পটুয়াখালীর বাউফলে স্বামীর পরকীয়ায় বলি হয়েছে সুমা আক্তার (২২) নামে এক গৃহবধূ। রোববার (৮ অক্টোবর) রাত সাড়ে ৩টার দিকে ধুলিয়া ইউনিয়নের চাঁদকাঠী গ্রামে ঘটে এ ঘটনা। ঘটনার পর থেকে পলাতক রয়েছে স্বামী নাজমুল ইসলাম ও তার পরিবারের লোকজন। সোমবার (৯ অক্টোবর) সকাল ১১টায় পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য পটুয়াখালী মর্গে পাঠিয়েছে।
পুলিশ ও নিহতের স্বজনদের সূত্রে জানা যায়, ধুলিয়া ইউপির চাঁদকাঠী গ্রামের শহিদ হাওলাদারের ছেলে নাজমুলের (৩০) সঙ্গে নাজিরপুর ইউনিয়নের ছয়হিস্যা তাতেরকাঠী গ্রামের শফিকুল ইসলাম তালুকদারের মেয়ে সুমা আক্তার প্রেমে জড়িয়ে পড়ে। এরপর পরিবারের অমতে ৪ বছর আগে তাদের বিয়ে হয়। বিয়ের কিছুদিন পরই নাজমুল অন্য এক মেয়ের সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়ে। এনিয়ে স্বামী স্ত্রীর মধ্যে প্রায়ই ঝগড়া-ঝাটি হতো। প্রেমের কারণে বিয়ে হওয়ায় নাজমুলের বাবা মাসহ অন্য সদস্যরাও সুমাকে ভালো চোখে দেখত না। পরিবারের সদস্যদের ইন্ধনে কারণে-অকারণে নাজমুল তার স্ত্রীকে প্রায়ই নির্যাতন করে গুরুতর জখম করত।
বিষয়টি সুমার বাবা উপজেলা নির্বাহী অফিসার আবদুল্লাহ আল মাহমুদ জামানের কাছে অভিযোগ করলে ছয়মাস পূর্বে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে তার উপস্থিতিতে ধুলিয়া ও নাজিরপুর ইউপির চেয়ারম্যানদের মাধ্যমে একবার সালিশ বৈঠকের মাধ্যমে আপসরফা হয়েছিল।
কিন্তু এর পরেও নির্যাতন চালিয়ে যায় নাজমুল। সুমার বাবা শফিকুল ইসলাম জানান, পরকীয়ার জের ধরে রোববার (৮ অক্টোবর) রাতে স্বামী ও স্ত্রীর মধ্যে কথা কাটাকাটি হলে স্বামী নাজমুল ও তার পরিবারের সদস্যরা সুমাকে বেদম মারধর করে। এক পর্যায়ে সুমা জ্ঞান হারিয়ে ফেললে তার স্বামী, শ্বশুরসহ পরিবারের লোকজন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে এলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। শ্বশুর বাড়ির লোকজন কৌশলে সুমার লাশ নিয়ে হাসপাতাল থেকে কালিশুরী বাজারের বিদ্যুৎ অফিসের পাশে অটোরিকশাসহ লাশ রেখে পালিয়ে যায়।
খবর পেয়ে কালিশুরী পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই আবুল কালাম লাশ উদ্ধার করে বাউফল থানায় নিয়ে আসেন। এ ঘটনায় সুমার বাবা একটি হত্যা মামলা করবেন বলে জানান। বাউফল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আযম খান ফারুকী বলেন, ‘ময়না তদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পর প্রকৃত ঘটনা জানা যাবে। তবে প্রাথমিকভাবে অভিযোগ পেয়ে বিষয়টি পুলিশ তদন্ত করছে।’
বাংলাদেশ সময়: ১৩০৮ ঘণ্টা, ১০ অক্টোবর, ২০১৭
লেটেস্টবিডিনিউজ.কম/নীল