বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান জ্বালানি চাহিদা মেটাতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কাতারের কাছে বছরে আরও এক মিলিয়ন মেট্রিক টন তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) চেয়েছেন। বাংলাদেশের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন দেশটির আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রোববার স্থানীয় সময় কাতারের দোহায় ন্যাশনাল কনভেনশন সেন্টারে (কিউএনসিসি) দেশটির আমিরের সঙ্গে বৈঠকে এ জ্বালানি চান।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বৈঠক শেষে ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে কাতারের আমির বলেছেন, আমি আপনাকে সাহায্য করতে চাই। কাতার সবসময় বাংলাদেশকে সাহায্য করতে এগিয়ে আসবে।
মোমেন বলেন, বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে ক্রমবর্ধমান জ্বালানি সংকট মোকাবিলায় কাতারের কাছ থেকে আরও বেশি জ্বালানি, বিশেষ করে বার্ষিক আরও এক মিলিয়ন মেট্রিক টন (এমটিএ) তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) চেয়েছেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী বৈঠকে বলেছেন- আমরা কাতারের সাহায্য চাই। ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বাংলাদেশ জ্বালানি সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে। আমি চুক্তি নবায়ন করতে চাই। আমি আরও এলএনজি চাই। জবাবে কাতারের আমির জানতে চান বাংলাদেশ কতটা জ্বালানি চায়। তাকে বলা হয়, বাংলাদেশ আরেকটি এমটিএ অর্থাৎ ১৬-১৭ কনটেইনার জ্বালানি চায়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আমির বলেন, আপনার কাতার ছাড়ার আগে জ্বালানিমন্ত্রী এ বিষয়ে আপনার সঙ্গে আলোচনা করবেন।
আমির আরও বলেন, আমি আজই আমাদের জ্বালানিমন্ত্রীকে নির্দেশ দিচ্ছি, আপনার কাতার ছাড়ার আগে তিনি (জ্বালানিমন্ত্রী) আপনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন। আমি আপনাকে সাহায্য করতে চাই। কাতার সবসময় বাংলাদেশকে সাহায্য করবে।
বাংলাদেশ বর্তমানে বছরে প্রায় ৪০টি কনটেইনার জ্বালানি আমদানি করছে, যার পরিমাণ এক দশমিক আট থেকে দুই দশমিক পাঁচ এমটিএ।
বৈঠকে শেখ হাসিনা কাতারের আমিরকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান। জবাবে শেখ তামিম বলেন, আমি এ বছর বাংলাদেশ সফর করতে চাই। আমি কথা দিচ্ছি, এ বছর বাংলাদেশ সফর করবো।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ একশটি অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপন করছে। বিভিন্ন দেশ সেখানে বিনিয়োগ করছে। কাতারও আমাদের অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোতে বিনিয়োগ করতে পারে।
কাতারে কর্মরত বাংলাদেশি শ্রমিকদের বিষয়ে শেখ হাসিনা খেয়াল রাখার অনুরোধ জানান। তিনি বলেন, এখানে (কাতার) আমাদের কিছু শ্রমিক চাকরি হারাচ্ছেন। জবাবে শেখ তামিম বলেন, আমি সবসময় বাংলাদেশ ও বাঙালির কল্যাণ চাই।
পরে কাতার জাতীয় কনভেনশন সেন্টারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে আলাদাভাবে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন ইউএনডিপির প্রশাসক অচিম স্টেইনার, ইন্টারন্যাশনাল টেলিকমিউকেশন ইউনিয়ন (আইটিইউ) সেক্রেটারি জেনারেল ডরিন বোগান মার্টিন, ইউনাইটেড ন্যাশন্স কনফারেন্স অন ট্রেড অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (ইউএনসিটিএডি) এর সেক্রেটারি জেনারেল রেবেকা গ্রিন্সপ্যান।
সংবাদ সূত্রঃ বাসস