ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের ছোবলে ভোলার চরফ্যাশন উপজেলায় শতাধিক বসতঘর সম্পূর্ণ এবং তিন শতাধিক বসতঘর আংশিক বিধ্বস্ত হয়েছে। শনিবার দিবাগত রাত শেষে উপজেলার চরকলমী, নজরুল নগর, এওয়াজপুর, ওসমানগঞ্জ এবং মুজিব নগর ইউনিয়নে এ ঘটনা ঘটে। এছাড়াও ইলিশা নামক স্থানে মাঝ নদীতে মাছ ধরা ট্রলার ঝড়ের কবলে পড়ে ৫ জেলে এখনো নিখোঁজ রয়েছে।
নজরুল নগর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান রুহুল আমিন হাওলাদার জানান, তার ইউনিয়নে ৩১টি ঘর সম্পূর্ণ এবং ৩০টি ঘর আংশিক বিধ্বস্ত হয়েছে। বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে গেছে এবং অসংখ্য গাছ উপড়ে পড়েছে। চর কলমী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কাওসার আহমেদ জানান, তার ইউনিয়নে ২২টি ঘর সম্পূর্ণ এবং ১৬টি ঘর আংশিক বিধ্বস্ত হয়েছে।
এছাড়া এওয়াজপুর ইউনিয়নে ৮টি এবং ওসমানগঞ্জ ইউনিয়নে ৭টি ঘর সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত হয়েছে। বৈরি আবহাওয়ার কারণে মোবাইল যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন থাকায় উপজেলার মূল ভূখণ্ড থেকে বিচ্ছিন্ন দ্বীপ মুজিব নগর, ঢালচর ইউনিয়নের ক্ষয়ক্ষতির তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ আরও বাড়তে পারে বলে জানিয়েছে স্থানীয় জন প্রতিনিধিরা।
স্থানীয় বাসিন্দরা জানান, ঝড়ের রাতে ঘরের বাসিন্দারা যার যার মতো শুয়ে এবং বসে ছিলো। শেষ রাতের দিকে হঠাৎ ঝড়ের ছোবলে মাথার ওপর থেকে ঘর উড়ে যায়। মুহূর্তের মধ্যে ঘরের চকি ও বিছানাসহ অন্যান্য মালামাল উড়ে যায়।
দুপুরে চরফ্যাশন উপজেলার চরকলমী ইউনিয়নের দক্ষিণ মঙ্গলগ্রামের হাসেম হাওলাদার বাড়িতে গিয়ে ঝড়ের তাণ্ডবে এমন ধ্বংসচিহ্ন আর ক্ষতিগ্রস্তদের আহাজারি দেখা গেছে।
হাসেম হাওলাদার জানান, অনেক সময় ধরে ঝড় থাকলেও ধ্বংসাত্মক ঝড়টি ৩০ সেকেন্ড স্থায়ী ছিলো। প্রচণ্ড গতির ঘূর্ণিবাতাস মাথার উপর থেকে বসতঘরগুলো উড়িয়ে নিয়ে যায়। তার বাড়িতে ৩টি টিনের ঘর ছিল। ঝড়ে ওই তিনটি ঘরই উড়িয়ে নিয়ে গেছে।
ঝড়ের পর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. রুহুল আমিন এবং ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচির সহকারী পরিচালক মোকাম্মেল হক লিপন চরকলমী ও নজরুল নগর ইউনিয়নের ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেছেন। এ সময় তারা ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে শুকনো খাবার বিতরণ করেন।
উপজেলা মৎস্য অফিসার মারুফ হোসেন মিনার জানান, ভোলার ইলিশা নামক স্থানে মাঝ নদীতে ঝড়ের কবলে পড়ে শনিবার রাতে আবদুল্লাহ পুর ইউনিয়নের তোফায়েল মাঝির মাছ ধরা ট্রলারটি ২০জন জেলেসহ ডুবে গেছে। ওই ট্রলারে থাকা ১৫ জেলে উদ্ধার হলেও ৫ জেলে এখনো নিখোঁজ রয়েছেন।