সারাদেশের জুলাই আগস্ট ও তার পরবর্তী হত্যাকাণ্ড, ধর্ষণ, নিপীড়নের বিচার ও স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগসহ ৭ দফা দাবি নিয়ে সমাবেশ করেছে ছাত্র ইউনিয়ন, যুব ইউনিয়ন, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র-ফ্রন্টসহ একাধিক সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন।
শনিবার (১৫ মার্চ) সকালে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশ থেকে গণ মিছিলের কর্মসূচি থাকলেও তা স্থগিত করা হয়।
এ সময় বিভিন্ন বাম সংগঠনের নেতারা বলেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি না হলে অবিলম্বে অন্তর্বর্তী সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন ঘোষণা করা হবে। অবিলম্বে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির দায় নিয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগ করতে হবে।
ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি মাহিন শাহরিয়ার রেজা বলেন, ‘৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে দেশে হত্যা, ধর্ষণ ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতির দায় অন্তর্বর্তী সরকারের। মব জাস্টিসের নামে দেশে উগ্রবাদ প্রতিষ্ঠা করা হচ্ছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘ধর্ষণ বিরোধী মঞ্চ ব্যবহার করে পতিত স্বৈরাচারকে সুযোগ নিতে দেয়া হবে না। জুলাই হত্যার বিচার এখনও হয়নি। ভয়ভীতি দেখিয়ে আন্দোলন দমানো যাবে না। যথাযথ বিচার করতে হবে।’
উদীচীর সম্পাদক অমিত রঞ্জন দে বলেন, ‘নারীদের ঘরে ঢুকিয়ে দেয়ার ষড়যন্ত্র চলছে। এদের প্রতিহত করতে হবে।’
সমাবেশে সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের (একাংশ) কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি মুক্তা বাড়ৈ বলেন, ‘আমরা খুব আকাঙ্ক্ষা নিয়ে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে অংশ নিয়েছিলাম। সেখানে লাখ লাখ নারী অংশ নিয়েছিল একটাই উদ্দেশ্যে। সেটা হলো, বৈষম্যহীনভাবে নারীর পথচলাকে সহজ করা এবং নারীর ওপর যত ধরনের সামাজিক বৈষম্য আছে সেগুলোকে বিলোপ করা, শিক্ষা ব্যবস্থার বৈষম্যকে বিলোপ করা।’
তিনি বলেন, ‘গত ৫ আগস্টের পরে সেই নারীদেরই লাঞ্ছিত হতে হচ্ছে। একটা মহল আমার ওড়না ঠিক আছে কিনা, ঠিকমতো হাঁটছি কিনা, কী খেতে পারবো, কীভাবে চলবো সবকিছুই যেন নির্ধারণ করে দিচ্ছে। নারীদের তারা মানুষ হিসেবে নয়, জড়বস্তু বা পণ্য হিসেবে দেখতে চান। আর তার বিরুদ্ধেই আজকে এখানে দাঁড়িয়েছি।’
মুক্তা বলেন, ‘এ দেশে ক্যান্টনমেন্টের ভেতরে তনুকে হত্যা করা হয়েছে, তার বিচার হয়নি। মুনিয়াকে ভুক্তভোগী করে হত্যা করা হলেও বিচার হয়নি। নুসরাতকে জ্বালিয়ে পুড়িয়ে মেরে ফেলার বিচারও আমরা পাইনি। প্রতি ১০ মিনিটে নাকি একটি ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। আমরা অবাক হই, এ জন্যই কি আমরা নারীরা রাস্তায় নেমেছিলাম?’
তাদের সাত দফা দাবি হলো– দেশে অব্যাহত ধর্ষণ, নিপীড়ন ও হত্যার বিচার করতে হবে; স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে অপসারণ করতে হবে; জুলাই আগস্ট হত্যাকাণ্ডের বিচার করতে হবে; মন্দির-মসজিদ, মাজারে হামলাকারীদের বিচার করতে হবে; চট্টগ্রামে আইনজীবী আলিফ হত্যার বিচার করতে হবে; সাগর-রুনি, তনু, আফসানা, মুনিয়াসহ আওয়ামী আমলের সব হত্যার বিচার করতে হবে এবং হিন্দু ও আদিবাসীদের ওপর হামলা ও লুটতরাজের বিচার করতে হবে।