বীর মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসা বিনামূল্যে দেওয়া হচ্ছে : মুক্তিযুদ্ধমন্ত্রী

মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক জানিয়েছেন, সব বীর মুক্তিযোদ্ধাকে বিভাগীয়, জেলা ও উপজেলা হাসপাতাল এবং ২৩টি বিশেষায়িত হাসপাতালে বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা দেওয়া হচ্ছে। এজন্য এসব হাসপাতালে অগ্রীম অর্থ বরাদ্দ দেওয়া আছে।

আজ মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টায় ঢাকায় মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এ মন্ত্রণালয়ের সেবা সপ্তাহ-২০২৩ উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রী এ কথা জানান। ১ থেকে ৭ জানুয়ারি-২০২৩ পর্যন্ত এ মন্ত্রণালয়ের সেবা সপ্তাহ পালিত হচ্ছে।

মন্ত্রী বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সব সেবা ডিজিটাল পদ্ধতিতে দেওয়া হচ্ছে। এ মন্ত্রণালয়ের সেবা সংক্রান্ত সব তথ্য মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে সন্নিবেশিত করা হয়েছে। পৃথিবীর যে কোনো প্রান্ত থেকে এ মন্ত্রণালয়ের সেবার জন্য আবেদন করা যাবে।’

মন্ত্রী আরও বলেন, ‘বীর মুক্তিযোদ্ধার সম্মানি ভাতা গভর্নমেন্ট টু পারসন (জি টু পি) পদ্ধতিতে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে মোবাইল মেসেজের মাধ্যমে সরাসরি বীর মুক্তিযোদ্ধার অ্যাকাউন্টে দেওয়া হচ্ছে। এ পদ্ধতিতে সব আনুষঙ্গিক সারচার্জ সরকার বহন করে।’

তিনি বলেন, “জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী এবং মহান স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে অসচ্ছল বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য ৩০ হাজার বাড়ি নির্মাণ করে দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ ছাড়া মহান মুক্তিযুদ্ধ সংক্রান্ত সব স্মৃতিচিহ্ন সংরক্ষণ, বীর মুক্তিযোদ্ধাদের কল্যাণ এবং মহান মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি সংরক্ষণ ও চেতনা নতুন প্রজন্মের মাঝে ছড়িয়ে দিতে মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয় সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে স্বাধীনতা স্তম্ভ নির্মাণ (৩য় পর্যায়), উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবন নির্মাণ, মুক্তিযুদ্ধের ঐতিহাসিক স্থানসমূহ সংরক্ষণ ও স্মৃতি জাদুঘর নির্মাণ, নতুন প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধকরণ, শহীদ মুক্তিযোদ্ধা অন্যান্য মুক্তিযোদ্ধাদের সমাধিস্থল সংরক্ষণ ও উন্নয়ন, ১৯৭১-এ মহান মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী কর্তৃক গণহত্যার জন্য ব্যবহৃত বধ্যভূমিসমূহ সংরক্ষণ ও স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ, মুক্তিযুদ্ধকালে শহীদ মিত্র বাহিনী সদস্যদের স্মরণে স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ, মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক প্যানোরামা নির্মাণ (কারিগরি সহায়তা), বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতাযুদ্ধের নৌ-কমান্ডো অভিযান ‘অপারেশন জ্যাকপট’ বিষয়ে পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র নির্মাণ, বীরের কণ্ঠে বীরগাঁথা ইত্যাদি প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। এ ছাড়া আরও ৩টি প্রকল্প প্রক্রিয়াধীন।”

আলোচনাকালে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অংশীজন বীর মুক্তিযোদ্ধাদের বক্তব্য ও সমস্যা শোনা হয় এবং সমাধানের নির্দেশনা দেওয়া হয়। এর আগে মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ের সামনে সেবা সপ্তাহ উপলক্ষে মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সমন্বয়ে এক বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়।

এ সময় মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব খাজা মিয়া, অতিরিক্ত সচিব রঞ্জিত কুমার দাস, জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের মহাপরিচালক মো. জহুরুল ইসলাম রোহেল, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব কামরুন নাহার, মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এসএম মাহবুবুর রহমানসহ মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়, জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল এবং মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্টের কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং বীর মুক্তিযোদ্ধারা উপস্থিত ছিলেন।