দ্বিতীয় বার বিয়ে করেছেন মা। সগর্বে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে তা ঘোষণা করলেন ছেলে। জানিয়ে দিলেন, সমাজের তোয়াক্কা করেন না তিনি। কে কী বলবে তা নিয়ে একেবারেই মাথাব্যথা নেই তাঁর। মা খুশি থাকুন, সুখে বিবাহিত জীবন কাটান, শুধু এইটুকুই চান তিনি।
সোশ্যাল মিডিয়ার দৌলতে তাঁর সেই পোস্ট ইতিমধ্যেই ভাইরাল হয়ে গেছে। ফেসবুকে তাঁর পোস্টটিতে ৩১ হাজারের বেশি লাইক পড়েছে। সেটি শেয়ার করেছেন প্রায় সাড়ে তিন হাজার মানুষ।
ভারতীয় গণমাধ্যমের খবর, কেরলের কোল্লামের বাসিন্দা গোকুল শ্রীধর। সিপিএম-এর ছাত্র সংগঠন এসএফআইয়ের কর্মী বলে ফেসবুকে নিজের পরিচয় দিয়েছেন তিনি। মঙ্গলবার সেখানেই মায়ের সঙ্গে তাঁর দ্বিতীয় স্বামীর ছবি পোস্ট করেন তিনি। তবে এই ছবি পোস্ট করা নিয়ে খানিকটা ইতস্ততও বোধ করছিলেন তিনি। নিজেই তা খোলাখুলি জানিয়েছেন।
ফেসবুকে গোকুল শ্রীধর লেখেন, ‘আমার মায়ের বিয়ে ছিল। কিছু লেখা ঠিক হবে কিনা বুঝে উঠতে পারছিলাম না। কারণ এখনও বহু মানুষ রয়েছেন, যাঁরা দ্বিতীয় বিয়ে ঠিক মেনে নিতে পারেন না। তাই অনুরোধ করছি, মনে সন্দেহ, ঘৃণা বা করুণা থাকলে, এই পোস্ট দেখবেন না।”
দিনের পর দিন শারীরিক নির্যাতনের শিকার হলেও, শুধুমাত্র তাঁর জন্যই মা মুখ বুজে সব সহ্য করতেন বলে জানান গোকুল। এর জন্য আজও অপরাধ বোধে ভোগেন বলে খোলাখুলি স্বীকারও করে নেন।
তিনি জানান, ‘আমার জন্যই কখনও নিজের পরোয়া করেননি এই মহিলা। সর্বনাশা ওই বিয়েতে কম নির্যাতন সইতে হয়নি তাঁকে। মার খেয়ে কপাল ফেটে রক্ত ধরে ঝরত। তা সত্ত্বেও মুখ বুজে সব সহ্য করে নিতেন। এক বার জিজ্ঞাসা করেছিলাম, কেন সব সহ্য করতে? উত্তরটা এখনও কানে বাজে। মা বলেছিল, আমার জন্যই বেঁচে থাকা। তাই সবকিছু সইতে রাজি।’
তিনি আরও লেখেন, ‘যে দিন মায়ের হাত ধরে ওই বাড়ি থেকে বেরিয়ে এসেছিলাম, তখনই আজকের দিনটার কথা ভেবে নিয়েছিলাম। আমার মায়েরও কিছু স্বপ্ন ছিল, অনেক কিছু জয় করার ছিল, কিন্তু আমার জন্য সব বিসর্জন দেয় মা। মায়ের আত্মত্যাগ বলে বোঝানো যাবে না। তবে মনে হল এই গুরুত্বপূর্ণ দিনটা লুকিয়ে রাখা উচিত হবে না। বিবাহিত জীবনে সুখী হও মা।’
লেটেস্টবিডিনিউজ/এনপিবি