ধোনির হেলিকপ্টার শট গ্যালারিতে আছড়ে পড়লেই আনন্দে লাফিয়ে উঠত কিশোর ছেলেটা। টিম ইন্ডিয়া কোনও ম্যাচ হারলে নাওয়া-খাওয়া বন্ধ করে ঘরে নিজেকে বন্দি রাখত দক্ষিণ কাশ্মীরের আদিল আহমেদ দার।
হ্যাঁ, ঠিকই পড়েছেন, পুলওয়ামার অবন্তীপুরায় ৪০ জওয়ানের শহীদ হওয়ার নেপথ্যে থাকা এই সেই জইশ-ই মহম্মদের আত্মঘাতী জঙ্গি৷ আদিল ছিল মহেন্দ্র সিং ধোনির একজন অন্ধভক্ত। কিন্তু ধোনিভক্ত আদিল প্রবল ক্রিকেট অনুরাগী থেকে কীভাবে হয়ে উঠল পুলওয়ামা কান্ডের ঘাতক? সামনে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য।
আদিলের এই বিবর্তনের পিছনে লুকিয়ে ধারাবাহিক কিছু ঘটনা। আদিলের বাবা গুলাম হাসান দারের মতে, ২০১৬ কাকাপোরা এলাকায় বিক্ষোভকারীদের পাথর ছোঁড়ার ঘটনায় বিনাদোষে আদিলের উপর অত্যাচার চালায় নিরাপত্তারক্ষী বাহিনী। নাকখত দেওয়ানোর পর পুলিশের জিপে করে ঘোরানো হয় তাকে। মুক্তি পাবার পর তার উপর সীমান্তরক্ষী বাহিনীর অত্যাচারের কারণ বাবার কাছে জানতে চেয়েছিল আদিল৷ কিন্তু কোনও সদুত্তর ছিল না আদিলের বাবার কাছে।
তার পর থেকে আদ্যোপ্রান্ত একজন ক্রিকেট অনুরাগী সন্ত্রাসবাদের পথ বেছে নেয়৷ গত বছর ১২ ক্লাস পরীক্ষা দেওয়া আদিল ছিল দক্ষিণ কাশ্মীরে জইশ-ই মহম্মদের অন্যতম সদস্য৷ ২০০০ উপত্যকায় বাদিমবাগ সেনা ছাউনিতে প্রথম আত্মঘাতী হামলা চালিয়েছিল জইশ-ই-মহম্মদ জঙ্গি সংগঠন। উপত্যকায় এটাই ছিল জইশ-ই মহম্মদের আত্মপ্রকাশ৷ প্রায় দু’ দশক পর কাশ্মীরে ফের আত্মঘাতী হামলার পথ বেছে নেয় পাক মদতপুষ্ট এই জঙ্গি সংগঠন। বছরের পর বছর ধরে স্থানীয় কাশ্মীরী যুবকদের সন্ত্রাসবাদে ইন্ধন জুগিয়ে যাচ্ছে জইশ-ই মহম্মদ। যার পরিণাম পুলওয়ামার ৪০ জওয়ানের বীরগতি হওয়ার ঘটনা৷
জম্মু-কাশ্মীর পুলিশের প্রাক্তন ডিরেক্টর জেনারেল কুলদীপ খোদার মতে, আদিল আহমেদ দারের মত স্থানীয় বাসিন্দার মাধ্যমে আত্মঘাতী বোমা বিস্ফোরণের ঘটনা উপত্যকায় প্রথম। কিভাবে তারা গোটা প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করল তা এখনও অজানা।