অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থীকে বাসে রেখেই আগুন লাগিয়ে দিলেন চালক

ইতালির মিলানে অর্ধশতাধিক স্কুল শিক্ষার্থীসহ বাসে আগুন ধরিয়ে দিয়েছেন সেই বাসটির চালক। তবে পুলিশের দ্রুত পদক্ষেপে বড় ধরনের প্রাণহানি থেকে রক্ষা পায় শিক্ষার্থীরা। বাসটিতে সে সময় ৫১ জন শিক্ষার্থী ছিলেন।

বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ইতালির কঠোর অভিবাসন নীতি নিয়ে ক্ষুব্ধ ছিলেন ওই চালক। নিউজিল্যান্ডে অভিবাসী মুসলিমরা বর্ণবাদী বিদ্বেষী হামলার শিকার হওয়ার কয়েকদিনের মধ্যে ইতালিতে অভিবাসী কর্তৃক এই বিদ্বেষী সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড সংঘটিত হলো।

বিবিসি জানিয়েছে, সেনেগাল থেকে অভিবাসী হিসেবে ইতালিতে এসে নাগরিক হওয়া ওই বাসচালক স্কুল শিক্ষার্থীদের গন্তব্যের পরিবর্তে অন্যপথে নিয়ে গিয়ে বাসটিতে আগুন ধরিয়ে দেয়। শিক্ষার্থীদের একজনের অভিভাবকের কাছ থেকে খবর পেয়ে পুলিশ দ্রুত বাসের জানালা ভেঙে তাদের উদ্ধার করে।

উদ্ধারের সময় দেখা গেছে, শিক্ষার্থীদের কেউ কেউ বাসের সিটের সঙ্গে বাঁধা অবস্থায় ছিলেন। এ ঘটনায় কেউই গুরুতর আহত হয়নি। তবে শিক্ষার্থীদের ১৪ জন ধোঁয়ায় সামান্য অসুস্থ হয়ে পড়ে।

\"\"

পুলিশের মুখপাত্র মার্কো পালমিরি জানিয়েছেন, বাসে থাকা শিশুদের কয়েকজনকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এদের কেউ কেউ সামান্য আহত হয়েছে। কেউ কেউ মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।

এ ঘটনায় ৪৭ বছর বয়সী ওই বাসচালককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, তার নাম উসেনু সি।

শিক্ষার্থীদের বরাত দিয়ে পুলিশ আরও জানান, ইতালির কঠোর অভিবাসন নীতি নিয়ে ক্ষুব্ধ ওই বাসচালক দেশটির সমুদ্রে মৃত্যু বন্ধ না করলে শিক্ষার্থীদের সবাইকে হত্যার হুমকি দেন।

মিলান পুলিশের মুখপাত্র বলেন, ‘সে চিৎকার করছিল: সমুদ্রে মৃত্যু বন্ধ করো, আমি কিন্তু সবাইকে শেষ করে দেবো।’

এক পর্যায়ে সে ছুরি নিয়ে শিক্ষার্থীদের শাসানোর সময় এক শিক্ষার্থী ফোনে তার অভিভাবককে ব্যাপারটি জানালে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। কিন্তু এর মধ্যেই বাসে আগুন লাগিয়ে দেন ওই চালক। ‘কেউ বাঁচবে না,’ চালক এ কথা বলেছিলেন বলে জানান বাসে থাকা এক শিক্ষক।

এদিকে বাসে আগুন লাগানোর এ ঘটনা থেকে সব আরোহীর অক্ষত রক্ষা পাওয়ার ঘটনাকে ‘অলৌকিক’ বলে মন্তব্য করেছেন মিলানের প্রধান আইনজীবী ফ্রান্সেসকো গ্রেকো। তিনি বলেন, ‘এখানে ভয়াবহ কিছু ঘটে যেত।’

জাতিসংঘের হিসেব মতে, ২০১৮ সালে সাগর পাড়ি দিয়ে ইউরোপে ঢুকতে চাওয়া দুই হাজার ২৯৭ জন অভিবাসনপ্রত্যাশী সাগরে ডুবে মৃত্যুবরণ করেছে অথবা নিখোঁজ রয়েছে। লিবিয়ার একজন নিরাপত্তা কর্মকর্তা জানিয়েছেন, গত মঙ্গলবার লিবিয়ান উপকূলের কাছে অবস্থিত সাবরাথা শহরের কাছে এক নৌকাডুবিতে প্রাণ হারিয়েছে ইউরোপে অভিবাসী হতে ইচ্ছুক অন্তত ১০ জন ব্যক্তি। কিন্তু মানবাধিকার সংস্থাগুলো বলছে, মৃত্যুর সংখ্যা বরং বেড়ে গিয়ে থাকতে পারে। কারণ এখন সাগরে ডুবে যাওয়া ওইসব ব্যক্তিদের উদ্ধার করার জন্য কার্যত তেমন কোনো উদ্ধার তৎপরতা নেই।

Scroll to Top