রাষ্ট্রপতি মো: সাহাবুদ্দিন জোরপূর্বক বাস্তচ্যুত রোহিঙ্গাদের তাদের দেশ মায়ানমারে দ্রুত প্রত্যাবাসনে অধিকতর কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন ভারতকে।
ঢাকায় নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনার প্রণয় কুমার ভার্মা আজ দুপুরে বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতির সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে তিনি এ আহবান জানান। রাষ্ট্রপতি বলেন, বাংলাদেশ মানবিক কারণে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিলেও তাদের অবস্থান শুধু বাংলাদেশেই নয়, পুরো অঞ্চলের জন্য সমস্যা তৈরী করছে। রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব মোঃ জয়নাল আবেদীন বাসসকে একথা জানান।
বাংলাদেশ ভারতকে সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ এবং গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেশী বিবেচনা করে উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি এই সম্পর্ককে \”দৃঢ় ও অনন্য\” বলে অভিহিত করেন ।
রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে ভারতের জনগণ ও সরকারের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার কথা কৃতজ্ঞতার সাথে স্মরণ করেন।
বীর মুক্তিযোদ্ধা শাহাবুদ্দিন ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে ভারতে অবস্থাকালীন প্রশিক্ষণ গ্রহণ ও মুক্তিযুদ্ধের অংশগ্রহণের কথাও তুলে ধরেন। বাংলাদেশে ভারতের রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর সফর এবং বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরের কথা উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, এরফলে দু\’দেশের সম্পর্কে নতুন অধ্যায়ের সূচনা হয়েছে।
বাংলাদেশ ভারতের সাথে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে বিশেষ গুরুত্ব প্রদান করে উল্লেখ করে, রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন বলেন, \”চট্টগ্রাম ও মোংলা বন্দর ব্যবহারের জন্য যে চুক্তি হয়েছে তাতে দু\’ দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য বৃদ্ধির পাশাপাশি আর্থ-সামাজিক উন্নয়নও ত্বরান্বিত হবে।\”
গত ২৪ এপ্রিল বাংলাদেশের চট্টগ্রাম ও মোংলা বন্দর ব্যবহার করে নিজ দেশে পণ্য পরিবহণের বাণিজ্যিক অনুমতি পেয়েছে ভারত। এর আগে ২০১৮ সালে ভারতে এসিএমপি (চট্টগ্রাম এবং মংলা পোর্ট) চুক্তি স্বাক্ষর করে ঢাকা ও দিল্লি। এর আওতায় ভারতকে চট্টগ্রাম ও মোংলা বন্দর ব্যবহার করে নিজ দেশে পণ্য পরিবহণের অনুমতি দেয় বাংলাদেশ।
পানি বন্টন চুক্তিসহ দু\’দেশের অমীমাংসিত ইস্যুগুলো পারস্পরিক সহযোগিতা ও আলোচনার মাধ্যমে অচিরেই সমাধান হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন রাষ্ট্রপতি। ভারতের হাইকমিশনার বলেন, তার দেশ বাংলাদেশের সাথে সম্পর্ক উন্নয়নকে বিশেষ গুরুত্ব দেয়। গত দেড় দশকে দু’দেশের মধ্যে কানেক্টিভিটি অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। উভয় দেশের জনগণ তার সুফল ভোগ করছে।
সন্ত্রাসবাদ ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ সরকারের \”জিরো টলারেন্স নীতির প্রশংসা করে তিনি বলেন, এর ফলে এ অঞ্চলে স্থিতিশীলতা এসেছে যা দুদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে ইতিবাচক অবদান রাখছে। সাক্ষাৎকালে রাষ্ট্রপতির সচিবগণ এবং ডেপুটি হাইকমিশনার বিনয় জর্জও উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সূত্রঃ বাসস