দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন দক্ষিণ আন্দামান সাগরে অবস্থানরত লঘুচাপটি ঘনীভূত হয়ে পরিণত হয়েছে সুস্পষ্ট লঘুচাপে। এটি আরও ঘনীভূত হয়ে শক্তি অর্জন করে রূপ নিতে পারে ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’য় এবং সেটি বাংলাদেশের চট্টগ্রাম, কক্সবাজার ও মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের ওপর দিয়ে স্থলভাগে আঘাত হানতে পারে। আবহাওয়া অধিদফতরের পূর্বাভাসে এমন তথ্য জানানো হয়েছে। এ ছাড়া আবহাওয়াবিদ ওমর ফারুকও সংবাদমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এদিকে বাংলাদেশে ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’র প্রভাব বেশ ভালোভাবেই পড়বে বলে কানাডার সাসকাচোয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের আবহাওয়া ও জলবায়ু বিষয়ক পিএইচডি গবেষক মোস্তফা কামাল পলাশ আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। তার মতে, ঘূর্ণিঝড় মোখা আগামী রোববার (১৪ মে) সকাল ৬টার পর থেকে ১৫ মে সকাল ৬টার মধ্যে অত্যন্ত তীব্র ঘূর্ণিঝড় হিসেবে ঘণ্টায় ১৮০ থেকে ২০০ কিলোমিটার বেগে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার এবং মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের মংডু জেলার ওপর দিয়ে স্থলভাগে আঘাত করবে।
সোমবার সন্ধ্যায় দেয়া পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে রাজধানীসহ সারা দেশের ওপর দিয়ে তাপপ্রবাহ বয়ে চলছে বলে জানানো হয়েছে। এদিন ঢাকার তাপমাত্রা ছিল ৩৯.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আবহাওয়া দফতরের তথ্যমতে, ৩৪ বছর পর মে মাসে এই তাপমাত্রা রেকর্ড হলো। মঙ্গলবার ঢাকার তাপমাত্রা আরও বাড়তে পারে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদরা।
এ ছাড়া দেশের তিন জেলা–রাজশাহী চুয়াডাঙ্গা ও কুষ্টিয়া জেলার ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। আগামী তিন দিনের মধ্যে বৃষ্টির কোনো সম্ভাবনা নেই।
শুধু ঢাকায় নয়, সারা দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রাও গত নয় বছর আগের রেকর্ড ছুঁয়েছে। আজ চুয়াডাঙ্গায় দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড হয় ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর আগে ২০১৪ সালের ২১ মে যশোরে ওই একই তাপমাত্রা উঠেছিল।
আর স্বাধীনতার পর মে মাসে দেশে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা উঠেছিল ১৯৯৫ সালের ২৮ মে যশোরে, ৪৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
আবহাওয়াবিদ ওমর ফারুক বলেন, আগামী তিন দিনের মধ্যে বৃষ্টির দেখা পাওয়ার সম্ভাবনা নেই। তবে বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপটি ঘনীভূত হয়ে সুস্পষ্ট লঘুচাপে পরিণত হয়েছে। এটি ক্রমে শক্তি সঞ্চয় করে আগামী কয়েক দিনে ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে। সেটি যদি বাংলাদেশ বা আশপাশের অঞ্চলের ওপর দিয়ে বয়ে যায়, তার প্রভাবে দেশে ভারি বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।
তবে ১৩ বা ১৪ মে দেশে বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।