‘ভোটচুরি আর মানুষ খুন ছাড়া বিএনপি কিছু পারে না’ :প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘বিএনপির প্রধান দুটি গুণ আছে। একটি হলো ভোটচুরি, অপরটি মানুষ খুন করতে পারা। ২০১৪ সালে বিএনপি ক্ষমতায় না গিয়ে অগ্নিসন্ত্রাস করেছে। তিন হাজারের বেশি মানুষ তখন আহত হয়েছেন। পাঁচশোর বেশি মানুষ মারা গেছে। অনেক গাড়িতে আগুন দিয়েছে তারা।’

আজ রবিবার (৪ ডিসেম্বর) চট্টগ্রামের পলোগ্রাউন্ড মাঠে আয়োজিত আওয়ামী লীগের জনসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, ‘মানুষ পুড়িয়ে মারার হিসাব একদিন খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানকে দিতে হবে। বিএনপি দেশের ক্ষতি করে। আর আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলেই দেশের উন্নয়ন হয়। এই চট্টগ্রামে আমরা ব্যাপক উন্নয়ন করেছি।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘বঙ্গোপসাগরে বাংলাদেশের অধিকার আছে, এই আইন জাতির পিতা করে গেছেন। কিন্তু বিএনপি এই আইন ও অধিকার বাস্তবায়নের পদক্ষেপ নেয়নি। জিয়ার জন্ম কলকাতায় আর পড়াশোনা করেছে করাচিতে। এরপর সেনাবাহিনীতে আসে। আমরা সেই সমুদ্র জয় করেছি। আজ সেগুলো আমাদের কাজে লাগছে।

এসময় কর্ণফুলী টানেল প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘চট্টগ্রাম কর্ণফুলী নদীর নিচে দিয়ে টানেল তৈরি করা হচ্ছে। এ টানেলের কথা মনে উঠলে অবশ্যই আমাদের সাবেক মেয়র মহিউদ্দিন চৌধুরীর কথা খুব মনে পড়ে। কারণ তিনি সবসময় একটা টানেল নির্মাণ হউক, সেটা তিনি চেয়েছিলেন। এটি তার অন্যতম একটি দাবি ছিল। কিন্তু আজকে সেই টানেল উদ্বোধনের পথে। দুর্ভাগ্য হচ্ছে তিনি আজ আমাদের মাঝে নেই। তিনি যেখানেই থাকুক নিশ্চয় সেখান থেকে আমাদের দেখবেন।’

টানেল নিয়ে মহিউদ্দীন চৌধুরীর কথা স্মরণ শুধু এবার নয় এর আগেও ২০২১ সালের ১৬ মার্চ চট্টগ্রাম ওয়াসার এক অনুষ্ঠানে এবং ২০১৯ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি পতেঙ্গায় বঙ্গবন্ধু টানেল ও এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে উদ্বোধন পরবর্তী জনসভায়ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একই কথা বলেছিলেন।

উল্লেখ্য, দীর্ঘ দশ বছর পর পলোগ্রাউন্ডের মাঠে বক্তব্য দিতে এসেই আজ আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশাল জনসমুদ্রের উদ্দেশ্যে বলেছেন, ‘অনে ক্যান আছন? গম আছননি? তোয়ারার লাই আঁর পেট পুরের।’

এর আগে বিকেল ৩টা ১০ মিনিটের দিকে হাজার হাজার নেতাকর্মীদের অপেক্ষার প্রহর শেষে পলোগ্রাউন্ড মাঠের জনসভায় এসে উপস্থিত হন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

ভাটিয়ারিতে বাংলাদেশ মিলেটারি একাডেমিতে রাষ্ট্রপতি কুচকাওয়াজের অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ শেষে তিনি হেলিকপ্টারে করে এম এ আজিজ স্টেডিয়ামে নামেন। সেখান থেকে সিআরবি হয়ে পলোগ্রাউন্ডে মাঠে আসেন। মাঠে এসেই ৩০টি প্রকল্পের উদ্বোধন করেন এবং চার প্রকল্পের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী।

এর আগে বেলা ১২টা থেকেই চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীনের সঞ্চালনায় ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দীন চৌধুরীর সভাপতিত্বে ইতোমধ্যে চট্টগ্রামের স্থানীয় এমপি, কেন্দ্রীয় নেতারা বক্তব্য দেওয়ার মাধ্যমে শুরু হয় জনসভার আনুষ্ঠানিকতা। বক্তব্যে নেতারা চট্টগ্রামের উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রীর নেওয়া নানা প্রকল্পের ফিরিস্তি তুলে ধরছেন। আগামীতেও প্রধানমন্ত্রীর মনোনীত নৌকার প্রার্থীদের ভোট দিয়ে জয়ী করার আহ্বান জানান।

এদিন সকাল আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দুপুরের জনসভায় যোগ দিতে সকাল থেকেই নেতাকর্মীরা পলোগ্রাউন্ডমুখী স্রোতে যুক্ত হয়েছেন। ভোরের আলো ফুটতেই চট্টগ্রামের বিভিন্ন উপজেলা থেকে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা রং বেরংয়ের টি শার্ট ও বাদ্য যন্ত্র নিয়ে জনসভাস্থলের আশেপাশে এসে অবস্থান নিতে থাকেন। এরপর সিআরবি, পুরনো রেলস্টেশন, টাইগারপাস দিয়ে বানের স্রোতের মত নেতাকর্মীরা সমাবেশস্থলে প্রবেশ করছেন। এসময় স্লোগোনে-স্লোগানে মুখর জনসভাস্থল ও চট্টগ্রামের রাজপথ।