বিয়ের জন্য অব্যাহতভাবে চাপ দিয়ে যাচ্ছিলেন প্রেমিকা। তা নিয়ে দু’জনের মধ্যে তীব্র বিরোধ। এরই এক পর্যায়ে ২৫ বছর বয়সী ওই যুবতীকে হত্যা করেছে তার প্রেমিক। এরপর একটি সুটকেসের ভিতরে তার দেহ রেখে তা ফেলে দিয়েছেন ভারতের হায়দরাবাদের এক ড্রেনে। কিন্তু ঘটনা গোপন থাকে নি। অভিযুক্ত ওই প্রেমিকের নাম সুনীল কুমার (২৫)। শহরের একটি কোম্পানিতে স্ট্রাকচারাল ইঞ্জিনিয়ার তিনি। তার সঙ্গে প্রেম হয় গাছিবৌলির টিসিএস সিনার্জি পার্কের সিস্টেম ইঞ্জিনিয়ার বি লাবণ্যর। এ খবর দিয়েছে অনলাইন টাইমস অব ইন্ডিয়া।
৭ই এপ্রিল থেকে অকস্মাৎ নিখোঁজ হয়ে যান লাবণ্য। মোবাইল ফোনের সুইস অফ করা ছিল। তার প্রেমিক সুনীলের বিষয়েও পরিবারের সদস্যরা বিস্তারিত জানতেন না। অভিযোগ যায় পুলিশে। তারা লাবণ্যর মোবাইল কল সার্চ করে দেখতে পান তিনি কথা বলেছেন সুনীলের সঙ্গে। ফলে শনিবার রাতে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে সুনীলকে।
সিএমআর কলেজ অব ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজিতে পড়ার সময় সুনীল ও লাবণ্যর মধ্যে প্রেম শুরু হয়। দু’জনেই চাকরি পেয়ে যান। ফলে আর দেরি নয়। বাকি ছিল বিয়ের বন্দোবস্ত। এ জন্য লাবণ্য তাকে চাপ দিতে থাকেন। কিন্তু সুনীল সেই প্রস্তাব এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। এ নিয়ে দু’জনের সেই কলেজ জীবনের প্রেম তিক্ততায় পরিণত হতে থাকে। ফেব্রুয়ারিতে লাবণ্যর এমন চাপের মুখে সুনীল লাবণ্যর পরিবারকে জানায়, তিনি যেহেতু মাসকটে একটি চাকরি পেয়েছেন তাই তিনি বিয়ের জন্য প্রস্তুত। সেখানে লাবণ্যর জন্যও তিনি একটি চাকরির ব্যবস্থা করেছেন। সেখানে সাক্ষাতকার দেয়ার জন্য তিনি লাবণ্যকে সঙ্গে যাওয়ার অনুমতি চান তার পরিবারের কাছে।
আরসি পুরামের পুলিশ বলেছে, লাবণ্যর পরিবারের সদস্যরা ৪ঠা এপ্রিল তাদেরকে আরজিআই বিমানবন্দরে নামিয়ে দিয়ে আসেন। এরপর লাবন্যকে সুনীল জানায় তাদের ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে। জানায়, তারা পরের দিনের ফ্লাইটে যাবে।
আবার বিয়ের বিষয়টি আলোচনায় তোলেন লাবণ্য। এ নিয়ে তখন দু’জনের মধ্যে তর্ক শুরু হয়। সুনীল তখন লাবণ্যর গলা টিপে ধরে হত্যা করে। ৫ই এপ্রিল সন্ধ্যায় তাকে এভাবে হত্যা করে দেহ একটি সুটকেসে ভরে ফেলে। ওই রাতেই তিনি মৃতদেহ নিয়ে যান শহরের সুরারাম এলাকায়। ফেলে দেন ড্রেনে। একটি স্কুলের সামনে ছিল ওই ড্রেনটি। ফলে ওই এলাকায় জনমানব ছিল না ঘটনার সময়। কেউ এটা দেখতেও পায় নি।
ওদিকে লাবণ্য তার পরিবারকে জানিয়েছিলেন ৭ এপ্রিল তিনি ফিরে আসবেন। এদিন সুনীল লাবণ্যর মোবাইল ফোন থেকে এসএমএস পাঠান যে, লাবণ্য বিমানবন্দরে অবতরণ করেছে। তারপর থেকেই ওই ফোনের সুইস অফ করে দেয়া হয়। ওদিকে লাবণ্যকে খুঁজে পায় না তার পরিবার। ফলে তারা দ্বারস্থ হয় পুলিশের। শেষ পর্যন্ত পুলিশ এ ঘটনায় গ্রেপ্তার করে সুনীলকে। পুলিশ বলেছে, সুনীলের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী তারা লাবণ্যর মৃতদেহ উদ্ধার করেছে।