বৃষ্টিতে প্রথম দু\’দিন ভেসে গিয়েছিল। খেলা হলো শেষ তিন দিন। তার মধ্যে আবার বৃষ্টি বাগড়ায় একদিন ৩০ ওভারের মত খেলা হয়নি। তবুও ওয়েলিংটনের বেসিন রিজার্ভে এক ইনিংস ও ১২ রানের ব্যবধানে হারতে হলো বাংলাদেশকে।
প্রথম ইনিংসে স্বাগতিক নিউজিল্যান্ডের করা ৪৩২ রানের জবাবে বাংলাদেশের দুই ইনিংস থামলো ২১১ ও ২০৯ রানে। দ্বিতীয় ইনিংসে অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের ৬৭ এবং মোহাম্মদ মিঠুনের ৪৭ রান সত্ত্বেও ইনিংস পরাজয় এড়াতে পারেনি টাইগাররা।
প্রথম ইনিংসে টাইগারদের ব্যাটিং ধ্বসের মূল কারণ ছিলেন ট্রেন্ট বোল্ট আর নেইল ওয়াগনার। দ্বিতীয় ইনিংসেও এই যুগলের গতিঝড়ের সামনেই কাবু সফরকারি দলের ব্যাটসম্যানরা।
টেস্টের ফলাফল কি হতে যাচ্ছে, সেটা অবশ্য চতুর্থ দিনের শেষেই (আদতে দ্বিতীয় দিন) মোটামুটি আন্দাজ করা যাচ্ছিল। ২২১ রানে পিছিয়ে দ্বিতীয় ইনিংস খেলতে নামা টাইগাররা ইনিংস পরাজয় এড়াতে পারে কি না, সেটাই ছিল দেখার।
সেই লজ্জাও এড়ানো গেল না। দ্বিতীয় ইনিংসে আর ১৩টি রান করলেই দ্বিতীয়বার ব্যাটিংয়ে নামানো যেত নিউজিল্যান্ডকে। সেটাও হলো না। বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের থিতু হয়ে উইকেট বিলিয়ে দেয়ার প্রবণতা দেখা গেল আরও একবার।
আগের দিনই ৫৫ রানের মধ্যে তিন ব্যাটসম্যান তামিম ইকবাল (৪), মুমিনুল হক (১০) আর সাদমান ইসলামকে (২৯) হারিয়ে বসেছিল বাংলাদেশ। দিন শেষ করেছিল ৩ উইকেটে ৮০ রান নিয়ে।
মোহাম্মদ মিঠুন আর সৌম্য সরকার বেশ দেখেশুনেই খেলছিলেন। শেষ দিনে আশা ছিল, কেউ যদি ইনিংসটা বড় করতে পারেন। কিন্তু ১২ রান নিয়ে খেলতে নামা সৌম্য ২৮-এর বেশি এগোতে পারলেন না।
দিনের অষ্টম ওভারে টিম সাউদির বলে জীবন পেয়েছিলেন। কিন্তু দুই ওভার পরই বোল্টের শিকার হয়ে ফেরেন বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান। প্রথম স্লিপে রস টেলরের সহজ ক্যাচ হন তিনি।
এরপর মাহমুদউল্লাহ আর মিঠুন অনেকটা সময় দলকে এগিয়ে নিয়েছেন। পঞ্চম উইকেটে ৪০ রানের জুটি গড়েছিলেন তারা। কিন্তু দারুণ খেলতে থাকা মিঠুন ফিফটির কাছে এসে যেন স্নায়ুচাপে ভুগতে থাকেন। ওয়াগনার সেই সুযোগটা নিলেন। টিম সাউদির ক্যাচ বানিয়ে ডানহাতি এই ব্যাটসম্যানকে তিনি ফেরালেন ৪৭ রানে।
পরের ওভারে একইভাবে লিটন দাসকেও (১) তুলে নেন ওয়াগনার, তার পরের ওভারে তাইজুলকে (০)। সতীর্থদের এই আসা যাওয়ার মাঝে একটা প্রান্ত ধরে লড়ে যাচ্ছিলেন মাহমুদউল্লাহ। হাফসেঞ্চুরিও তুলে নেন বাংলাদেশ দলের ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক।
কিন্তু সঙ্গী তো লাগবে। অষ্টম ব্যাটসম্যান হিসেবে মোস্তাফিজ ১৬ রানে ফেরার পর বাধ্য হয়েই বড় হিট করতে হয়েছে মাহমুদউল্লাহকে। মোস্তাফিজ বোল্টের শিকার হয়ে ফেরার পরের ওভারে ওয়াগনারকে মারার চেষ্টা করেছেন টাইগার দলের অভিজ্ঞ এই সেনানী। ওভারের দ্বিতীয় বলে ছক্কাও মেরেছিলেন। কিন্তু এক ডেলিভারি পরেই তাকে শর্ট বলের ফাঁদে ফেলেন ওয়াগনার।
পুল করতে গিয়ে টপ এজ হয়ে ফাইন লেগে বোল্টের ক্যাচ হন মাহমুদউল্লাহ। ৬৯ বলে গড়া তার ৬৭ রানের ইনিংসটি ছিল ১২ বাউন্ডারি আর ১ ছক্কায় সাজানো। ওই ওভারেই শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে আউট হয়েছেন এবাদত হোসেন।
তাতে ইনিংসে ওয়াগনারের ৫ উইকেটও পূর্ণ হয়েছে। ৪টি উইকেট নিয়েছেন ট্রেন্ট বোল্ট।