভাসছে। শুধু তার দোকান নয়, সৈকতের প্রায় অর্ধশত ক্ষুদ্র দোকানিরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। প্রায় এক যুগের সাগরপাড়ের ব্যবসা। সব ভেসে গেছে বলে এই ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী জানান।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শুধু সৈকত নয়। ঢেউয়ের ঝাপটায় বন্যা নিয়ন্ত্রণ বেড়িবাঁধও চরম ঝুঁকিতে পড়েছে। একই সাথে ধ্বংসে পরিণত হয়েছে বনবিভাগের রিজার্ভ ফরেস্ট ও কুয়াকাটা জাতীয় উদ্যান ইকোপার্ক। কুয়াকাটার সৈকত লাগোয়া সম্প্রীতির নিদর্শন হিসেবে খ্যাত মসজিদ ও মন্দিরটি রয়েছে ঝুঁকিতে। অস্বাভাবিক জোয়ারের এমন তাণ্ডব তারা আগে কখনও দেখেননি।
আগত পর্যটক সন্দীপ বিশ্বাস বলেন, সাগরের অব্যাহত ভাঙনে কুয়াকাটার চিত্র বদলে যাচ্ছে। সৈকত রক্ষায় এখনই পদক্ষেপ নেয়া জরুরি। অন্যথায় সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের এই বিরল সৌন্দর্য মণ্ডিত কুয়াকাটা হারিয়ে যাবে।
কুয়াকাটা পৌর মেয়র আ. বারেক মোল্লা জানান, সমুদ্র সৈকত রক্ষা করা কুয়াকাটা পৌর সভার একার পক্ষে সম্ভব নয়। পানি উন্নয়ন বোর্ডকে বারবার অবহিত করা হলেও তারা গুরুত্ব দিচ্ছেনা। সৈকতের ভাঙন রোধে তিনি দ্রুত প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী (কলাপাড়া সার্কেল) খান মোহাম্মদ ওলিউজ্জামান জানান, ভাঙন রোধের জন্য মন্ত্রণালয়ে প্রকল্প প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। তবে, এ পর্যন্ত কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি।