ফেনী ও কুমিল্লাসহ কয়েকটি জেলায় বন্যা পরিস্থিতি উন্নতির দিকে যাচ্ছে বলে জানিয়েছে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র। তবে বান্দরবান, খাগড়াছড়ি ও কক্সবাজার জেলায় বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
রোববার (২৫ আগস্ট) সকাল ৯টায় বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী সরদার উদয় রায়হানের স্বাক্ষর করা এক বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল, পূর্বাঞ্চল ও দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের প্রধান নদীগুলোর পানি সমতল হ্রাস অব্যাহত রয়েছে জানিয়ে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় পূর্বাঞ্চলীয় কুমিল্লা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও ফেনী জেলার ভারতীয় ত্রিপুরা সীমান্তবর্তী অঞ্চলে এবং ত্রিপুরা প্রদেশের অভ্যন্তরীণ অববাহিকাগুলোতে উল্লেখযোগ্য বৃষ্টিপাত হয়নি। এতে উজানের নদ-নদীর পানি সমতল হ্রাস অব্যাহত রয়েছে। ফলে বর্তমানে মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, ফেনী, কুমিল্লা ও চট্টগ্রাম জেলার নিম্নাঞ্চলের বিদ্যমান বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি অব্যাহত আছে। আগামী ২৪ ঘণ্টায় ফেনী জেলার নিম্নাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হতে পারে। তবে কোনো কোনো স্থানে স্থিতিশীল থাকতে পারে।
আবহাওয়া সংস্থার তথ্যনুযায়ী, আগামী ২৪ ঘণ্টায় দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও এর কাছাকাছি উজানে ভারি বৃষ্টিপাতের শঙ্কা নেই। এ সময় উত্তর-পূর্বাঞ্চলের মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জ জেলার মনু, খোয়াই, ধলাই নদীর পানি সমতল হ্রাস পেতে পারে এবং সংলগ্ন নিম্নাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি অব্যাহত থাকতে পারে।
তবে আগামী ২৪ ঘণ্টায় দেশের পূর্বাঞ্চল ও এর কাছাকাছি উজানে মাঝারি থেকে ভারি বৃষ্টিপাতের আশঙ্কা রয়েছে। এ সময় এ অঞ্চলের কুমিল্লা জেলার গোমতী নদীর পানি সমতল স্থিতিশীল থাকতে পারে এবং সংলগ্ন নিম্নাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতি স্থিতিশীল থাকতে পারে। এ ছাড়া দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চল ও এর কাছাকাছি উজানে ভারি বৃষ্টিপাতের আশঙ্কা রয়েছে। এতে এ অঞ্চলের বান্দরবান, খাগড়াছড়ি, কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম জেলার সাঙ্গু, মাতামুহুরি, কর্ণফুলি, হালদা ও অন্যান্য প্রধান নদীর পানি সমতল সময়বিশেষে বৃদ্ধি পেতে পারে।
বিজ্ঞপ্তিতের আরও বলা হয়, ব্রহ্মপুত্র-যমুনা নদীর পানি সমতল হ্রাস পাচ্ছে। অপরদিকে গঙ্গা-পদ্মা নদীর পানি সমতল স্থিতিশীল আছে, যা আগামী ৪৮ ঘণ্টা পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সুরমা-কুশিয়ারা নদীর পানি সমতল স্থিতিশীল আছে, যা আগামী ২৪ ঘণ্টা অব্যাহত থাকতে পারে। দেশের উত্তরাঞ্চলের তিস্তা, ধরলা ও দুধকুমার নদীর পানি সমতল সামগ্রিকভাবে স্থিতিশীল আছে, আগামী ৪৮ ঘণ্টায় এই নদীগুলোর স্বাভাবিক প্রবাহ বিরাজমান থাকতে পারে।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় থেকে শনিবার (২৪ আগস্ট) জানানো হয়, বন্যা আক্রান্ত হয়েছে ১১টি জেলার ৭৭টি উপজেলা। জেলাগুলো হলো, ফেনী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, খাগড়াছড়ি, নোয়াখালী, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, সিলেট, লক্ষ্মীপুর ও কক্সবাজার। এতে ১৮ জনের মৃত্যুর তথ্য পাওয়া গেছে। তাদের মধ্যে চট্টগ্রামের ৫ জন, কুমিল্লার ৪ জন, নোয়াখালীতে ৩ জন, কক্সবাজারে ৩ জন এবং ফেনী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও লক্ষীপুর জেলায় একজন করে মারা গেছেন।