তৈরি পোশাক খাতে অস্থিরতা কাটতে শুরু করেছে। বৃহস্পতিবার (৫ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে শিল্পনগরী গাজীপুরে দলে দলে কর্মস্থলে যোগ দেন পোশাক শ্রমিকরা।
সকালে সরেজমিনে টঙ্গী বিসিক, ভোগরা বাইপাস, বাঘের বাজার ও মাওনা এলাকায় শ্রমিকদের নিজ নিজ কর্মস্থলে যেতে দেখা যায়। কারখানাগুলোতেও চলছে স্বাভাবিক কার্যক্রম।
এ দিকে, শিল্প প্রতিষ্ঠানে নিরাপত্তা জোরদারে মোড়ে মোড়ে সেনাবাহিনী ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের টহল দিতে দেখা গেছে।
এর আগে, কয়েকদিন ধরে বিভিন্ন দাবিতে আন্দোলন করছিলেন বেশ কয়েকটি কারখানার কর্মজীবীরা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর) গাজীপুরে অর্ধশত কারখানা বন্ধ ঘোষণা করা হয়।
গাজীপুর শিল্প পুলিশের এসপি সারওয়ার আলম জানান, সকাল থেকে এলাকার পরিবেশে শান্ত রয়েছে। শ্রমিকরা দলে দলে কর্মস্থলে যাচ্ছেন। এছাড়া যেকোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতি ঠেকাতে এবং আইনশৃংঙ্খলা পরিস্থিতি ঠিক রাখতে জেলা পুলিশ, শিল্প পুলিশ, মেট্রোপলিটন পুলিশ, সেনা সদস্য ও বিজিবি সম্মিলিতভাবে কাজ করছে।
জানা যায়, বুধবার বিচ্ছিন্নভাবে টঙ্গী বিসিক, ভোগরা বাইপাস, বাঘের বাজার ও মাওনা এলাকায় শ্রমিকরা জড়ো হয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন। এ সময় বেশ কয়েকটি শিল্প কারখানায় ভাঙচুরের চেষ্টা করলে সেনাবাহিনী ও শিল্প পুলিশের সদস্যরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। চাকরি এবং নিয়োগে নারী-পুরুষের সমান অধিকারসহ বিভিন্ন দাবিতে গাজীপুরে বুধবার সকাল থেকে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন পোশাক শ্রমিকরা।
শিল্পপুলিশ জানায়, বুধবার সকাল থেকে টঙ্গী-আশুলিয়া-ইপিজেড সড়কের বাইপাইল থেকে জিরাবো পর্যন্ত সড়কের উভয়পাশে অবস্থিত এসব কারখানায় সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়।
তারা জানান, এদিন সকালে আশুলিয়ায় বেশ কিছু কারখানায় প্রবেশ করে শ্রমিকরা বিভিন্ন দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করলে কর্তৃপক্ষ কারখানা ছুটি ঘোষণা করেন। পরে ওইসব কারখানার শ্রমিকরা বেরিয়ে উৎপাদন অব্যাহত রাখা কারখানাগুলোর সামনে গিয়ে বিক্ষোভ শুরু করলে, অন্তত ৬০টি কারখানায় সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ।
এ দিকে টঙ্গী-আশুলিয়া-ইপিজেড ও নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়কের কোথাও কোথাও শ্রমিকরা বিক্ষিপ্ত অবস্থান নেয়ার চেষ্টা করলে যান চলাচল কিছুটা বিঘ্নিত হয়। তবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ করছেন শিল্পপুলিশ, সেনাবাহিনী ও বিজিবির সদস্যরা।
গাজীপুর শিল্প পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইমরান হোসেন বলেন, বিক্ষোভকারী শ্রমিকরা ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করলে যানবাহন চলাচলে বিঘ্ন হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে শ্রমিকরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে। পরে সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছালে শ্রমিকদের সড়ক থেকে সরিয়ে দেয়া হয়।